সিলেটবাসীকে মাশরাফিদের ‘উপহার’

ঘরের মাঠ ও পরিচিত দর্শকদের সামনে প্রথম ম্যাচে হারতে হয়েছে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে। পরের ম্যাচেই দুর্দান্ত এক প্রত্যাবর্তন করল মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। আজ সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে সাত উইকেটে হারিয়ে জয়ে ফিরল স্বাগতিক শিবির।

ঘরের মাঠে প্রথম জয় পেয়েছে সিলেট স্ট্রাইকার্স

টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত কুড়ি ওভারে ছয় উইকেটে ১৭৪ রানের মজবুত সংগ্রহ তোলে শুভাগত হোমের চট্টগ্রাম। জবাবে তিন উইকেট হারিয়ে দুই ওভার হাতে রেখে দাপুটে জয় তুলে নেয় সিলেট। এই জয়ে এবারের বিপিএলে পয়েন্ট টেবিলে হারানো শীর্ষস্থান ফিরে পেলেন মাশরাফি অ্যান্ড কোং।

নয় ম্যাচে সাত জয়ে ১৪ পয়েন্ট সিলেট স্ট্রাইকার্সের। আট ম্যাচে ছয় জয়ে ১২ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে নেমে গেছে সাকিব আল হাসানের ফরচুন বরিশাল। অন্যদিকে, নয় ম্যাচের সাতটিতে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাওয়ার আশঙ্কায় পড়ল চট্টগ্রাম। কারণ সাত ম্যাচে আট পয়েন্ট নিয়ে তালিকার চারে আছে রংপুর রাইডার্স।

নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাট ভেঙে যাওয়ায় কিছু সময় খেলা বন্ধ থাকে

সিলেটের রান তাড়ার পথটা মসৃণ করে দেয় ৬৩ রানের উদ্বোধনী জুটি। যেখানে তৌহিদ হৃদয়ের অবদান সামাণ্যই। আঙুলের চোট কাটিয়ে মাঠে ফেরার পর দুই ম্যাচে চার রান করা এই ওপেনার আজ ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বটে, কিন্তু ১৮ বলে ১৫ রানে আউট হয়ে যান তিনি। ইনজুরি যে তার পারফরম্যান্সে মরচে ধরিয়ে দিয়েছে তা বোঝাই যাচ্ছে।

১১০ রানে দলের দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে সাজঘরে ফেরেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ৪৪ বলে ৬০ রানে আউট হন বাঁহাতি ওপেনার। এবারের বিপিএলে এটা তার তৃতীয় ফিফটি। ছয়টি চার ও দুই ছক্কায় গড়া ইনিংসে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ফরচুন বরিশাল অধিনায়ক সাকিবকে (৩০৬) টপকে শীর্ষে উঠে গেলেন শান্ত (৩৪৩ রান)।

দুই ওপেনারের বিদায়ে অবশ্য খুব একটা ক্ষতি হয়নি সিলেটের। খুশিমনেই স্বাগতিক দর্শকদের বাড়ি ফেরার বন্দোবস্ত করে দিয়েছেন অভিজ্ঞ দুই ব্যাটর মুশফিকুর রহিম ও রায়ন বার্ল। দুজনের ব্যাটেই ঝড় উঠেছে। দুজনের রান সংখ্যাও সমান- ৪১। ২৬ বলে পাঁচটি চার ও এক ছক্কার ইনিংসে মুশি অজেয় ছিলেন শেষ পর্যন্ত।

তবে ১৬ বলে চারটি চার ও তিন ছক্কা মারার পর আউট হয়ে যান বার্ল। এ ছাড়া শেষ দিকে পাঁচ বলে একটি করে চার-ছক্কায় ১২ রানে অপরাজিত থাকেন জাকির হাসান। তাদের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে লক্ষ্যটাকে বড্ড মামুলি বানিয়ে জিতল সিলেট। দুর্দান্ত এই জয়ে প্লে-অফ পর্বের টিকিট প্রায় নিশ্চিত করে ফেললেন মাশরাফি অ্যান্ড কোং।

এর আগে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স চ্যালেঞ্জিং পুঁজি পেয়েছে মেহেদি মারুফ ও অধিনায়ক শুভাগত হোমের ফিফটির ওপর দাঁড়িয়ে। ৪০ বলে সাতটি চার ও দুই ছক্কায় ৫২ রান করেন ওপেনার মেহেদি। ২৯ বলে তিনটি করে চার-ছক্কায় ৫৪ রান তোলেন শুভাগত। এ ছাড়া আফিফ হোসেন ২৭ বলে ৩৫ ও মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী ১২ বলে ১৫* রান করেন।

সিলেট স্ট্রাইকার্সের পক্ষে ২৩ রানে দুই উইকেট নেন ইমাদ ওয়াসিম। তবে লক্ষ্যমাত্রা নাগালে রাখতে আরেক পাকিস্তানি মোহাম্মদ আমিরের ভুমিকা ছিল বেশ কার্যকর। চার ওভারে মোটে ১৭ রানের বিনিময়ে এক উইকেট শিকার করেন বাঁহাতি পেসার। বিপরীতে, চট্টগ্রামের বোলারদের মধ্যে ২৭ রানে দুই উইকেট নেন বিজয়াকান্ত ভিয়াসকান্ত।