ক্রাইস্টচার্চে ৯ বার গুলিবিদ্ধ হয়েও বেঁচে থাকার এক বছর

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ মসজিদে গত বছরের ১৫ মার্চ ভয়াবহ বন্দুক হামলা হয়। নৃশংস ওই হামলায় ৯ বার গুলিবিদ্ধ হয়েও বেঁচে যাওয়া একজন হলেন টেমেল আতাকোকুগু। তিনি এখন ৫২ শতাংশ পঙ্গুত্ব নিয়ে টিকে আছেন পৃথিবীর আলো-বাতাসে। আনাদোলুর খবর।

ক্রাইস্ট চার্চে হামলার এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে

লিনউড ইসলামিক সেন্টারের আল নূর মসজিদে সেই হামলায় নিহত হন ৫১ জন। আহত হন ৪০ জনের বেশি। আতাকোকুগু আনাদোলুকে বলেন, আক্রমণের সময় তাকে ৯ বার গুলি করা হয়েছিল। বেঁচে থাকার জন্য তাকে এখনও লড়াই করতে হচ্ছে। তার মানসিক আঘাত কঠিন ছিল। চিকিৎসা এখনও চালিয়ে যেতে হচ্ছে তার।

আতাকোকুগু জীবনযাপনে মারাত্মক অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন। তবে তিনি সারা বিশ্বের মানুষের কাছ থেকে যে সমর্থন পেয়েছেন তার জন্য কৃতজ্ঞ। গণমাধ্যমে তিনি বলেন, আমার সহকর্মীদের সহমর্মিতায় কৃতজ্ঞ। তারা আমার প্রতি তাদের ভালোবাসা ও যত্ন উজাড় করে দিয়েছেন।

ক্রাইস্টচার্চ হামলার শিকার আতাকোকুগু এখন প্রতিদিনের জীবনে নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন। তিনি ট্রমা কাটিয়ে উঠতে আজও প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং উগ্রতা সৃষ্টিকারী যেকোনো মতাদর্শকে তিনি মন-প্রাণ থেকে ঘৃণা করেন।

আতাকোকুগুর বেঁচে থাকার আশা রয়েছে এবং তিনি মানুষের কাছে শান্তির বার্তা পৌঁছে দিতে চান। তিনি শান্তির সঙ্গে ঘৃণার জবাব দিতে চান। তার এই অটল প্রতিশ্রুতি অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে, বিশেষ করে সেদিন যারা হামলায় আহত হয়েছিলেন।

ক্রাইস্টচার্চ মসজিদে হামলা ছিল একটি ধ্বংসাত্মক ঘটনা, যা বিশ্বকে নাড়া দিয়েছিল। ওই ঘটনায় অতি-ডানপন্থী চরমপন্থার ক্রমবর্ধমান হুমকির বিষয়টি বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। সেক্ষেত্রে আতাকোগুর জীবনের গল্পটি অনুস্মারক হিসেবে কাজ করবে।

এই ধরনের ঘটনার প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি মানসিক সমর্থন ও পরিচর্যা প্রয়োজন। তিনি ভালো হয়ে ওঠার আশা ত্যাগ করেননি।

ওই হামলাটি করেছিল ২৮ বছর বয়সী অস্ট্রেলিয়ান শ্বেতাঙ্গ ব্রেন্টন ট্যারান্ট। ২০২০ সালে আদালতের রায়ে তাকে প্যারোলের সম্ভাবনা ছাড়াই যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। নিউজিল্যান্ডে রায়টি ছিল এই ধরনের প্রথম কোনো বিচারিক আদেশ।