বিরল ঘটনার পর ড্র বুলাওয়ে টেস্ট

বুলাওয়ে টেস্ট শুরুর আগে এ নিয়ে ক্রিকেটপ্রেমীদের খুব একটা মাতামাতি ছিল না বললেই চলে। শিবনারায়ন চন্দরপলের ছেলে তেজনারায়ন চন্দরপল ডাবল সেঞ্চুরি করে এই টেস্টকে ভালোভাবেই এনেছেন আলোচনায়। বাকিটা করলেন গ্যারি ব্যালান্স। দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে দুইটি আলাদা দেশের হয়ে টেস্ট সংস্করণে সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েছেন জিম্বাবুইয়ান তারকা।

বুলাওয়ে টেস্টে বিরল কীর্তি গড়েছেন ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ও তেজনারায়ন চন্দরপল

কিন্তু পঞ্চম দিন এমন একটা ঘটনার সাক্ষ্যি হলো বুলাওয়ে যেটি টেস্ট ক্রিকেটের প্রায় দেড় শ’ বছরের ইতিহাসে ঘটল প্রথমবার। এই প্রথম টেস্টের পাঁচ দিনের খেলাই শুরু করেছেন একই দলের দুই ওপেনার! বিরল এই কীর্তি গড়েন ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ও তেজনারায়ন। বুলাওয়ে টেস্টের দুজনই প্রতিদিনের খেলা শুরু করেছেন এই ক্যারিবীয় দুই ব্যাটারই!

এর কৃতিত্ব অবশ্য তাদের একার নয়। বৃষ্টি এবং জিম্বাবুয়েকেও কিছুটা দিতে হবে। পাঁচ বছর পর বুলাওয়ের কুইন্স স্পোর্টস ক্লাবে যে টেস্টটি মাঠে গড়াল সেটি প্রথম দিনেই পড়ে বৃষ্টিবাধায়। একমাত্র টেস্ট শুরুর দিন খেলা হয় স্রেফ ৫১ ওভার। স্বাগতিক জিম্বাবুয়ে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামার পর দিন শেষে দুজনই অজেয় থাকেন। দ্বিতীয় দিনের শুরুতেও ছিল বৃষ্টির বাগড়া।

পরে অপরাজিত সেঞ্চুরিতে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেন তেজনারায়ন ও ব্র্যাথওয়েট। তৃতীয় দিনেও এই দুজনই খেলা শুরু করেন। কিন্তু ব্র্যাথওয়েট ১৮২ রানে আউট হয়ে যান। আর স্বপ্নের ডাবল সেঞ্চুরি তুলে নেন তেজনারায়ন। চতুর্থ দিনের শেষ সেশনে জিম্বাবুয়ে ইনিংস ঘোষণা করে। দিন শেষে অজেয় থাকেন উইন্ডিজের সেই দুই ওপেনারই।

আজ পঞ্চম ও শেষ দিনে ব্যাট হাতে নেমেই ইতিহাস গড়ে ফেললেন ব্র্যাথওয়েট ও তেজনারায়ন। টেস্টের পাঁচ দিনই ব্যাটিং করার নজির আছে অবশ্য আরও ১০ জনের। তবে একই জুটির প্রতিদিন খেলা শুরুর করার ঘটনা এই প্রথম। প্রথম ব্যাটার হিসেবে টেস্টের পাঁচ দিনেই ব্যাটিং করেছিলেন ভারতের এমএল জয়সীমা। সেটাও ১৯৬০ সালে; কলকাতা টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে।

এরপর জয়সীমার পাশে নাম লেখান রবি শাস্ত্রী, চেতেশ্বর পুজারা, জিওফ বয়কট, অ্যালান ল্যাম্ব, অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ, ররি বার্নস, কিম হিউজ (১৯৮০), আদ্রিয়ান গ্রিফিথ ও আলভিরো পিটারসেন। দেশের হিসেবে ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ চারজনের আছে এই কীর্তি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ভারতের আছে তিনজন করে। বাকি দুজন অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার।

ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে আরও আছে বিরল ঘটনা। পিতা-পুত্রের ডাবল সেঞ্চুরির ঘটনা দ্বিতীয়বার দেখল টেস্ট ক্রিকেট। দলীয়ভাবেও কয়েকটি বিরল ঘটনার সাক্ষ্যি হয়েছে বুলাওয়ে টেস্ট। প্রথমবারের মতো কোনো টেস্টে উদ্বোধনী জুটিতে ৩০০ রান ছুঁয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সপ্তমবারের মতো এক টেস্টে তিনবার ইনিংস ঘোষণার ঘটনা ঘটেছে এই ম্যাচেই। খুব স্বাভাবিকভাবেই আগের ছয়টি টেস্টর মতো বুলাওয়ে টেস্টও শেষ হয়েছে অমীমাংসিতভাবে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৪৪৭/৬ ডি. ও ২০৩/৫ ডি.।
জিম্বাবুয়ে: ৩৭৯/৯ ও ১৩৪/৬।
ফল: একমাত্র টেস্ট ড্র।
ম্যাচ সেরা: তেজনারায়ন চন্দরপল (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)।