বিপদে তামিমরা, শেষের নাটকে জিতল কুমিল্লা

রোমাঞ্চকর একটা ম্যাচ উপহার দিলো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও খুলনা টাইগার্স। উত্তেজনার রেণু ছড়ানো ম্যাচটার মীমাংসা হলো গিয়ে ম্যাচের শেষ বলে। শ্বাসরুদ্ধকর জয় দিয়ে শেষ হাসি হাসল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা। আশা জাগিয়েও হেরে গেল তামিম ইকবাল, ইয়াসির আলিদের খুলনা।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের উদযাপন; আজ সিলেটে খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে

আজ সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে দুই উইকেটে ১৬৫ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ তোলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। জবাব দিতে নেমে ছয় উইকেটে ১৬১ রান তুলতে সক্ষম হয় খুলনা টাইগার্স। এবারের বিপিএলে এটা তাদের পঞ্চম হার। আর কুমিল্লার পঞ্চম জয়।

আগে ব্যাটিংয়ে নামা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ইনিংসের শুরুটা ছিল মন্থর। উইকেট জিইয়ে রেখে মন্থর ব্যাটিং করেন দুই ওপেনার লিটন দাস ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। দশম ওভারে ৬৫ রানে ভাঙে এই জুটি। বিদায় নেন লিটন দাস।

৪২ বলে ৫০ রানে আউট হন কুমিল্লা ওপেনার। তার সঙ্গী রিজওয়ান অবশ্য শেষ পর্যন্ত টিকে ছিলেন। কিন্তু সেই তুলনায় প্রত্যাশিত রান পাননি তিনি। ৪৭ বলে ৫৪ রানে অপরাজিত থাকা পাকিস্তানি ওপেনার চারটি চার ও এক ছক্কায় ইনিংস সাজান।

আরেক পাকিস্তানি খুশদিল শাহ ১১ বলে ১৩ রানে অজেয় থাকেন। তবে কুমিল্লার ইনিংসে আসল ঝড়টা উঠেছে জনসন চার্লসের ব্যাটে। ২২ বলে ৩৯ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন ক্যারিবীয় ব্যাটার। কোনো বাউন্ডারি না পেলেও পাঁচটি ছক্কা মেরেছেন চার্লস।

কুমিল্লার পতন হওয়া উইকেট দুটি নিয়েছেন ওয়াহাব রিয়াজ ও নাহিদুল ইসলাম। তবে কোনো উইকেট না পেলেও নাসুম আহমেদ দুর্দান্ত বোলিং করেছেন। চার ওভারে ১৫ রান দিয়েছেন এই স্পিনার। তার নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সুবাদে লক্ষ্যমাত্রা খুলনার নাগালে থাকে।

রান তাড়ায় শুরুতেই আউট হয়ে যান তামিম ইকবাল। ১০ বলে ১১ রানে ফেরেন বাঁহাতি ওপেনার। ধাক্কা সামাল দেন আন্দ্রে বালবির্নি ও শাই হোপ। দুজনই অবশ্য ব্যাট চালিয়েছেন ধীরগতিতে। ৩১ বলে পাঁচ চার ও এক ছয়ে ৩৮ রানে অউট হন বালবির্নি। ৩২ বলে তিন চার ও এক ছয়ে ৩৩ রানে ফেরেন হোপ।

টপ অর্ডারের তিন ব্যাটার ব্যর্থ হয়েছেন দ্রুতগতিতে রান তুলতে। তবে চার নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে এসেই আস্কিং রেটের চাপ কিছুটা কমিয়ে আনেন মাহমুদুল হাসান জয়। ১৩ বলে দুটি করে চার-ছক্কায় ২৬ রানের ইনিংসে দলকে লড়াইয়ে ফেরান তিনি।

কিন্তু জয় আশা দেখালেও ১৯তম ওভাবের শুরুতে হোপের আউটে বেকায়দায় পড়ে যায় খুলনা। অধিনায়ক ইয়াসির আলি রাব্বিকেই চাপের বোঝাটা কাঁধে নিতে হয়েছে। শেষ দুই ওভারে ২৫ রানের সমীকরণ দাঁড়ায় খুলনার সামনে। শেষ ওভারে ১৭।

শেষ ওভারের তৃতীয় বলে স্ট্রাইক পান ইয়াসির। প্রথম দুই বলে বাউন্ডারি হাঁকান খুলনা অধিনায়ক। পঞ্চম বলে দুই রান। ম্যাচের রোমাঞ্চ তখন তুঙ্গে। শেষ বলে ছক্কার প্রয়োজন ছিল খুলনার। কিন্তু পারেননি ইয়াসির। নিলেন ১ রান। ১৯ বলে ৩০ রানে অপরাজিত থাকেন ইয়াসির।

খুলনা দলপতির ইনিংসে ছিল তিনটি চার ও দুই ছক্কার মার। যা কাজে আসল না। আশা জাগিয়েও চার ওভারে ৪৬ রানের সমীকলন মেলাতে পারেনি খুলনা। এই হারে রবিন লিগ রাউন্ড থেকেই ছিটকে যাওয়ার আশঙ্কায় পড়ল খুলনা টাইগার্স। সাত ম্যাচে এটা তাদের পঞ্চম হার। পয়েন্ট টেবিলে তাদের অবস্থান পাঁচে।

বিপরীতে সাত ম্যাচের পাঁচটিতে জিতে তৃতীয়স্থান ধরে রেখেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। দুই দলের মাঝে থাকা রংপুর রাইডার্সের সংগ্রহ আট পয়েন্ট। সাকিব আল হাসানের ফরচুন বরিশাল ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে। তাদের সমান ম্যাচে সমান পয়েন্ট থাকলেও রানরেটে পিছিয়ে দুইয়ে নেমেছে মাশরাফি বিন মর্তুজার সিলেট স্ট্রাইকার্স।