আমেরিকা ছাড়ার শঙ্কায় চাকরি হারানো লাখো ভারতীয়

করোনা মহামারি কেটে যাওয়ার পর মনে হয়েছিল বিশ্ব অর্থনীতি আবারও তার নিজের মতো করে চলতে পারবে। কিন্তু রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর পরিস্থিতি আগের চেয়ে আরও বেশি নাজুক হয়ে পড়ে। বড় বড় কোম্পানিগুলো ১০ হাজার, ১২ হাজার করে কর্মী ছাঁটাই করতে শুরু করে। এতে বিপাকে পড়ে গেছে হাজার হাজার ভারতীয় কর্মী। খবর হিন্দুস্তানটাইমস।

বরখাস্তের নোটিশ

গত কয়েক মাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানি টুইটার, মেটা, আমাজন, মাইক্রোসফট হাজার হাজার কর্মী ছাঁটাই করেছে। ছাঁটাই করা এসব কর্মীর মধ্যে ভারতীয় কর্মীর সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। সেটি অন্তত ৩০-৪০ শতাংশ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মোটা বেতনে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোতে চাকরি করা এসব ভারতীয় কর্মীর অধিকাংশই যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করতেন। এখন চাকরি হারানোতে তারা যেমন আর্থিক সংকটে পড়ে গেছেন, পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের বিষয় নিয়েও চিন্তায় পড়ে গেছেন।

কারণ এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রে বড় সংস্থাগুলোতে নিয়োগ হচ্ছে খুবই কম, নেই বললেই চলে। এ অবস্থায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নতুন চাকরি পাওয়া না গেলে ওয়ার্ক ভিসাধারী এসব কর্মীকে ফিরে যেতে হবে দেশে। ভারতে ফিরে আবার সেই পর্যায়ে চাকরি খুঁজে পাওয়াটা আরও বেশি কঠিন। আবার ভারতেও এত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নেই। ফলে বড় সংস্থার বড় পদধারী এসব ভারতীয় কর্মী এখন বড় ধরনের বিপাকে পড়ে গেছেন।

গুগল, মেটা, আমাজন, মাইক্রোসফট

ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের নভেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত শুধু আইটি খাতেই প্রায় ২ লক্ষ কর্মী ছাঁটাই হয়েছেন। ব্যয় সংকোচনের নামে টুইটার, গুগল, মাইক্রোসফট, ফেসবুক ও আমাজনের মতো কোম্পানি থেকে বিপুল সংখ্যক কর্মী বরখাস্ত হয়েছেন, যাদের বড় একটি অংশ ভারতীয়। অনেকে আবার চাকরির সুবাদে সেখানে পরিবার নিয়েও গেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ম অনুযায়ী, এইচ-১বি ভিসার ক্ষেত্রে চাকরি হারালে সর্বোচ্চ ৬০ দিন সময় দেওয়া হয়। এ সময়ের মধ্যেই তারা নতুন চাকরি না পেলে তাদের ভারতে ফিরে আসা ছাড়া কোনও বিকল্প থাকবে না। তবে সংস্থাগুলো অনেক ক্ষেত্রেই এমন ভিসাধারী কর্মীদের ২-৩ মাস হাতে নিয়ে বরখাস্তের বিষয়ে জানাচ্ছে। ফলে এ ধরনের কর্মীরা চাকরি খোঁজার জন্য একটু বেশি সময় পাচ্ছেন। তবে কোনো কোনো কোম্পানি একেবারে শেষ মুহূর্তে বরখাস্তের চিঠি ধরিয়ে দিচ্ছে বা ইমেইল পাঠিয়ে দিচ্ছে। তাদের ক্ষেত্রে দুর্ভোগটা আরও খানিকটা বেশি।