আশা জাগিয়ে নিরাশার হার

হারের বন্দোবস্ত আগেই করে দিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। বোলাররা আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন বটে। কিন্তু আশা জাগিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি টাইগারদের। আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন উইকেটে হেরে গেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের জয়ের স্বপ্ন ম্লান করে দেন ডেউইড মালান

টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের ১৬ বল বাকি থাকতে ২০৯ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। জবাবে সাত উইকেট হারিয়ে ১০ বল অক্ষত রেখে জয় তুলে নেয় ইংল্যান্ড (২১২/৭)। এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেল জস বাটলারের দল। আগামী শুক্রবার একই ভেন্যুতে দ্বিতীয় ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে।

‘অল্প’ পুঁজি নিয়েই ইনিংসের শুরু থেকে ইংল্যান্ডকে চাপে রাখে বাংলাদেশ। কিন্তু এক প্রান্ত আগলে রেখে আশার প্রদীপ হয়ে টিকে থাকেন তিনে নামা ডেউইড মালান। ১৪৫ বলে ১১৪ রানের ইনিংসে অপরাজিত থাকেন তিনি। আট চার ও চার ছক্কায় গড়া ইনিংসের সুবাদে অবধারিতভাবেই ম্যাচ সেরা হয়েছেন মালান।

ইংল্যান্ডকে অবশ্য ভয় পাইয়ে দিয়েছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা। একদিকের উইকেটের রাশ টেনে ধরার চ্যালেঞ্জ অন্যদিকে আস্কিং রেটের চাপ। দুইয়ে মিলে ইংলিশদের পেয়ে বসেছিল টাইগাররা। শেষ পর্যন্ত মালানের ব্যাটে উড়ে গেছে চাপ। দলকে লড়াইয়ে রাখার পাশাপাশি তিনি তুলে নেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি।

অপরাজিত এই সেঞ্চুরি করার পথে সবচেয়ে বড় সঙ্গটা তাকে দিয়েছেন উইল জ্যাক। ২৬ রানে আউট জ্যাক। মইন আলি ফেরেন ১৪ রানে। দুজনকেই ফেরান মেহেদি হাসান মিরাজ। ১৬১ রানে সাত উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ড তখন প্রবল চাপে। চাপটা শেষ পর্যন্ত অব্যাহত রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। মালান ঝড়ে সব এলোমেলো হয়ে যায়।

আদিল রাশিদকে নিয়ে ইনিংসের সর্বোচ্চ ৫১ রানে হার না মানা জুটিতে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন মালান। রশিদ ১৭ রানে অজেয় থাকেন। ওপেনার ফিলিপ সল্ট ১২ রানে আউট হন। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে তাইজুল ইসলাম নিয়েছেন তিন উইকেট। একটি করে শিকার তাসকিন আহমেদ ও সাকিব আল হাসানের।

তাসকিন উইকেট কম পেলেও বল হাতে যথেষ্ট মিতব্যয়ি থাকলেন। যা লড়াইয়ে রাখে বাংলাদেশকে। যদিও তা বিফলেই গেল। টাইগারদের হারিয়ে সিরিজ জয়ের পথে একধাপ এগিয়ে গেল ইংল্যান্ড। এর আগে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের শুরুটা মন্দ ছিল না। পঞ্চম ওভারে উদ্বোধনী জুটিতে ত্রিশ ছাড়ায় তারা।

৩৩ রানের জুটি বিচ্ছিন্ন হয় লিটন দাসের বিদায়ে। তামিম অবশ্য আশা দেখিয়েছিলেন। কিন্তু উইকেটে থিতু হওয়ার পর সাজঘরে ফিরে গেলেন অধিনায়ক ও বাঁহাতি ওপেনার। তামিম ফেরেন ২২ রানে। লিটন বিদায় নেন সাত রানে। নিয়মিত বিরতি দিয়ে উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ। একপ্রান্ত আগলে রেখে লড়াই চালিয়ে যান নাজমুল হোসেন শান্ত।

ব্যাটিং অর্ডারের ঘানি টানার পাশাপাশি তুলে নেন ব্যক্তিগত ফিফটি। ৮২ বলে ৫৮ রানের ইনিংস খেলেন এবারের বিপিএলের সর্বোচ্চ স্কোরার। দ্বিতীয় দলীয় সর্বোচ্চ ৩১ রান করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এছাড়া মুশফিকুর রহিম ১৭, তাসকিন আহমেদ ১৪ ও তাইজুল ১০ রানে আউট হন। সাকিব আল হাসান ফেরেন আট রানে।

বাংলাদেশ অলআউট হয়েছে ইংল্যান্ডের সম্মিলিত বোলিং প্রচেষ্টায়। অতিথিদের ছয় বোলারই উইকেট পেয়েছেন। দুটি করে শিকার জফরা আর্চার, মার্ক উড, মইন আলি ও আদিল রশিদের। ব্যাটাররা পারেননি দলকে প্রত্যাশিত সংগ্রহ এনে দিতে। দল জেতানোর দায়িত্ব ছিল বোলারদের৷ তারা অবশ্য চেষ্টা ত্রুটি রাখেননি। ইংল্যান্ডের গভীর ব্যাটিং লাইনআপের বিরুদ্ধে ভালোই পরীক্ষা দিতে হয়েছে বোলারদের।