স্বপ্নের মঞ্চে সিলেট স্ট্রাইকার্স

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) প্রায়সব বিভাগের ফ্র্যাঞ্চাইজি ফাইনালে উঠলেও ব্যতিক্রম ছিল সিলেট। অবশেষে মাশরাফি বিন মর্তুজার হাত ধরে বহুদিনের আক্ষেপ ঘোচাল সিলেট স্ট্রাইকার্স। প্রথমবারের মতো প্রতিযোগিতার ফাইনালে উঠল তারা। রংপুর রাইডার্সকে বিদায় করে স্বপ্নের মঞ্চে নাম লেখাল সুরমাপাড়ের দলটি।

রংপুর রাইডার্সের উইকেট পতনের পর সিলেট স্ট্রাইকার্সের উদযাপন

আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে রংপুর রাইডার্সকে ১৯ রানে হারিয়েছে সিলেট স্ট্রাইকার্স। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে সাত উইকেটে ১৮২ রানের শক্তিশালী সংগ্রহ তোলেন মাশরাফি অ্যান্ড কোং। জবাবে নির্ধারিত কুড়ি ওভারে আট উইকেটে ১৬৩ রান তুলতে সক্ষম হয় নুরুল হাসান সোহানের দল।

ফাইনালে ওঠাটা রংপুরের জন্য যতটা কঠিন, ততটাই সহজ ছিল সিলেটের জন্য। প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে চার উইকেটে হেরেছিল মাশরাফির দল। ফাইনালে ওঠার দ্বিতীয় সুযোগটা কাজে লাগাল সিলেট। বিপরীতে এলিমিনেটর ম্যাচে ফরচুন বরিশালকে বিদায় করলেও শেষ রক্ষা হলো না রংপুরের।

বিফলেই গেল রংপুর রাইডার্স ওপেনার রনি তালুকদারের হাফসেঞ্চুরিটা

সিলেট স্ট্রাইকার্স শক্তিশালী সংগ্রহ পেয়েছে সম্মিলিত ব্যাটিং প্রচেষ্টায়। শুরুতে পথ দেখান টপ অর্ডার ব্যাটাররা। পরে লোয়ার মিডল অর্ডার ব্যাটাররা হাঁটেন সেই পথেই। এমন ম্যাচে ২৫ বলে ২৫ রানের মন্থর গতির ইনিংস খেলেন দলটির ওপেনার তৌহিদ হৃদয়। ৩০ বলে ৪০ রানে ফেরেন আরেক ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত।

সিলেটের উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৬৫ রান। পরে উইকেটে এসেই ঝড় তোলেন অধিনায়ক মাশরাফি। ১৬ বলে ২৮ রান করেন তিনি। এ ছাড়া জাকির হাসান ১৩ বলে ১৬, রায়ান বার্ল ৬ বলে ১৫, থিসারা পেরেরা ১৫ বলে ২১ ও জর্জ লিন্ডে ১০ বলে ২১ রান করেন। শেষজন ইনিংসে ছিলেন অপরাজিত। রংপুরের পক্ষে দুটি করে উইকেট নেন দাসুন শানাকা ও হাসান মাহমুদ।

কঠিন লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই তোপের মুখে পড়ে রংপুর রাইডার্স। দ্বিতীয় ওভারে তিন রানে দলটি হারায় প্রথম উইকেট। ৩৪ রানে দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে আউট হন শামীম হোসেন। নবম ওভারে ৬৮ রানে আরও একটি ধাক্কা। এবার বিদায় নেন ঝড় তোলা নিকোলাস পুরান। ১৪ বলে ৩০ রান করেন তিনি। ১১ বলে ১৪ রানে ফেরেন শামীম।

চতুর্থ উইকেট জুটিতে রংপুরকে লড়াইয়ে ফেরান অধিনায়ক নুরুল ও এক প্রান্ত আগলে রাখা ওপেনার রনি তালুকদার। এই জুটিতে জয়ের আশাও দেখেছিল তারা। কিন্তু ৮২ রানের জুটি বিচ্ছিন্ন হতেই সব এলোমেলো হয়ে যায়। দলীয় ১৫০ রানে দলের চতুর্থ ব্যাটার হিসেবে সাজঘরে ফেরেন সোহান। ২৪ বলে ৩৩ রানে আউট হন রংপুর অধিনায়ক। মূলত আস্কিং রেটের চাপই তাকে সাজঘরে ফেরায়।

১৯ বলে ৩৩ রানের সমীকরণ ছিল রংপুরের সামনে। দলকে অমন পরিস্থিতিতে ফেলে আউট হয়ে যান সোহান। ১৮তম ওভারে তার পদাঙ্ক অনুকরণ করলেন রনিও। ৫২ বলে ৬৬ রানে আউট হন রংপুর ওপেনার। শেষ দিকে নয় বলে ১০ রান করেন শানাকা। তাদের ইনিংসগুলো কাজে আসেনি। স্রেফ দলের হারের ব্যবধান কমিয়েছে মাত্র।

সিলেটের বোলারদের মধ্যে ৩৪ রানে সর্বোচ্চ তিন উইকেট নিয়েছেন লুক উড। তবে ম্যাচ সেরা হয়েছেন দুই উইকেট নেওয়া তানজিব হাসান সাকিব। কারণটা মিতব্যয়ি বোলিং। চার ওভারে ১৯ রান দিয়ে রংপুরকে ভালোই চাপে রেখেছিলেন ২০ বছর বয়সী এই পেসার। ৪২ রানে দুটি শিকার পেসার রুবেল হোসেনের।

আগামী বৃহস্পতিবার শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে সিলেট স্ট্রাইকার্সের প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। কুমিল্লার সামনে তৃতীয় শিরোপার হাতছানি। আর সিলেটকে ডাকছে স্বপ্নের প্রথম শিরোপা।