মিয়ানমারকে অস্ত্র তৈরিতে সহায়তা করছে ১৩ দেশ!

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে অস্ত্র তৈরিতে সহায়তা করছে অন্তত ১৩টি দেশের কোম্পানি। বিপুল পরিসরে তৈরি করা এসব অস্ত্র জনগণের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। জাতিসংঘের সাবেক এক শীর্ষ কর্মকর্তা বিবিসিকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর মহড়া

মিয়ানমারে সামরিক শাসন জারির পর দেশটিকে কার্যত ‌'বিচ্ছিন্ন' করতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে পশ্চিমা বিশ্ব। তা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ভারত এবং জাপানের নামধারী কিছু কোম্পানি দেশটিকে অস্ত্র তৈরিতে সহায়তা করছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশজুড়ে সহিংসতা শুরু হয়। যারা সেনাবাহিনীর বিরোধিতা করে তাদের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন চালাতে স্বদেশে উৎপাদিত এসব অস্ত্র ব্যবহার করা হয়।

মিয়ানমারের প্রতিবেদনে বিশেষ উপদেষ্টা পরিষদ উল্লেখ করেছে, যে জাতিসংঘের বেশ কয়েকটি সদস্য রাষ্ট্র সামরিক বাহিনীর কাছে অস্ত্র বিক্রি অব্যাহত রেখেছে।

১৬ জানুয়ারি, সোমবার জাতিসংঘের স্পেশাল অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল অন মিয়ানমার ‘ফেটাল বিজনেস: সাপ্লাইং দ্য মিয়ানমার মিলিটারিস ওয়েপন প্রোডাকশন’ শীর্ষক এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জাপান, জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ভারত, অস্ট্রিয়া, তাইওয়ান এবং চীনসহ মোট ১৩টি দেশের অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মিয়ানমারকে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। দেশটির সামরিক বাহিনীকে কাঁচামাল, প্রশিক্ষণ এবং মেশিন সরবরাহ করা হচ্ছে। কিন্তু উৎপাদিত অস্ত্রগুলো সীমান্ত রক্ষায় ব্যবহৃত হয় না।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সাবেক বিশেষ প্রতিবেদক ইয়াংহি লি বলেছেন, 'মিয়ানমার কখনোই কোনো বিদেশি দেশ দ্বারা আক্রান্ত হয়নি। দেশটি কোন অস্ত্র রপ্তানি করে না। ১৯৫০ সাল থেকে দেশটি অস্ত্র তৈরি করেছে। যা নিজের দেশের জনগণের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে।'

উল্লেখ্য, মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটির জান্তা বাহিনীর হাতে ২৬০০ জনেরও বেশি নাগরিক নিহত হয়েছেন। তবে প্রকৃত নিহতের সংখ্যা এর ১০ গুণেরও বেশি বলে ধারণা করা হয়।