ইরানের ড্রোন যেভাবে সরবারহ হচ্ছে রাশিয়ায়!

ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর থেকে মস্কোর বিরুদ্ধে ইরানের ড্রোন ব্যবহারের অভিযোগ তুলে কিয়েভ। বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে ইরান। এবার রাশিয়ায় ইরানের ডোন সরবারহ নিয়ে ১২ ফেব্রুয়ারি, রোববার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।

ড্রোন রাশিয়ায় পাঠাতে নৌকা এবং রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিমান সংস্থা ব্যবহার করেছে তেহেরান

তেহেরানের বিশ্বস্ত সূত্রের বরাত দিয়ে গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য ইরানের নতুন প্রযুক্তির উন্নত দূরপাল্লার সশস্ত্র ড্রোন রাশিয়ায় পাঠাতে নৌকা এবং রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিমান সংস্থা ব্যবহার করেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি।

গেল নভেম্বরে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর অফিসার এবং প্রযুক্তিবিদরা তেহরানে ড্রোন কারখানা পরিদর্শন করেন। পরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নৌ-বহরে কমপক্ষে ১৮টি ড্রোন সরবরাহ করা হয়।

সে সময় ১০ সদস্যের রাশিয়ান প্রতিনিধি দল ইরানের তৈরি ছয়টি মোহাজের-৬ ড্রোন বাছাই করে। এসব ড্রোনের প্রতিটি ডানার নিচে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র বহন করে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরের বস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। সেই সঙ্গে ১২টি শাহেদ ডোন রয়েছে। যেগুলো আকাশ থেকে মাটিতে আঘাত হানতে সক্ষম।

ইরানের সুপরিচিত শাহেদ ১৩১ এবং ১৩৬ ড্রোন ব্যবহার করে ইউক্রেনের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানছে রাশিয়া। অনেক উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন এসব ড্রোন বোমা সরবরাহ করতে এবং লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করে ফিরে আসতে সক্ষম।

এসব ঘটনা ইরান এবং রাশিয়ার মধ্যে ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতা প্রদর্শন করে। যা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি শত্রুতা পোষণের শামিল। যুদ্ধে মস্কোকে এখনও সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছে তেহরান এমনটা দাবি মার্কিনিদের।

গেল আগস্টে মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছিলেন, রাশিয়ার কাছে গেল জুন মাসে শাহেদ ১৯১ এবং ১২৯ ড্রোন প্রদর্শন শুরু করে ইরান। সে সময় তারা বলেছিল যে, মস্কোর কাছে এসব ড্রোন বিক্রির আশা করেছে তেহরান। এরপর সেপ্টেম্বরে ইউক্রেনের অকাশ থেকে মোহাজের-৬ নামের ড্রোনটি ভূপাতিত করা হয়। যা নভেম্বরে কিয়েভের কর্মকর্তারা গার্ডিয়ানের কাছে এটি প্রদর্শন করে।

এদিকে ইউক্রেনের শহরগুলোতে নৃশংস বোমা হামলার অভিযানকে টিকিয়ে রাখতে ক্ষেপণাস্ত্রের স্বল্পতায় পড়েছে রাশিয়া। তবে অস্ত্রের মজুদ বাড়াতে ইরান এবং উত্তর কোরিয়ার দিকে ঝুঁকছে মস্কো।

ইউক্রেনের অনেকেই আশঙ্কা করছেন যে, যুদ্ধের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে বড় ধরনের হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে রাশিয়া।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনকে অস্ত্র সহযোগিতা বাড়াচ্ছে। সেই সঙ্গে তারা যুদ্ধকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। এরমধ্যে তেহেরান থেকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কেনারও চেষ্টা করেছে মস্কো। তবে তেহরান সেগুলো পাঠাতে রাজি হয়েছে কি না এমন কোনও তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি।