রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন পেছাচ্ছে এক বছর

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন আরও পিছিয়ে যাচ্ছে। আগামী বছরের ডিসেম্বর নাগাদ বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিটের উৎপাদনে যাওয়ার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু জানিয়েছেন, বছরখানেক পিছিয়ে ২০২৪ সালের শেষ দিকে উৎপাদনে আসতে পারে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের উৎপাদন আরও পেছালো

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আজ বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শনের সময় সাংবাদিকদের জানান, মহামারি করোনার কারণে বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ কিছুটা পিছিয়ে গেছে, সময়মতো শেষ করা যায়নি।

প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনেরও কাজ শুরু করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। তবে সার্বিকভাবে কাজের অগ্রগতি বেশ সন্তোষজনক। প্রথম ইউনিটের কাজ ৮৭ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। প্রথম ইউনিটের কাজ ২০২৪ সালের মাঝামাঝি শেষ করার প্রক্রিয়া চলছে।

এর আগে অক্টোবর মাসে রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের পারমাণবিক চুল্লি উদ্বোধন করা হয়। ওইদিন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান জানিয়েছেন, ২০২৩ সালের মধ্যেই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট বিদ্যুত উৎপাদনে যাবে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ শেষ করতে দেরি হচ্ছে কি না, জানতে চাইলে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, সব কাজ ঠিকমতোই হবে। বিদ্যুৎ বিভাগ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সমন্বয় করেই কাজ চালাচ্ছে। কোনো অসুবিধা হবে না।

তবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর পরির্দশনের আগমুহূর্তে বিদ্যুৎকেন্দ্রের অগ্রগতি পরিস্থিতি সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অ্যাটমস্ট্রয়এক্সপোর্টের কর্মর্তা অ্যালেক্সান্দার দেইরি। তিনি জানান, রূপপুর কেন্দ্রের যন্ত্রপাতি সরবরাহে অস্বীকৃতি জানিয়েছে দায়িত্বপ্রাপ্ত জার্মান কোম্পানি সিমেন্স এজি। এতে প্রথম ইউনিটের উৎপাদন পিছিয়ে যাওয়া ঠেকাতে তৎপর রয়েছেন তারা।

একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণেই সিমেন্স এজি যন্ত্রপাতি সরবরাহে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধের জের ধরেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় নিষেধাজ্ঞায় রয়েছে রাশিয়ার বিভিন্ন কোম্পানি।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে স্থাপিত হচ্ছে দুটি তৃতীয় প্রজন্মের রুশ ভিভিইআর-১২০০ রিয়্যাক্টর। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতায় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে পরমাণু শক্তি কমিশন।

১২০০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিট নির্মাণ করছে রাশিয়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অ্যাটমস্ট্রয়এক্সপোর্ট। দুটি চুল্লির মোট উৎপাদন ক্ষমতা হবে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট। প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা খরচে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত।