আফগানিস্তানে ঠান্ডায় দেড় শতাধিক মৃত্যু

আফগানিস্তানে এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ শীত বিরাজ করছে। দেশটিতে এই মাসে ঠান্ডায় দেড় শতাধিক মানুষ মারা গেছেন। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বাসিন্দারা হিমাঙ্কের নীচে তাপমাত্রায় ঘর গরম করার জন্য জ্বালানি কিনতে অক্ষম হওয়ায় এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

আফগানিস্তানে প্রচণ্ড ঠান্ডায় এক বাসিন্দা

বৃহস্পতিবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রীর মুখপাত্র শফিউল্লাহ রহিমি বলেন, ১০ জানুয়ারি থেকে ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৬ দিনে ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে ১৬২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত সপ্তাহেই প্রায় ৮৪ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

খবরে বলা হচ্ছে, গত ১৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে শীতল আবহাওয়া বিরাজ করছে আফগানিস্তানে। তাপমাত্রা মাইনাস ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে এসেছে। আগে থেকেই দেশটি মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে।

এদিকে তালেবান সরকারের কারণে বেশিরভাগ নারী এনজিও কর্মী কাজ করতে পারছে না। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে অনেক মানবিক সহায়তা গোষ্ঠী আংশিকভাবে কার্যক্রম স্থগিত করেছে। যার ফলে এজেন্সিগুলো মানবিক কর্মসূচি পরিচালনা করতে পারেনি।

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের পশ্চিমে একটি তুষারময় মাঠে দেখা গেছে, শিশুরা তাদের পরিবারকে সাহায্য করার জন্য প্লাস্টিক খুঁজছে। কারণ পরিবারগুলো কাঠ বা কয়লা কিনতে অক্ষম।

৩০ বছর বয়সী দোকানদার আশুর আলী তার পরিবারের সাথে একটি কংক্রিটের বেসমেন্টে থাকেন। সেখানে তার পাঁচ সন্তান ঠান্ডায় মর মর অবস্থা। তিনি বলেন, এই বছর আবহাওয়া অত্যন্ত ঠান্ডা এবং আমরা নিজেদের জন্য কয়লা কিনতে পারিনি। দোকান থেকে যে অল্প পরিমাণ আয় করি তা দিয়ে জ্বালানির খরচ মেটাতে পারছি না।

আশুর আলী বলেন, শিশুরা ঠান্ডায় জেগে থাকে, ঘুমাতে পারে না। রাত থেকে সকাল পর্যন্ত কান্নাকাটি করে। তারা সবাই অসুস্থ। এখন পর্যন্ত আমরা কোনো সাহায্য পাইনি এবং খাওয়ার মতো পর্যাপ্ত রুটিও নেই।

এই সপ্তাহে কাবুল সফর করেন জাতিসংঘের সাহায্য প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস। তিনি জানান, বেশিরভাগ নারী সহায়তা কর্মীর ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ফলে তা আফগানদের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এবারের শীতকাল দেশটিতে অনেক পরিবারের জন্য ধ্বংসের বার্তাবাহক হিসেবে এসেছে।