এবার চীনের আকাশে অজ্ঞাত উড়ন্ত বস্তু

এবার নিজেদের আকাশে অজ্ঞাত উড়ন্ত বস্তু দেখার কথা জানালো চীন। যুক্তরাষ্ট্র সরকার গত ১০ দিনে মার্কিন আকাশ থেকে সন্দেহভাজন চারটি উড়ন্ত বস্তু গুলি করে ভূপাতিত করার পর চীন এ তথ্য জানিয়েছে।

চীনের শানদং প্রদেশের কর্মকর্তারা সেখানকার আকাশে উড়ন্ত বস্তু দেখার কথা জানিয়েছেন

চীনের রাষ্ট্রায়ত্ব প্রচারমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস বলেছে, পূর্বাঞ্চলীয় শানদং প্রদেশে নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ পীত সাগরের ওপরে একটি অজ্ঞাত উড়ন্ত বস্তু (ইউএফও) শনাক্ত করেছে। এটি এখন রিঝাও শহরের কাছে আকাশে অবস্থান করছে। ইউএফওটি গুলি চালিয়ে ভূপাতিত করা হবে। নৌ চালক ও মৎস্যজীবীদের ওই এলাকা এড়িয়ে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বেইজিং ও সাংহাইয়ের মাঝামাঝি দূরত্বের শহর রিঝাও। পীত সাগরের তীরবর্তী এ বন্দরনগরীর বিপরীত দিকে কিছুটা পশ্চিমে দক্ষিণ কোরিয়ার অবস্থান। রিঝাও শহরের কাছে চীনের এ ইউএফও শনাক্তের ঘোষণার মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশটির অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের একটি পর্বের সূচনার আভাস দেখছেন কেউ কেউ।

চীনের আকাশে উড়ন্ত বস্তুটি কোন দেশের, তা এখনও জানা যায়নি। একইভাবে জানা যায়নি গত ৪৮ ঘণ্টায় যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার আকাশ থেকে ভূপাতিত দুটি অজ্ঞাত উড়ন্ত বস্তুর মালিকের পরিচয়। সংশ্লিষ্ট দেশগুলো এ বিষয়ে কারও প্রতি অভিযোগ বা সন্দেহের কথাও জানায়নি।

গত ৪ ফেব্রুয়ারি নিজেদের আকাশসীমায় একটি সন্দেহভাজন বেলুন মিসাইল ছুঁড়ে ভূপাতিত করে যুক্তরাষ্ট্র। প্রায় ২০০ ফুট উঁচু বেলুনটি প্রথমে আলাস্কা অঙ্গরাজ্যের আকাশে দৃষ্টিগোচর হয়। পরবর্তী সাত দিনে বেলুনটি কানাডা, নর্থ ক্যরোলাইনা, মন্টানা অঙ্গরাজ্যের ওপর দিয়ে উড়ে আটলান্টিক মহাসাগরের কাছে গেলে ভূপাতিত করা হয়।

চীন সরকার ভূপাতিত বেলুনটি নিজেদের বলে জানিয়েছে। আবহাওয়া বিষয়ক বেসামরিক গবেষণায় বেলুনটি ব্যবহৃত হচ্ছিল জানিয়ে চীনা কর্মকর্তারা বলেছেন, বাতাসের কারণে বেলুনটি পথচ্যুত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দিকে চলে গেছে।

এরপর গত শুক্রবার আলাস্কার আকাশসীমা থেকে আরেকটি গাড়ির সাইজের উড়ন্ত বস্তু ভূপাতিত করার কথা জানায় যুক্তরাষ্ট্র। পরদিন শনিবার যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার যুদ্ধবিমানের যৌথ কমান্ড নোরাডের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাদের টহল দল কানাডার ইউকোন এলাকার আকাশে একটি অজ্ঞাত উড়ন্ত বস্তু দেখতে পেয়েছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর নির্দেশে তা গুলি চালিয়ে ভূপাতিত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে মার্কিন সাময়িকী ফোর্বসের রিপোর্টার ম্যাট নোভাকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিজেদের আকাশে উড়ন্ত বস্তু শনাক্ত ও ভূপাতিত করার এসব পাল্টাপাল্টি দাবি একটি নতুন স্নায়ুযুদ্ধের রুটিনমাফিক ঘটনা বলেই মনে হচ্ছে। এ যুদ্ধের একদিকে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলো। অন্যপক্ষে রয়েছে চীন, রাশিয়া, ইরান ও সমমনা দেশগুলো।