দু'তিন বছরের মধ্যে ইরানে হামলা, আভাস ইসরায়েলের

আগামী ২-৩ বছরের মধ্যে ইরানে বিমান হামলা চালাতে পারে ইসরায়েল। এজন্য দেশটি প্রস্তুতিও নিয়েছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গানতজ সে দেশের বিমান বাহিনীর গ্র্যাজুয়েশন প্রোগ্রামে দেওয়া বক্তৃতায় এ কথা বলেছেন। খবর ব্লুমবার্গ।

ইরানে হামলার প্রস্তুতি এগিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন বেনি গানতজ

অনুষ্ঠানে বিমান বাহিনীর পাইলটদের উদ্দেশে বেনি গানতজ বলেন, কোনো একদিন আপনারা আক্রমণে অংশগ্রহণের ডাক পেতে পারেন। ২-৩ বছরের মধ্যে আপনারা হয়তো বিমান উড়িয়ে পূর্ব দিকে যাবেন এবং ইরানের পারমাণবিক স্থাপনার ওপর হামলায় অংশ নেবেন। আমরা এ হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। এজন্য সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমাদের প্রস্তুতির মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।

তিনি বলেন, যারা ইরানে আক্রমণে অংশ নেবে না, তারা হয়তো লেবানন ও সিরিয়ার আকাশসীমার অনেক ভেতরে অভিযানে অংশ নেবেন। অথবা হয়তো তারা বিশ্বের কোথাও আটকা পড়া ইসরায়েলি নাগরিকদের উদ্ধার অভিযানে যাবেন। আপনাদের সামর্থ্যে আমার বিশ্বাস আছে। কেবলমাত্র অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান ওড়ানোর জন্য নয়, বরং নিজেদের মনোবল ও পেশাদারিত্বের কারণে আপনারা সফল হন।

বেনি গানতজের বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টা আগে তার জোটসঙ্গী ও ইসরায়েলের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ইয়াইর লাপিদ ইরানকে হুমকি দিয়ে বলেন, আমাদের শত্রুদের এটা জানা জরুরি যে আমরা কখনো নিজেদের অস্তিত্বের জন্য ঝুঁকি হতে পারে এমন হুমকির মুখে চুপচাপ বসে থাকব না। আমি নতুন প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছি।

লাপিদ বলেন, যে কয়টা বিষয়ে ইসরায়েলের সব জনমতে ঐকমত্য আছে, ইরানে হামলা তার একটি। ইসরায়েলের কোনো সরকার ইরানকে পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হিসেবে মেনে নেবে না। যখনই ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন হবে, আমরা নেব।

ইউক্রেন যুদ্ধে ইরানের ওপর রাশিয়ার নির্ভরতা বাড়তে থাকায় ইসরায়েল উদ্বেগ বোধ করছে। যুদ্ধে রাশিয়াকে সহায়তার বিনিময়ে তেহরান নিজেদের পারমাণবিক কর্মসূচির জন্য মস্কোর সহায়তা চাইতে পারে বলে তেল আবিবের আশঙ্কা। ইরান সরকার তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ বলে বারবার দাবি করলেও ইসরায়েল মানছে না। ইরানকে পারমাণবিক বোমা তৈরি থেকে ঠেকাতে যে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছে দেশটি।

এর আগে ২০০৭ সালে সিরিয়ায় নির্মিয়মান একটি পারমাণবিক চুল্লি ধ্বংস করেছে ইসরায়েল। সিরিয়ার পাশের দেশ ইরাকে সাদ্দাম হুসেনের আমলে পারমাণবিক কর্মসূচির কাজ অনেকটা এগিয়ে যাচ্ছিল। সেখানেও ১৯৮১ সালে বিমান হামলা চালিয়ে ইরাকের ওসিরাক পারমাণবিক চুল্লি ধ্বংস করে ইসরায়েল। তেল আবিবের কর্মকর্তারা প্রতিবেশী দেশগুলোর পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে হম্বিতম্বি করলেও নিজেদের বিষয়ে তারা নিরব। মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল একমাত্র ও অঘোষিত পারমাণবিক শক্তিধর দেশ।

ইসরায়েলের পার্লামেন্ট আজ বৃহস্পতিবার বেনজামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে নতুন জোট সরকার অনুমোদন করতে পারে। সেক্ষেত্রে বিমান বাহিনীর গ্র্যাজুয়েশন প্রোগ্রামে দেওয়া বক্তব্যই প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে বেনি গানতজের শেষ ভাষণ হতে পারে। ইসরায়েলি সশস্ত্র বাহিনীর সাবেক প্রধান গানতজ নেতানিয়াহুর আমলে বিরোধী দলীয় এমপি হিসেবে পার্লামেন্টে সক্রিয় থাকবেন। লাপিদ হতে পারেন নতুন পার্লামেন্টের বিরোধী জোটের অন্যতম নেতা।