আফ্রিকায় নজিরবিহীন খরা, ২২ মিলিয়ন লোক ক্ষুধার্ত

দক্ষিণ ইথিওপিয়া থেকে উত্তর কেনিয়া এবং সোমালিয়া পর্যন্ত প্রায় ২২ মিলিয়ন মানুষ ক্ষুধার ঝুঁকিতে রয়েছে। কারণ গত চার দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ খরা আফ্রিকার হর্নকে ঘিরে ধরেছে। দুর্দশাগ্রস্ত অঞ্চলের বাসিন্দারা প্রধানত পশুপালন করে জীবিকা নির্বাহ করে। এ অঞ্চলে টানা ৮ বছর বর্ষাকালে বৃষ্টির দেখা মেলেনি। এএফপির খবর।

হর্ন অব আফ্রিকায় ক্ষুধার্ত শিশু

জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইথিওপিয়ায় ১২ মিলিয়ন, সোমালিয়ায় ৫.৬ মিলিয়ন এবং কেনিয়ার ৪.৩ মিলিয়ন মানুষ তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীন। ২০২২ সালের শুরুতে এই সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে।

আফ্রিকার এই অঞ্চল জুড়ে ১৭ লাখ মানুষ পানি এবং চারণভূমির অভাবের কারণে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে। হর্ন অফ আফ্রিকা জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি। চরম আবহাওয়ার কারণে খরা তীব্র থেকে তীব্র হয়েছে এবং বারবার ঘটছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক জলবায়ু ঝুঁকি কেন্দ্রের তথ্য অনুসারে, সর্বশেষ ১৩টি বর্ষা ঋতুর মধ্যে ৮ ঋতুতে বৃষ্টিপাত হয়নি। ২০১১ সালে সোমালিয়ায় দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করা হয়েছিল। ওই সময় ২ লাখ ৬০ হাজার মানুষ ক্ষুধার কারণে মারা গিয়েছিল, যাদের অর্ধেকই ছয় বছরের কম বয়সী শিশু। জাতিসংঘের অভিযোগ, ধনী দেশগুলো তাদের রক্ষায় এগিয়ে আসেনি।

ওই সময় অঞ্চলটিতে এখনকার মত খরা হয়েছিল। ২০১৯ ও ২০২১ সালের মধ্যে পঙ্গপালের আক্রমণে ইতোমধ্যে ধ্বংসপ্রাপ্ত ফসলগুলো। গবাদিপশুরও একই পরিণতি হয়েছে। জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা ওসিএইচএ নভেম্বরে জানিয়েছে, খরায় ৯.৫ মিলিয়ন গবাদি পশু মারা গেছে।

মানবিক গোষ্ঠীগুলো সতর্ক করে জানিয়েছে, পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী মার্চ থেকে মে পর্যন্ত বর্ষাকালে আরও খারাপ অবস্থা হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে হর্ন অব আফ্রিকা ভয়ানক অবস্থার মুখে পড়েছে। খাদ্য ও জ্বালানি খরচ বাড়ায় মানবিক সহায়তার পরিমাণ আরও কমে গেছে।