পুতিনের নতুন কৌশল, ময়দানে ক্রিমিয়া বিজয়ী সেই কমান্ডার

রাশিয়ার শীর্ষ জেনারেল সেনাবাহিনীর প্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভ সম্প্রতি ইউক্রেন যুদ্ধে যুক্ত হয়েছেন। ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের কমান্ডার হিসেবে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বিশ্লেষকদের প্রশ্ন, ক্রিমিয়ান উপদ্বীপ দখলকারী এই সেনা কর্মকর্তা কি পুতিনকে বিজয় উপহার দিতে পারবেন। নাকি যুদ্ধে আগের কয়েকজন জেনারেলের মতো তিনিও দেশের জন্য প্রাণ দেবেন! খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

পুতিনের সঙ্গে রুশ সেনাপ্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভ

গেরাসিমভ সের্গেই সুরোভিকিনের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন। সুরোভিকিনও দুর্ধর্ষ একজন কমান্ডার। সিরিয়ায় যুদ্ধকৌশলে সফলতার জন্য তাকে ‘জেনারেল আর্মাগেডন’ বলা হয়। গেরাসিমভ এখন থেকে ইউক্রেনে ফিল্ড অপারেশনের নেতৃত্বে থাকবেন এবং গেরাসিমভের ডেপুটিদের একজন হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন সুরোভিকিন।

ইউক্রেন সামরিক বাহিনীর তথ্যমতে, যুদ্ধে এ পর্যন্ত রাশিয়ান বাঘা বাঘা চারজন জেনারেল নিহত হয়েছেন। প্রাণ হারিয়েছে শত শত রুশ সেনা কর্মকর্তা। যুদ্ধে রাশিয়ার নিহত সেনাদের সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়েছে বলে মনে করে কিয়েভ।

ভ্যালেরি গেরাসিমভ দক্ষিণ-পশ্চিম রাশিয়ার তুর্কি সংখ্যাগরিষ্ঠ শহর কাজানে জন্ম নেন। তিনি পুতিনের অন্যতম প্রিয় কমান্ডার। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি রুশ সেনাবাহিনীর শীর্ষ পদে আছেন। যুদ্ধে তার ভিন্ন কৌশলের কারণে তার নামই একটি ‘যুদ্ধনীতি’ প্রচলিত হয়েছে। সেটাকে বলা হয় ‘গেরাসিমভ কৌশল’।

গেরাসিমভ যুদ্ধ কৌশলের অন্যতম দিক হলো, আধুনিক যুদ্ধে এই কৌশল ব্যবহার করা হয়। শত্রু মোকাবেলায় কূটনৈতিক, মনস্তাত্ত্বিক, প্রযুক্তিগত, অর্থনৈতিক ও যোগাযোগ উপাদানগুলোর সমম্বয়ে সিদ্ধান্ত ও কৌশল নির্ধারণ করা হয়।

২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়ান উপদ্বীপ এই কৌশল ব্যবহার করেই গেরাসিমভ সফল হয়েছিলেন। তখন থেকেই ‘যুদ্ধ কৌশলটি’ গেরাসিমভ কৌশল নামে স্বীকৃতি পেয়েছে। এতে খোদ পুতিনসহ দেশটির রাজনৈতিক ও সামরিক সংস্থার কাছ থেকে গেরাসিমভ প্রশংসা পেয়েছেন। ১১ মাসের ইউক্রেন যুদ্ধে গেরাসিমভকে আবারও ঠেলে দেওয়া হলো।

একজন সেনাপ্রধান হিসেবে এতদিন যুদ্ধের নেতৃত্ব দিলেও তিনি ইউক্রেনের মাটিতে পা দেননি। এখন থেকে তিনি সেনাদের সঙ্গেই থাকবেন। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গেরাসিমভ নিজেকে মূলত লুকিয়ে রেখেছেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যতই নিজেকে প্রকাশ করেছেন, গেরাসিমভ ততই নিজেকে গোপন করেছেন- এমন বলা হয়।

গত সপ্তাহে এক সিদ্ধান্তে রুশ প্রেসিডেন্ট গেরাসিমভকে ইউক্রেন যুদ্ধে প্রকাশ্যে আনার ঘোষণা দেন। এ বিষয়ে সাবেক তুর্কি সামরিক কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক উলাস পেহলিভান বলেন, আধুনিক যুদ্ধে সর্বোচ্চ সামরিক কর্মকর্তার উপস্থিতি ব্যতিক্রমী ঘটনা। বর্তমান প্রযুক্তির যুগে সামরিক নেতার মাঠে থাকার প্রয়োজন নেই। তবে পুতিনের কী উদ্দেশ্য তা অজানা।