অবনমনের আশঙ্কায় ম্যানচেস্টার সিটি

বড় ধরনের শাস্তিই পেতে যাচ্ছে ম্যানচেস্টার সিটি। অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলে দলবদলের উপর নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। এছাড়া প্রিমিয়ার লীগ অবশ্যই সিটিকে ছেড়ে দেবে। অর্থাৎ ম্যানচেস্টার সিটিকে রেলিগেশনে নেমে যেতে হবে।

বড় ধরনের শাস্তিই পেতে যাচ্ছে ম্যানচেস্টার সিটি

২০০৯ থেকে ২০১৮ নয় বছরের মধ্যে প্রিমিয়ার লিগের ১০০টিরও বেশি পৃথক আর্থিক নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্ত বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটি। গত চার বছর ধরে লিগের তদন্ত প্রক্রিয়ায় এসব উঠে আসে।

এসব অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলে, গত এক দশকের ইংলিশ ফুটবলের সবচেয়ে সফল ক্লাবটি প্রিমিয়ার লিগ থেকে বহিষ্কৃারের সম্মুখীন হবে। এছাড়া কেড়ে নেওয়া হতে পারে লিগ শিরোপা। নতুন খেলোয়াড়দের নিবন্ধন করায় বাঁধাও আসতে পারে। এছাড়া বড় অংকের জরিমানা তো আছেই।

এটা শুনতে নাটকীয় শোনালেও প্রিমিয়ার লিগের ১১ টি শিরোপা জেতা এবং আয়ের দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ক্লাব হিসাবে প্রতিষ্ঠিত ম্যানেচস্টোর সিটি বছরের পর বছর ধরে সিস্টেমের সাথে প্রতারণা করে আসছে। প্রিমিয়ার লিগের দাবি, এগুলো কোনো ছোটখাটো তদারকি বা প্রশাসনিক ত্রুটি নয়; বরং এটি ইচ্ছাকৃত।

তাই যদি সব বা এমনকি কিছু অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাহলে শাস্তি অবশ্যই অপরাধের সাথে মানানসই হবে। হতে পারে প্রিমিয়ার লিগে থেকে নির্বাসন অথবা পয়েন্ট কাটা যাবে। হতে পরে সার্জিও অ্যাগুয়েরো, ডেভিড সিলভা, ইয়ায়া তোরে এবং কোম্পানিদের রেখে যাওয়া বিস্ময়কর স্মৃতি/ট্রফিগুলোকে কলঙ্কিত করা হবে।

এদিকে ম্যানচেস্টার সিটি তাদের পক্ষে দৃঢ়ভাবে অভিযোগের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। ক্লাবটি ইতিমধ্যে উয়েফার দায়ের করা একই ধরনের মামলা জিতেছে। উয়েফা ২০২০ সালে ইউরোপীয় প্রতিযোগিতা থেকে ম্যানচেস্টার সিটিকে দুই মৌসুমের জন্য নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করেছিল। এএফপি নিয়ম ভঙ্গ করার জন্য তাদের ৩০ মিলিয়ন ইউরো জরিমানাও করেছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত সিটি সেই মামলা জিতেছিল।

প্রিমিয়ার লিগ থেকে বহিস্কারাদেশ আসতে পারে ম্যানচেস্টার সিটির জন্য

তবে এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। ম্যানেচস্টার সিটির বিপক্ষে এবারের আনীত অভিযোগ ইংলিশ ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলোর মধ্যে একটি হতে যাচ্ছে। এমন ঘটনা যা ইংল্যান্ড এবং ইউরোপজুড়ে খেলার খেলার মাঠে এবং বাইরে ব্যাপকভাবে পরিবর্তন করতে পারে।

২০০৮ সালে শেখ মনসুর বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের নেতৃত্বে আবুধাবি ইউনাইটেড গ্রুপ ম্যানসিটিকে তাদের দখলে নেওয়ার পর থেকে সিটির উত্থান উল্লেখযোগ্য। যা কয়েক বছর আগে রোমান আব্রামোভিচের অধীনে চেলসির সঙ্গে তুলনীয়।

এদিকে নিউক্যাসল, যারা ২০২১ সালে সৌদি আরবের পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড দ্বারা নেওয়া হয়েছিল, তারা শিগগিরই নিজেদেরকেও এই তালিকায় খুঁজে পেতে পারে। কারণ ক্লাবটি মধ্যপ্রাচ্যের মালিকানায় যাবার পর থেকেই বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করছে। শোনা যাচেছ আগামী মৌসুমে ক্লাবটি আরও ঠেলে সাজাতে যাচ্ছে। আর তা হলে ইংলিংশ লিগে চেলসি, ম্যানচেস্টার সিটির পর তৃতীয় নজির স্থাপন করবে তারা।

সেরা খেলোয়াড়, ম্যানেজার, সুযোগ-সুবিধা, নির্বাহীদের উপর বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে ম্যানচেস্টার সিটির এমন সাফল্য। বিগত দশকে ম্যানসিটি সেরা দল তৈরি করেছে এবং কল্পনাযোগ্য সেরা ফুটবল খেলেছে।

প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে প্রথম ১৬ বছরে অষ্টম থেকে উপরে উঠতে পারেনি যে দলটি। সেই দলটির এমন রাতারাতি সাফল্যে টনক নড়ে লিগ কর্তৃপক্ষের। প্রিমিয়ার লীগ বিশ্বাস করে যে ম্যানসিটি প্রতারণামূলকভাবে এটা করেছে। আর তাই যুদ্ধের রেখা টানার আগে আরেকবার আইনজীবীদের ডেকেছে লিগ কর্তৃপক্ষ।