পাকিস্তানের লাহোরে নারী দিবসের সমাবেশ নিষিদ্ধ!

পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় শহর লাহোরে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে একটি সমাবেশের অনুমতি প্রত্যাখ্যান করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। পাকিস্তানের মতো রক্ষণশীল, পুরুষতান্ত্রিক দেশে নারীদের সমাবেশ করতে না দেওয়ার এই সিদ্ধান্তে অনেকেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

ফাইল ছবি

৩ মার্চ, শুক্রবার লাহোর শহরের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা বিতর্কিত ব্যানার, প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করে থাকে। এর ফলে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে। এই কারণে সমাবেশের অনুমতি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর এটি সমাবেশের আয়োজকদেরও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।  

‘আওরাত (নারী) মার্চ’ এর সমাবেশগুলোতে যেসব ব্যানার এবং প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করা হয়, তা নিয়ে অনেকেই আপত্তি জানিয়েছেন। এসব ব্যানারে বিবাহবিচ্ছেদ, যৌন হয়রানি এবং মাসিকের মতো বিষয়গুলোকে উত্থাপন করা হয়। পাকিস্তানের মতো রক্ষণশীল একটি দেশে অনেকেই এই বিষয়গুলো নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলাকে ভালোভাবে গ্রহণ করেন না। 

আওরাত মার্চের আয়োজক এবং অংশগ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে পাশ্চাত্যের উদারনৈতিক মূল্যবোধ প্রচার এবং ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সংবেদনশীলতাকে অসম্মান করার অভিযোগ রয়েছে। 

এ কারণেই নারী দিবসের মিছিল সমাবেশের প্রতিবাদে পাকিস্তানে ‘হায়া’ বা শালীনতা নামের সমাবেশ করা হয়। সাধারণত ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলো ইসলামি মূল্যবোধ সংরক্ষণের আহ্বান জানিয়ে এই সমাবেশগুলোর আয়োজন করে থাকে। 

আওরাত মার্চ লাহোরের একজন সংগঠক হিবা আকবর বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘এটি আমাদের অধিকারের লঙ্ঘন। এটি উভয় গোষ্ঠীর সমাবেশের অধিকার নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।'

প্রসঙ্গত, লাহোর কর্তৃপক্ষ আওরাত মার্চে নিষেধাজ্ঞা দিলেও হায়া মার্চের অনুমতি দিয়েছে।

পাকিস্তানে আওরাত মার্চ প্রায় সময়ই নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করা হয়। তবে এ সমাবেশের আয়োজকদের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে যেতে হয়। ২০১৮ সাল থেকে নারী দিবস উপলক্ষে নারীদের অধিকারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য সমগ্র পাকিস্তানের প্রধান শহরগুলোতে বিভিন্ন সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

সূত্র: এএফপি