যুক্তরাষ্ট্র: ড্রোন উৎপাদনে বিশ্বনেতা হতে চায় ইরান

ইরান সস্তা, সামরিক-গ্রেডের ড্রোন উৎপাদনে বিশ্বনেতা হয়ে উঠছে বলে সতর্ক করেছে মার্কিন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা। তারা বলছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণকে তার ড্রোনের ক্ষমতা প্রদর্শনের মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করছে তেহরান। বিষয়টি রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের যুদ্ধ কৌশলেও ব্যাপকভাবে সহায়তা করছে। খবর দ্য গার্ডিয়ান।

ইরানি ড্রোন

মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ জানিয়েছে, এ পর্যন্ত রাশিয়াকে তিন ধরনের ড্রোন সরবরাহ করেছে। এর মধ্যে কামিকাজে মিশনে ব্যবহৃত হয়েছে একবার ব্যবহারযোগ্য শাহেদ ১৩১ ও ১৩৬ ড্রোন। অন্যদিকে মোহাজের-৬ মডেলের ড্রোন বিমান হামলা এবং পুনঃনিরীক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়।

গত সপ্তাহে গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক খবরে উল্লেখ করা হয়, ইরানের ড্রোন কারখানা পরিদর্শন করতে মস্কো থেকে একটি সামরিক প্রতিনিধিদল গত নভেম্বরে তেহরান সফরে যায়। এরপরই ইরান কমপক্ষে ১৮টি ড্রোন রাশিয়ায় রপ্তানি করে।

কিয়েভ হামলায় ইরানের ড্রোন ব্যবহার হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে

ইরান সবসময়ই বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে। তারা জানায়, ইউক্রেনে সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য তারা কোনো ড্রোন রাশিয়ার কাছে সরবরাহ করেনি। তবে যুক্তরাষ্ট্র দাবি করছে, এ ব্যাপারে তাদের কাছে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। ভিডিও ফুটেজ ও ধ্বংস হওয়া ড্রোনের ছবি তাদের দাবির সত্যতা প্রমাণ করবে। ফলে তারা তেহরানের উপর কঠোর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার জন্য চাপ দিচ্ছে।

এদিকে যুক্তরাজ্য গত সোমবার জাতিসংঘের কাছে প্রমাণ পেশ করে দাবি জানিয়েছে, জাতিসংঘের আইন লঙ্ঘন করে ইরান ইয়েমেনের হুথি মিলিশিয়াকেও সামরিক ড্রোন সরবরাহ করেছে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে এইচএমএস মন্ট্রোজের রয়্যাল নেভি কর্মীদের দ্বারা একটি ড্রোন জব্দ করার পরে তারা সম্প্রতি এ দাবি জানায়।

মার্কিন বিশ্লেষকরা ইউক্রেনে ড্রোন হামলার ধ্বংসাবশেষের ছবিকে ইরানী ড্রোনের পরিচিত মডেলের চিত্রের সাথে তুলনা করেছেন। একজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, আমরা দেখছি, দুটি ভিন্ন ভৌগোলিক অঞ্চলের খুব স্বীকৃত ধ্বংসাবশেষ একই উৎস থেকে এসেছে।

মার্কিন বিশ্লেষকরা দাবি করেন, ইউক্রেনের অভিজ্ঞতার পর ইরান প্রচলিত যুদ্ধে পূর্ণ মাত্রায় অংশগ্রহণের জন্য তার ড্রোন কর্মসূচি বাড়াতে প্রস্তুত। ইরানি ড্রোন সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ক্রমবর্ধমান বৈচিত্র্যময় ও উচ্চাভিলাষী আক্রমণের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। সৌদি আরবের তেল শিল্পে হামলা থেকে ২০২১ সালে মার্সার স্ট্রিট ট্যাঙ্কার হামলা পর্যন্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইরানের ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে। এভাবে তারা পুরো বিশ্বে ড্রোনের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেওয়ার চেষ্টা করছে।