ফকল্যান্ড চুক্তি থেকে সরে এলো আর্জেন্টিনা

বিতর্কিত ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে সহযোগিতা চুক্তি থেকে সরে এসেছে আর্জেন্টিনা। দ্বীপপুঞ্জের সার্বভৌমত্ব নিয়ে লন্ডনের সাথে নতুন করে আলোচনার দাবি জানিয়েছে দেশটি। গতকাল বৃহস্পতিবার ভারতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সান্তিয়াগো ক্যাফিয়েরো যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লিভারলিকে চুক্তিটি প্রত্যাহারের কথা জানান। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জ

আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জি-২০ সম্মেলনের একটি বৈঠকে ক্যাফিয়েরো ফকল্যান্ড প্রশ্নে সার্বভৌমত্বের আলোচনা পুনরায় শুরু করার জন্য একটি প্রস্তাব প্রণয়ন করেন। প্রস্তাবে ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে জাতিসংঘে একটি মীমাংসা বৈঠক আয়োজনের জন্য যুক্তরাজ্যের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আর্জেন্টিনা।

ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জ আর্জেন্টিনার মূল ভূখণ্ড থেকে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার এবং যুক্তরাজ্য থেকে প্রায় ১২ হাজার ৯৮৫ কিলোমিটার দূরে আটলান্টিকে অবস্থিত। ১৯৮২ সালে দ্বীপপুঞ্জটি নিয়ে যুদ্ধ বাঁধে।

ক্যাফিয়েরোর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক টুইটে জানিয়েছেন, ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জ ব্রিটেনের অন্তর্ভুক্ত। নিজেদের ভবিষ্যৎ সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার আছে দ্বীপবাসীর। তারা দ্বীপপুঞ্জকে স্ব-শাসিত ইউকে ওভারসিজ টেরিটরি হিসেবে থাকতে বেছে নিয়েছে।

১৯৮২ সালে মালভিনাস যুদ্ধে মুখোমুখি হয় ব্রিটেন-আর্জেন্টিনা। যুদ্ধটি সংক্ষিপ্ত ছিল। আর্জেন্টাইন সেনা পাঠানোর পর যুদ্ধটি শুরু হয়েছিল। ব্রিটিশ বাহিনী আর্জেন্টাইন বাহিনীকে তাড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিল। ২০১৬ সালে উভয়পক্ষ দ্বীপপুঞ্জের সার্বভৌমত্বের বিষয়ে একমত হয়। জ্বালানি, শিপিং এবং মাছ ধরার মতো বিষয়গুলোতে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেয় দুপক্ষ।

চুক্তি প্রত্যাহারের ঘোষণা এমন সময় এলো, যখন ব্রিটেনের আমেরিকাবিষয়ক মন্ত্রী ডেভিড রুটলি একটি বৈঠকে অংশ নিতে বুয়েনস আইরেসে গেছেন। রুটলি এক টুইটে বলেন, চুক্তি থেকে আর্জেন্টিনার সরে যাওয়া হতাশাজনক। ১৯৮২ সালের যুদ্ধে নিহত আর্জেন্টাইনদের প্রতি সমবেদনা জানাতেই মূলত চুক্তিটি হয়েছিল। দুপক্ষ চুক্তির ফল লাভ করেছে।

গতবছর মালভিনাস যুদ্ধের ৪০তম বার্ষিকী পালন করেছে যুক্তরাজ্য ও আর্জেন্টিনা। যুদ্ধটি উভয় দেশের জন্য ছিল বেদনার। কারণ যুদ্ধে আর্জেন্টিনার ৬৪৯ ও যুক্তরাজ্যের ২৫০ সেনা এবং দ্বীপের তিনজন নারী নিহত হয়েছিলেন। ২০১৩ সালে ব্রিটিশ সরকার দ্বীপপুঞ্জে গণভোটের আয়োজন করে। তাতে ব্রিটেনের পক্ষে ভোট পড়ে ৯৯.৮ শতাংশ।