আটলান্টিকে নিজেদের রণতরী ডুবিয়ে দিলো ব্রাজিল

ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও আটলান্টিক মহাসাগরে নিজেদের ডিকমিশনড এয়ারক্রাফ্ট ক্যারিয়ার বা রণতরী ডুবিয়ে দিলো ব্রাজিল। ব্যবহার অনুপযোগী ও পুরনো হয়ে যাওয়ায় এটি ডুবিয়ে দেওয়া হয় বলে দাবি করেছে দেশটির বিমানবাহী।

আটলান্টিক মহাসাগরে নিজেদের রণতরী ডুবিয়ে দিল ব্রাজিল

তবে জাহাজ ডুবিয়ে দেওয়ার ঘটনাকে 'রাষ্ট্রীয় পরিবেশগত অপরাধ' বলে বর্ণনা করেছেন পরিবেশবিদরা। যুদ্ধজাহাজটি বিষাক্ত পদার্থে ভরা ছিল। ডুবানোর আগে পরিবেশবাদী এ নিয়ে আপত্তি তোলে। খবর আল জাজিরা।

৩ ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার রণতরীটি ডুবিয়ে দেওয়া হয়। ব্রাজিলের নৌবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছেন, উপকূল থেকে প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার (২২০ মাইল) দূরে আটলান্টিক মহাসাগরে, ‌'আনুমানিক ১৬ হাজার ফুট (৫০০০ মিটার) গভীরে এটি ডুবিয়ে দেওয়া হয়।

ছয় দশকের পুরনো 'সাও পাওলো' নামের এ রণতরীটি অন্য কোনো দেশের বন্দরে রাখতে চেয়েছিল ব্রাজিল। তাদের এই চেষ্টা ব্যর্থ হলে তারা রণতরীটি ডুবিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

দেশটির প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা বলেছিলেন যে, জাহাজটিকে তারা 'সবচেয়ে নিরাপদ এলাকায়' ডুবিয়ে দেবে। কিন্তু পরিবেশবাদীরা এই সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়ে বলেছেন, যুদ্ধজাহাজে টন অ্যাসবেস্টস, ভারী ধাতু এবং অন্যান্য বিষাক্ত পদার্থ রয়েছে, যা সমুদ্রের সঙ্গে মিশে প্রাণিদের খাদ্য শৃঙ্খলকে দূষিত করবে।

গেল মাসে ব্রাজিলের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভাকে সমুদ্রে জাহাজ না ডুবানোর বিষয়ে আহ্বান জানিয়েছিলেন বাসেল অ্যাকশন নেটওয়ার্ক নামের একটি সংগঠন।

অতি-ডানপন্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট জেইর বলসোনারোর অধীনে পরিবেশ ধ্বংসের ক্রমবর্ধমান প্রতিরোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন লুলা। 'বিপজ্জনক' পরিকল্পনাটি বন্ধের দাবি করেছিল সংগঠনটি।

ব্রাজিলের 'সাও পাওলো' নামের রণতরীটি ডুবিয়ে দেওয়াকে 'রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পরিবেশগত অপরাধ' হিসেবে বর্ণনা করেছে পরিবেশবাদী, শ্রম এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো।

১৯৫০ এর শেষের দিকে রণতরীটি তৈরি করে ফ্রান্স। ফরাসি নৌ-বাহিনী ৩৭ বছর ধরে এটি ব্যবহার করেছেন। যুদ্ধজাহাজটি ২০ শতকের নৌ ইতিহাসে একটি বগ অর্জন ভাবা হয়।

১৯৬০ এর দশকে 'সাও পাওলো' প্রশান্ত মহাসাগরে ফ্রান্সের প্রথম পারমাণবিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল।