আপনি পড়ছেন

১২ বছর আগে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা থেকে পরিবারসহ তুরস্কে এসেছিলেন আবদেল করিম আবু জালহুম। যুদ্ধ ও দারিদ্র্য থেকে পালিয়ে নিরাপদে বাস করার জন্য তুরস্কে এসেছিল ফিলিস্তিনি এই পরিবারটি। কিন্তু ৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পে আবু জালহুম, তার স্ত্রী ফাতিমা এবং তাদের চার সন্তান প্রাণে বাঁচতে পারেনি। ভয়াবহ ভূমিকম্পে এই পরিবারের সকল সদস্যের মারা যাওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। খবর রয়টার্স

palestinian family dies in turkeyভূমিকম্পে মারা যান যুদ্ধ থেকে বাঁচার জন্য তুরস্কে আসা এক ফিলিস্তিনি পরিবার

ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তুরস্কের ভূমিকম্পে মৃত ৭০ জন ফিলিস্তিনিদের মধ্যে আবু জালহুম, তার স্ত্রী ফাতিমা এবং তাদের চার সন্তান রয়েছে। এই ভূমিকম্পে মোট মৃতের সংখ্যা ১২ হাজার ছাড়িয়েছে বলে জানা গেছে।

আবু জালহুমের ভাই ৪৩ বছর বয়সী রামজি, বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, 'আমার ভাই গাজায় যুদ্ধ এবং অবরোধ থেকে বেঁচে থাকার জন্য এবং ভালোভাবে জীবনযাপনের জন্য তুরস্কে গিয়েছিলেন। কিন্তু ভূমিকম্পে আমরা পুরো পরিবারকে হারিয়েছি। একটি সম্পূর্ণ পরিবার নাগরিক নিবন্ধন রেকর্ড থেকে মুছে গিয়েছে।'

আবু জালহুম গাজায় ট্যাক্সি ড্রাইভার হিসাবে কাজ করতেন। ২০১০ সালে তিনি তুরস্কে চলে আসেন। এরপর হাতায় প্রদেশের আন্তাকিয়া শহরের একটি কাঠের কারখানায় কাজ শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি স্ত্রী এবং সন্তানদের তুরস্কে নিয়ে আসেন।

৫০ বছর বয়সী জালহুম, ৩৩ বছরের ফাতিমা, তাদের সন্তান নুরা(১৬), বারা(১১), কেনজি(৯), এবং তুরস্কে জন্ম নেওয়া ৩ বছর বয়সী মোহাম্মদের জীবন প্রতিশ্রুতিশীল ছিল। ছয় মাস আগে পরিবারটি একটি নতুন অ্যাপার্টমেন্টে বাস করতে শুরু করে।

ভূমিকম্পের পর ফিলিস্তিনে থাকা জালহুমের পরিবারের অন্য সদস্যরা তাদের খবর জানার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেছিলেন। যে কোনও তথ্য দিতে পারে এমন প্রত্যেককে ফোন করেছিলেন তারা। অবশেষে ৭ ফেব্রুয়ারি একটি ছবিতে ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে থাকা, প্রাণহীন পরিবারটিকে চিনতে পারেন তারা।ছবিতে দেখা যাচ্ছে ভূমিকম্পের কারণে ভবনটি যখন ধসে পড়ছে তখন জালহুম নিজের শরীর দিয়ে সন্তানদের ঢেকে রাখার চেষ্টা করছিলেন।

তুরস্কে কতজন ফিলিস্তিনি বাস করেন তার কোনো সঠিক পরিসংখ্যান নেই। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দারিদ্র্য থেকে বাঁচার জন্য অনেকেই গাজা থেকে তুরস্কে চলে এসেছেন।

জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ এর হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ৪ লাখ ৩৮ হাজার ফিলিস্তিনি শরণার্থী সিরিয়ায় বাস করেন। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধারকর্মীদের পাঠানো হয়েছে।

এদিকে গাজার বেত লাহিয়ায় আবু জালহুমের পারিবারিক বাসস্থানে তার মা ওয়েদাদ সন্তানের মরদেহ দেখার জন্য অপেক্ষা করছেন। তিনি চাইছেন, জালহুম এবং তার সন্তানদের কবর যেন ফিলিস্তিনের মাটিতে হয়।

কাঁদতে থাকা এই বৃদ্ধা মা বলেছেন, 'আমি ১২ বছর ধরে আমার ছেলেকে বা তার সন্তানদের দেখিনি। আমি আমার সন্তান এবং নাতিদের চাই, আমি তাদের দেখতে চাই এবং তাদের বিদায় জানাতে চাই।'

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.