পিএসজির মাঠে জিতল বায়ার্ন মিউনিখ

আরও একবার উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে প্যারিস সেন্ট জার্মেইর (পিএসজি) স্বপ্নটা সুতোয় ঝুলে গেল। শেষ ষোলোর প্রথম লেগের ম্যাচে হেরে বসলেন মেসি, নেইমার, এমবাপ্পেরা। মঙ্গলবার রাতে প্যারিসে এসে তারকাঠাসা পিএসজিকে ১-০ গোলে হারিয়ে গেল ১০ জনের বায়ার্ন মিউনিখ।

পিএসজিকে ১-০ গোলে হারিয়ে দিলো ১০ জনের বায়ার্ন মিউনিখ

এই জয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের পথে একধাপ এগিয়ে গেল জার্মান ক্লাবটি। আগামী ৮ মার্চ নিজেদের মাঠ অ্যালিয়েঞ্জ এরিনায় দ্বিতীয় লেগের ম্যাচ খেলবে বায়ার্ন মিউনিখ। সেই ম্যাচে হার ঠেকালেই চলবে তাদের। তবে টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে ফিরতি লেগে পিএসজিকে করতে হবে দারুণ কিছু।

ম্যাচটা শুরুর আগে অবশ্য অনেকটা ব্যাকফুটে ছিল পিএসজি। চোটের কারণে মহারণের শুরুর একাদশে ছিলেন না কিলিয়ান এমবাপ্পে। তার শূন্যতা প্রথমার্ধেই বোঝা গেছে। ম্যাচজুড়ে লিওনেল মেসি ও নেইমার জুনিয়র জুটি ছিল অকার্যকর। গোল তো দূরের কথা, বিরতির আগ পর্যন্ত বায়ার্নের আক্রমণ সামলাতেই হিমশিম খেতে হয়েছে প্যারিসিয়ানদের।

অবশেষে দ্বিতীয়ার্ধে খোলে গোলমুখ। ৫৩ মিনিটে পিএসজির জালে বল জড়ান কিংসলে কোম্যান। ফরাসি ফরওয়ার্ডের এই গোলটিই শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ভাগ্য বায়ার্নের পক্ষে নির্ধারণ করে দিয়েছে। তবে গোল শোধে চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখেনি পিএসজি। পিছিয়ে থাকা স্বাগতিকদের লড়াইয়ে ফেরাতে মাঠে নামেন এমবাপ্পে।

ফরাসি ফরওয়ার্ডের উপস্থিতিতে বাড়ে পিএসজির আক্রমণের গতি। শেষ দিকে বায়ার্নের ওপর সর্বস্ব নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে তারা। কিন্তু কাজের কাজটা হয়নি। এ জন্য নিজেদের দুর্ভাগ্যকেও দায়ী করতে পারে ফরাসি ক্লাবটি। ম্যাচে যে দুইবার গোল করেও তা থেকে বঞ্চিত হয়েছে ক্রিস্টোল গালতিয়েরের দল!

৭৩ মিনিটে প্রথমবার এমবাপ্পের গোল বাতিল হয় অফসাইডের কারণে। ৯ মিনিট পর আবারও একই দুর্ভাগ্য। এবারও গোলবঞ্চিত হন এমবাপ্পে। আক্রমণের শুরুতে সামান্য ব্যবধানে অফসাইডে ছিলেন নুনো মেন্ডিস। যেটা স্রেফ দুর্ভাগ্য। তবে হতাশার মুহূর্তটা ছিল যখন বায়ার্ন মিউনিখ গোলরক্ষক ইয়ান সোমারকে একা পেয়েও এমবাপ্পে গোল করতে পারেননি।

শেষ দিকে গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন মেসি-ও। কিন্তু আর্জেন্টাইন মহাতারকা ডি-বক্স থেকে যে শটটি নেন তা চলে যায় পোস্টের ওপর দিয়ে। আরেক বড় তারকা নেইমারও ম্যাচজুড়ে নিজেকে হারিয়ে খুঁজলেন। সবমিলিয়ে বায়ার্ন মিউনিখের আটসাঁট রক্ষণের সামনে পিএসজি ত্রিফলাকে স্রেফ অসহায়ই মনে হচ্ছিল।

রক্ষণ তো বটেই, বায়ার্নের গোলরক্ষক ইয়ান সোমারও এদিন দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন। তিন কাঠির নিচে আলো ছড়িয়েছেন পিএসজির ইতালিয়ান তারকা জিয়ানলুইজি ডোন্নারুম্মা। না হলে আরও গোল হজম করতে পারতো পিএসজি। যে গোলটি হজম করতে হয়েছে সেটিতে বল ডোন্নারুম্মার গ্লাভসে লেগেই জালে জড়িয়েছিল।

অ্যাওয়ে ম্যাচটিতে বায়ার্ন মিউনিখের জয়ের আনন্দ কিছুটা হলেও মাটি হয়ে গেছে বেনজামিন পাভার্ডের কারণে। শেষ দিকে মেসিকে পেছন থেকে ট্যাকল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন তিনি। বায়ার্নের জন্য অস্বস্তির খবর হচ্ছে, যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে লাল কার্ড দেখে বহিষ্কার হওয়া পাভার্ডকে দ্বিতীয় লেগে পাচ্ছে না বাভারিয়ান জায়ান্টরা।

ইউরোপের শীর্ষস্থানীয় প্রতিযোগিতায় এ নিয়ে টানা সাত ম্যাচ জিল বায়ার্ন মিউনিখ। গ্রুপপর্বে শতভাগ জয়ের রেকর্ড ধরে রাখা বাভারিয়ানরা এদিনও দুর্দান্ত পারফর্ম করল। অন্যদিকে স্রেফ অনেচনা লাগল পিএসজিকে। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা তিন ম্যাচ হারল ফরাসি ক্লাবটি।