ম্যাক্রোঁ: আলজেরিয়ার কাছে ক্ষমা চাইবে না ফ্রান্স

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ নিশ্চিত করেছেন, আলজেরিয়ায় ফ্রান্সের ঔপনিবেশিক আমলের নৃশংসতার জন্য আলজেরিয়ানদের কাছে ক্ষমা চাইবেন না তিনি। ১১ জানুয়ারি, বুধবার প্রকাশিত এক সাক্ষাতকারে তিনি এই মন্তব্য করেছেন।

ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ

ফরাসি সাপ্তাহিক লে পয়েন্টকে দেওয়া সাক্ষাতকারে ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ‘আমাকে ক্ষমা চাইতে হবে না, এটা লক্ষ্য নয়। সবচেয়ে খারাপ যেটা ঘটতে পারে তা হল আমরা ক্ষমাপ্রার্থী বলা এবং এরপর আমরা প্রত্যেকে নিজ নিজ পথে চলব।'

তবে ফরাসি প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, চলতি বছর আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট আবদেল মাদজিদ তেবিউন ফ্রান্স সফর করবেন। এ সময় দুই দেশের মধ্যে পুনর্মিলনের বিষয়ে তার সাথে কাজ চালিয়ে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করেন ম্যাক্রোঁ।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি যে প্রেসিডেন্ট তেবিউন ২০২৩ সালে ফ্রান্সে আসতে সক্ষম হবেন। তিনি দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের অভূতপূর্ব কাজ চালিয়ে যাবেন।'

আলজেরিয়ায় ফ্রান্সের ঔপনিবেশিক অতীতের জন্য ফরাসিদের ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। আলজেরিয়া দীর্ঘদিন ধরেই ফ্রান্সের নিকট দেশটির অতীতের নৃশংসতার জন্য ক্ষমা প্রত্যাশা করে আসছে।

এদিকে ২০২০ সালে আলজেরিয়া ম্যাক্রোঁর নিয়োগকৃত ফরাসি ইতিহাসবিদ বেঞ্জামিন স্টোরার তৈরি একটি প্রতিবেদন পেয়েছে। প্রতিবেদনে দুই দেশের মধ্যে পুনর্মিলন অর্জনের জন্য একাধিক উদ্যোগের আহ্বান জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে ক্ষমা চাওয়ার বা অনুশোচনা প্রকাশের সুপারিশ করা হয়নি, যা আলজেরিয়া ক্রমাগত দাবি করে আসছে।

২০১৭ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ফ্রান্সের ইতিহাসের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী সময়ের জন্য প্রথমবারের মত দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক নীরবতা ভেঙেছিলেন। সে সময় তিনি আলজেরিয়ায় সংঘটিত ফরাসি উপনিবেশের মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের কথা স্বীকার করেছিলেন। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পরে তিনি আলজেরিয়ার দাবি অনুযায়ী দেশটির কাছে ক্ষমা চাননি।

উল্লেখ্য, ১৮৩০ থেকে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত আলজেরিয়ায় ঔপনিবেশিক শাসন কায়েম করেছিল ফ্রান্স।

সূত্র: দ্য নিউ আরব