নিজের কিছু নেই, তবু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন বৃদ্ধা

কাউকে সাহায্য করতে সবার প্রথমেই প্রয়োজন হয় বড় একটা মন- এ কথার প্রমাণ দিলেন বসনিয়ান এক দরিদ্র বৃদ্ধা। সহায় সম্বলহীন এই বৃদ্ধা এগিয়ে এসেছেন তুরস্কের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করার জন্য। এ কাজে নিজের মাসিক খরচের শেষ অংশটুকু তুলে দিয়েছেন তিনি। খবর আনাদোলু।

মিলকা গ্রেবেনার

খবরে বলা হয়, বসনিয়া-হার্জেগোভেনিয়ার রাজধানী সারাজেভোর বাসিন্দা মিলকা গ্রেবেনা, বয়স ৯০ পেরিয়েছে অনেক আগেই। তিনি স্থানীয় একটি মানবিক সংস্থার কাছ থেকে পাওয়া পেনশন এবং খাদ্য সহায়তায় চলে তার জীবনযাপন।

তার দেশের সঙ্গে ঐতিহাসিক সম্পর্ক রক্ষাকারী তুরস্কের বিপর্যয়ের কথা শোনে তিনি তার সামর্থ্য অনুযায়ী এগিয়ে এসেছেন। তুরস্কের জন্য সাহায্য সংগ্রহকারী ব্যক্তির কাছে ফেব্রুয়ারি মাসের পেনশনের অবশিষ্ট পাঁচ ইউরো এবং খাবার তুলে দিয়েছেন তিনি।

তুরস্কের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন

কয়েক বছর আগেই স্বামী হারান মিলকা গ্রেবেনার। তারপর থেকে এমন মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। একটি বেসরকারি সংস্থা থেকে দেওয়া পেনশন ও খাবার দিয়েই চলে তার মাস। কিন্তু তুরস্কের ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের কথা শুনে হাতে থাকা সবটুকু অর্থই দান করে দেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে তার সংগ্রহে থাকা খেলনাগুলোও ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের জন্য দিয়ে দিয়েছেন।

তিনি এ বিষয়ে বলেন, ভূমিকম্পে তুরস্কের আক্রান্ত এলাকাগুলোর ছবি দেখতে আমার ভয় লাগছিল। বিষয়টি আমার ভেতরে অনেক বড় প্রভাব ফেলে। আমি জানি আমার দানের পরিমাণ একেবারেই অল্প। কিন্তু এই সাহায্যই হয়ত কারও জন্য অনেক বড় বিষয় হতে পারে।

খেলনার ব্যাপারে আলাদাভাবে তিনি বলেন, যখন দেখলাম ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য খেলনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। তখন আমার কাছে যেসব খেলনা ছিল, আমি সেগুলো নিয়ে আসলাম। অনেকক্ষণ ধরে আমি সেগুলো দেখেছি। তারপর তুরস্কের শিশুদের জন্য দান করার সিদ্ধান্ত নেই। আমি খুবই খুশি। কারণ কেউ এই খেলনা নিয়ে খেলবে।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের ব্যাপারে তিনি মন্তব্য করেন, আমি মনে করি তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তার বক্তব্যগুলো আমি শুনেছি। আমি অনুভব করি, তিনি তার জনগণকে রক্ষার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

গত ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চল এবং সিরিয়ার উত্তরাঞ্চল ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে। এ পর্যন্ত এ ভূমিকম্পের জেরে দুই দেশে ৪৫ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় দেড় কোটি মানুষ।