ইরানে মৃত্যুদণ্ড স্থগিতের দাবিতে কারা ফটকে বিক্ষোভ

ইরানের চলমান বিক্ষোভের সঙ্গে জড়িত মামলায় আরও দুই জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের খবর শুনে দেশটির কারাজের একটি কারাগারের সামনে জড়ো হয়েছিল শতাধিক মানুষ। এ সময় ওই দুজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর না করার দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা। খবর অলজাজিরা।

ইরানে মৃত্যুদণ্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভ

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ২২ বছর বয়সী মোহাম্মদ ঘোবাদলু এবং ১৯ বছর বয়সী মোহাম্মদ বোরোঘানীর।

বিভিন্ন অনলাইনে পোস্ট করা একাধিক ভিডিওতে দেখা গেছে, স্থানীয় সময় সোমবার ভোরে তেহরানের কাছে কারাজের রাজাই কারাগারে দুই জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর রোধ করতে বেশ কিছু মানুষ জড়ো হয়। সেখানে ওই দুজনের পরিবারও ছিল।

আল জাজিরার যাচাই করা ভিডিওতে দণ্ডপ্রাপ্ত ঘোবাদলুরের মাকে চিৎকার করতে দেখা যায়। তিনি কাউকে উদ্দেশ্যে বলেন, 'আমার সন্তান অসুস্থ, তার একটি মেডিকেল রিপোর্ট রয়েছে, কিন্তু তারা গ্রহণ করতে চায় না।’

অন্য আরেকটি ভিডিওতে ঘোবদলুর মাকে বলতে শোনা যায় যে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যকে তার ছেলে হত্যা করেনি।

ঘোবাদলুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভের সময় নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্যের উপর গাড়ি চালিয়ে দেওয়া এবং একজনকে হত্যা করার অভিযোগ তোলা হয়। আদালকে ঘোবদলুর মানসিক অসুস্থতা কথা বলে তার পরিবার। কিন্তু রাষ্ট্রীয় মনোবিজ্ঞানী সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, ঘোবাদলু তার কর্ম সম্পর্কে সচেতন ছিলেন। পরে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত।

অন্য দণ্ডপ্রাপ্ত মোহাম্মদ বোরোঘানীর বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনীর একজন সদস্যকে ছুরি দিয়ে হত্যা করার অভিযোগ তোলা হয়। পরে বরোঘানিকে 'ঈশ্বরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার' জন্য দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত।

দণ্ডপ্রাপ্তদের সাজা নিশ্চিত করেছে সুপ্রিম কোর্ট। দ্রুত তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে। তবে কবে কার্যকর করা হবে সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি বিচার বিভাগ। দণ্ডপ্রাপ্তদের পরিবার উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, তাদেরকে নির্জন কারাগারে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

এদিকে সোমবার ঘোবদলুর আইনজীবী আমির রেসিয়ান এক টুইট বার্তায় বলেছেন, তিনি আরেকটি আপিল দায়ের করেছেন। এতে সুপ্রিম কোর্ট আইন অনুসারে মৃত্যুদণ্ডের সাজা পর্যালোচনার দাবি করেছেন তিনি।

ইরানে নারীদের জন্য বাধ্যতামূলক পোশাক কোড না মেনে চলার অভিযোগে দেশটির নৈতিকতা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন মাহসা আমিনি। পরে পুলিশ হেফাজতে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি দেশজুড়ে শুরু হওয়া বিক্ষোভের সঙ্গে জড়িত মামলায় এ পর্যন্ত চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গেল শনিবার দুজন এবং গত বছরের ডিসেম্বরে অন্য দুজনকে ফাঁসি দেওয়া হয়।