ফায়ার সার্ভিস: যে কোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে ভবনটি

রাজধানীর গুলিস্তানে সিদ্দিকবাজার এলাকায় বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ভবনটি যে কোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে ফায়ার সার্ভিস। ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় আপাতত সেখানে উদ্ধার কাজ স্থগিত রয়েছে।

গুলিস্তানে সিদ্দিকবাজার এলাকায় বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ভবন

৭ মার্চ, মঙ্গলবার বিকেলে সিদ্দিকবাজারের নর্থ-সাউথ রোডের একটি সাততলা ভবনে এ বিস্ফোরণ হয়। এতে ওই ভবনের পাশের কয়েকটি ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের ভাষ্যমতে, যে কোনো সময় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি ভেঙে পড়তে পারে। ভবনের বিম ও কলাম ভেঙে পড়েছে। পাশে থাকা ব্র‍্যাক ব্যাংকের ভবনটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

উদ্ধার কাজে অংশ নেওয়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মী রাকিবুল জানান, ভবনটি এমনভাবে ধসে পড়েছে যে ভেতরে ঢোকা খুব কঠিন হয়ে যাচ্ছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভেতরে ঢুকতে হচ্ছে। প্রকৌশলীরা ভবনটি পর্যবেক্ষণ করছেন। তারা নিরাপদ মনে হলে উদ্ধার কাজ আবার শুরু হবে।

এ ঘটনায় নিহতের স্যংখ্যা বেড়ে ১৮ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন দুই শতাধিক মানুষ। মরদেহগুলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আনা হয়েছে।

নিহতদের মধ্যে ১৬ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে, তারা হলেন- ১. মো. সুমন (২১), পিতা- মমিন (শনাক্তকারী), ঠিকানা- ১নং সুরি টোলা, বংশাল, ঢাকা। গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মেঘনা থানা। ২. ইসহাক মৃধা (৩৫), পিতা- মৃত দুলাল মৃধা, ঠিকানা- কাজির হাট থানা, জেলা বরিশাল, গ্রাম চর সন্তোষপুর। থাকেন নারায়ণগঞ্জের ঢাকেশ্বরী ২নং রোড।

৩. মুনসুর হোসেন (৪০), পিতা- মোশাররফ হোসেন, ঠিকানা : যাত্রাবাড়ী (পশ্চিমপাড়া)। ৪. মো. ইসমাইল (৪২), পিতা- মৃত মো. হোসেন আলী। ঠিকানা- ৯৭, লুৎফর রহমান লেন, আলু বাজার। ৫. আল আমিন (২৩), পিতা- বিল্লাল হোসেন, ঠিকানা- পশ্চিম লালপুর, মতলব, চাঁদপুর। ৬. রাহাত (১৮), পিতা- জাহাঙ্গীর আলম, ঠিকানা- মাস্টার বাড়ি, দক্ষিণ চৈনকুটিয়া, কেরানীগঞ্জ।

৭. মমিনুল ইসলাম (৩৮), পিতা- আবুল হাসেম, ঠিকানা- ১১৫/৭/৫ ইসলাম বাগ, চক বাজার থানা। ৮. নদী বেগম (৩৬), স্বামী- মৃত মমিনুল ইসলাম, ঠিকানা- ১১৫/৭/৫ ইসলাম বাগ, চক বাজার থানা। ৯. মাঈন উদ্দিন (৫০), পিতা- মৃত ছমিরউদ্দিন আকন, ঠিকানা- গ্রাম সৈয়দপুর, জেলা মুন্সীগঞ্জ সদর।

১০. নাজমুল হোসেন (২৫), পিতা- ইউনুছ হোসেন, ঠিকানা- ৪৭নং কে পি ঘোষ স্ট্রিট, বংশাল। ১১. ওবায়দুল হাসান বাবুল (৫৫), পিতা- মৃত শেখ সাহেব আলী, ঠিকানা- চর বেউথা গ্রাম, মানিকগঞ্জ সদর। ১২. আবু জাফর সিদ্দিক (৩৪), পিতা- মৃত মোজাম্মেল হক। ঠিকানা- জেলা মুন্সীগঞ্জ, থানা- গজারিয়া, গ্রাম- বালুয়া কান্দি। ১৩. আকুতি বেগম (৭০), স্বামী- মৃত আনোয়ারুল ইসলাম, ঠিকানা- ১৮/১ আগামাসি লেন। বংশাল।

১৪. মো. ইদ্রিস মির (৬০), পিতা- মৃত কালাচান মির, ঠিকানা : মীর হাজারীবাগ, যাত্রাবাড়ী। ১৫. নুরুল ইসলাম ভূইয়া (৫৫), পিতা- মৃত আলি মোহাম্মদ ভূঁইয়া, ঠিকানা- মাতুয়াইল , যাত্রাবাড়ী, ঢাকা। ১৬. হৃদয় (২০), ঠিকানা- সিদ্দিক বাজার, জাবেদ গলি, থানা বংশাল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, বিস্ফোরণের ভয়াবহতা এত বেশি ছিল যে পাশের ভবনগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেঙে গেছে অনেক ভবনের কাঁচ। বিস্ফোরণের সময় বাসযাত্রী থেকে পথচারী সবাই আহত হয়েছেন।

বিস্ফোরণের কারণ এখনও জানা যায়নি। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এর আগে গত রোববার রাজধানীর ধানমন্ডিতে সায়েন্সল্যাব এলাকায় একটি ভবনে বিস্ফোরণে তিনজন নিহত হন। তার আগে গত শনিবার চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সীমা অক্সিজেন লিমিটেডে বিস্ফোরণ ও আগুন লেগে সাতজন নিহত হয়েছেন।