ওজিলের রিয়াল ছাড়ার গল্প

ফুটবল হারিয়েছে দুর্দান্ত এক জাদুকর মেসুত ওজিলকে। আন্তর্জাতিক ফুটবলের পর সম্প্রতি ক্লাব ফুটবল থেকেও অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন তুর্কি বংশোদ্ভুত জার্মান মিডফিল্ডার। মূলত ইনজুরি আর বয়সের কারণেই থেমে যেতে হয়েছে তাকে। তবু ক্যারিয়ারটা যতটুকু হয়েছে তাতে গর্বিত ওজিল। কারণ ফুটবল তাকে অনেককিছুই দিয়েছে।

ফুটবল হারিয়েছে দুর্দান্ত এক জাদুকর মেসুত ওজিলকে

২০১৪ সালে জার্মানির হয়ে বিশ্বকাপ জিতেছেন ওজিল। জাতীয় দল তো বটেই, ক্লাব ফুটবলেও সফল ছিলেন তিনি। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন বিশ্বসেরা মিডফিল্ডারদের একজন হিসেবে। ক্লাব ফুটবলে তার সবচেয়ে বেশি সময় কেটেছে আর্সেনালে। তবে ওজিলকে বিশ্ব চিনেছে রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে খেলাকালীন। রিয়ালে তিন বছর ছিলেন তিনি।

এই অল্প সময়েই ক্লাবটিকে ভালোবেসে ফেলেছিলেন ওজিল। সেই ভালোবাসার গভীরতা এতটাই ছিল যে, রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে যাওয়াটা সহজ ছিল না তার জন্য। মাদ্রিদ ছাড়ার সময় কেঁদে ফেলেছিলেন তিনি। শুক্রবার রাতে স্প্যানিশ ক্রীড়া দৈনিক মার্কায় প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন ১১৪টি গোল ও ২২২টি অ্যাসিস্ট করা ওজিল।

ওজিল বলেছেন, ‘খুব খারাপ লাগছিল যখন আমি মাদ্রিদের বিমানবন্দর ছেড়ে যাচ্ছিলাম। যখন বিমানের আসনে বসেছিলাম তখন আমার চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরেছিল। ওই মুহূর্তে বুঝতে পেরেছিলাম এটা (রিয়াল মাদ্রিদ অধ্যায়) শেষ হয়ে গেছে।’ ওজিলের রিয়াল ছাড়ার সময় ভক্তরা খুব আফসোস করেছিলেন। হতাশ হয়েছিলেন অনেকেই।

কেন রিয়াল ছাড়তে হলো তাকে? উত্তরটা ওজিল দিলেন মার্কাকে, ‘এই (মাদ্রিদ) শহরের ক্লাবে আনন্দের সঙ্গে আমার তিনটি বছর কেটেছে। যদিও আমি খুব বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাইনি। জনাব (ফ্লোরেন্তিনো) পেরেজের (রিয়াল মাদ্রিদ প্রেসিডেন্ট) সঙ্গে ঝামেলা হওয়ার পর আমার বাবা এবং এজেন্ট নতুন ক্লাবের খোঁজ করেন। আমি আর্সেনালে চলে যাই।’

মূলত ওজিল নয়, পেরেজের সঙ্গে ঝামেলা হয়েছিল তার বাবার। তখনই রিয়াল মাদ্রিদে নিজের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত ছিলেন ৩৪ বছর বয়সী এই তারকা। শেষ পর্যন্ত ক্লাব ছাড়তে হয়েছে তাকে। চাইলে বাবা ও পেরেজের বিবাদ মিটিয়ে রিয়ালেই থেকে যেতে পারতেন ওজিল। কিন্তু প্রধান কোচ হোসে মরিনহো-ও ততদিনে রিয়াল ছেড়ে গেছেন।

পর্তুগিজ এই কোচই মাদ্রিদে এনেছিলেন ওজিলকে। ওই সময় বার্সেলোনাও ঘুরে দেখেন তিনি। ওজিল চেয়েছিলেন তৎকালীন বার্সা কোচ পেপ গার্দিওলার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার। কিন্তু ওজিলকে কোনো সময় দেননি স্প্যানিশ কোচ। পরে মরিনহোর আগ্রহে মুগ্ধ হয়ে রিয়ালের চুক্তিপত্রে সই করেন তুর্কি বংশোদ্ভুত এই কিংবদন্তি মিডফিল্ডার।

অনেক খেলোয়াড়ই বুট জোড়া তুলে রাখার পর ফুটবলেই থেকে যান। কোচ, সংগঠক কিংবা এজেন্ট হিসেবে কাজ করতে দেখা যায় তাদের। আপাতত এমন ভাবনা নেই ওজিলের। স্ত্রী এবং দুই কন্যাসন্তানকে নিয়ে ফুটবল থেকে নির্বাসন শুরু হচ্ছে তার। সেটি অবশ্য জার্মানিতে নয়; তুরস্ককে। সবশেষ তুর্কি দুই ক্লাব ইস্তাম্বুল ও ফেনারব্যাচে খেলেছিলেন তিনি।