কলকাতার ভরসা হতে পারবেনতো সাকিব-লিটনরা?

মাঠের লড়াইয়ে নামার আগে বড় ধাক্কা খেলো কলকাতা নাইট রাইডার্স। ইনজুরির কবলে পড়েছেন দলটির নিয়মিত অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার। কবে নাগাদ মাঠে ফিরতে পারবেন তাও নিশ্চিত নয়। তার স্থলাভিষিক্ত কে হবেন সেটা নিয়ে ছিল জল্পনা। অবশেষে দলটির নেতৃত্বভার তুলে দেওয়া হয়েছে নিতিশ রানার কাঁধে।

কলকাতা নাইট রাইডার্স

অধিনায়ক হওয়ার দৌড়ে এর আগে শোনা গিয়েছিল সাকিব আল হাসান ও লিটন দাসের নাম। যদিও এনওসি জটিলতা ছিল দুজনের সামনে। তাদেরকে পুরো মৌসুম পাবে কিনা সেটা নিয়েই ছিল দুঃশ্চিন্তা। অবশেষে উদ্বেগের অবসন ঘটল। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) থেকে তাদের এনওসি দেওয়া হয়েছে। তাই পুরো মৌসুমজুড়ে তাদেরকে দেখা যাবে নাইটদের শিবিরে।

২০১২ ও ২০১৪ সালে শিরোপা জিতেছিল শাহরুখ খানের কলকাতা। ছয় বছর পর ২০২১ মৌসুমে ফাইনাল খেলে দলটি। তবে তৃতীয় শিরোপা পাওয়া হয়নি। ধোনির চেন্নাই সুপার কিংসের কাছে পরাজয় মানতে হয়েছে।

দুইবারের চ্যাম্পিয়ন দলে ছিলেন সাকিব। কলকাতাকে শিরোপা জেতাতে বড় ভূমিকা রাখেন বাংলাদেশি অলরাউন্ডার। ২০১২ সালে ৬.৫ ইকোনোমি রেটে ১২ উইকেট পেয়েছিলেন সাকিব। ব্যাট হাতে তেমন একটা সুযোগ পাননি, ১২২ স্ট্রাইক রেটে করেন ৯১ রান।

২০১৪ সালের আইপিএলে ব্যাটে-বলে আরও দুর্দান্ত ছিলেন সাকিব। সেবার ব্যাট হাতে ১৪৯ স্ট্রাইক রেটে ২২৭ রানের পাশাপাশি বল হাতে নেন ১১ উইকেট। ইকোনোমি রেট ছিল ৬.৬৮। রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে সর্বোচ্চ ৩৮ বলে ৬০ রান করে ম্যাচ জেতানো ইনিংস আছে এই অলরাউন্ডারের।

২০২২ সালের মেগা আইপিএল নিলামে দল পাননি সাকিব। এক বছর বিরতির পর এবার পুরোনো দলে ফিরেছেন তিনি। সে সঙ্গে প্রথমবার আইপিএলে কলকাতার হয়ে মাঠ মাতাতে দেখা যেতে পারে লিটনকে। তাই বাংলাদেশিদের আগ্রহের কেন্দ্রে থাকবে ওপার বাংলার দলটি। দেশীয় দর্শকদের চাওয়া থাকবে- কলকাতার ভরসা হয়ে উঠুক সাকিব-লিটনরা।

বড় তারকা

কলকাতায় আহামরি বড় কোনো তারকা ক্রিকেটারকে হয়ত দেখা যাবে না। যারা আছেন সবাই টি-টোয়েন্টিতে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে যথেষ্ট। বিশেষ করে দলটিতে শুরু থেকেই খেলে আসছেন সুনিল নারাইন এবং অ্যান্দ্রে রাসেল। তাদের ওপর চোখ থাকবে সবার। এ ছাড়া সাকিব তাদের অন্যতম বড় তারকা। বল ও ব্যাট হাতে দলের জয়ে অবদান রাখতে পারেন ৩৬ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার।

শক্তিমত্তা

দলে একঝাঁক অলরাউন্ডারের ছড়াছড়ি কলকাতার বড় শক্তি। সাকিব, নারাইন, রাসেলদের সঙ্গে ডেভিড ভিয়া এবং ভেঙ্কটেশ আইয়াররা দলে সুযোগ পেলে জ্বলে উঠতে পারেন।

ব্যাটিংয়ে লিটন দাস হতে পারেন তাদের উইকেটরক্ষক ব্যাটার। ইনিংস উদ্বোধন করতে তিনি সঙ্গী হতে পারেন নারাইনের। তাছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে ফর্মের তুঙ্গে থাকা এই ব্যাটার ব্যাটিংয়ে বড় ভরসার নাম হতে পারেন নাইটদের। তবে লিটনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হতে পারে আফগানিস্তানের উইকেটরক্ষক ব্যাটার রহমানুল্লাহ গুরবাজের সঙ্গে।

দুর্বলতা

আগেই জানা গেছে ইনজুরির কারণে দলের নিয়মিত অধিনায়ক আইয়ারকে পাচ্ছে না কলকাতা। যিনি দলটির অন্যতম সেরা ব্যাটারও। তাই তার জায়গাতে বড় একটা ঘাটতি দেখা দিতে পারে।

দলের কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালামের কপালে চিন্তার ভাজ ফেলতে পারে ফার্গুসনের ইনজুরি। দলে অভিজ্ঞ পেসার আছেন আরেক কিউই পেসার টিম সাউদি। টি-টোয়েন্টিতে তার ওপর কতটা ভরসা করবে কলকাতার টিম ম্যানেজমেন্ট সেটা বড় প্রশ্নই বটে।

পেস বোলিংয়ে নেতৃত্ব দেবেন ভারতীয় দল থেকে বাদ পড়া উমেশ যাদব। তার সঙ্গে জুটি বাঁধবেন বরুন চক্রবর্তী। তাই পেস অ্যাটাক বড় দুঃশ্চিন্তার কারণ হতে পারে কলকাতার। যদিও শোনা গেছে এই সমস্যা সমাধানে তারা বাংলাদেশের তাসকিন আহমেদকে চেয়েছে। যদিও এটা নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য আসেনি বিসিবি থেকে।

কলকাতা দল

ব্যাটার: নিতিশ রানা, লিটন দাস (উইকেটরক্ষক), নারায়ণ জগদিসান, রহমানুল্লাহ গুরবাজ, রিংকু সিং, শ্রেয়াস আইয়ার।

অলরাউন্ডার: ভেঙ্কটেশ আইয়ার, মানদ্বিপ সিং, সাকিব আল হাসান, সুনিল নারাইন, অনুকুল রয়, অ্যান্দ্রে রাসেল, ডেভিড ভিসা।

বোলার: ভৈবব অরোরা, লকি ফার্গুসন, হারসিত রানা, কুলয়ান্ত খেজরোলিয়া, টিম সাউদি, সুয়াশ শর্মা, শার্দুল ঠাকুর, বরুন চক্রবর্তী, উমেশ যাদব।