১৭ বছর ধরে এক টাকায় ইফতার বিক্রি

রমজানজুড়ে এক টাকায় ইফতার বিক্রি করছেন খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশার ইকবাল হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের মালিক ইকবাল হোসেন মোল্লা। অসহায়-দরিদ্র মানুষরা যেন এ ইফতারিকে করুণা বা দান মনে না করেন সেজন্য ইফতারির মূল্য নেন ‘এক টাকা’। ১৭ বছর ধরে তিনি এভাবে ইফতার বিতরণ করে আসছেন।

১৭ বছর ধরে এক টাকায় ইফতার

ইফতারের আইটেম আলুর চপ, পেঁয়াজু, বেগুনি, কাঁচা ঝালের চপ প্রতি পিস মাত্র এক টাকা করে বিক্রি করেন ইকবাল হোসেন। প্রতিদিন এই ইফতার কিনতে ভিড় করেন এলাকার অসহায়-দরিদ্র মানুষেরা।

১১ এপ্রিল, মঙ্গলবার ইকবাল হোসেন বলেন, ১৭ বছর ধরে রমজান মাসে এক টাকায় ইফতার আইটেম বিক্রি করে থাকি। কিন্তু এবার দ্রব্যমূলের দাম যেভাবে বেড়েছে, তাতে ভেবেছিলাম এক টাকা করে ইফতার আইটেম বিক্রি করতে পারব না। কিন্তু আমার বন্ধুদের সহযোগিতায় এবারও অসহায়দের মাঝে ইফতার আইটেম তুলে দিতে পারছি।

তিনি বলেন, এখানে প্রতিদিন প্রায় সাত হাজার পিস আলুর চপ, পেঁয়াজু, বেগুনি ও কাঁচা ঝালের চপ তৈরি হয়। দুপুর ২টা থেকে বিক্রি শুরু হয়। ৫টার মধ্যে সব শেষ হয়ে যায়।

ইকবাল হোসেন আরও বলেন, আমি একজন চা বিক্রেতা। সারা বছর চা বিক্রি করে সংসার চালাই। কিন্তু রমজান মাসে সাধারণ মানুষ বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত তথা শ্রমজীবী মানুষের ইফতারি কিনতে যাতে হিমশিম খেতে না হয় সেজন্যই তিনি এ উদ্যোগ নেন।

স্থানীয় স্কুলশিক্ষক মাসুম বিল্লাহ বলেন, এখান থেকে আমিও কয়েকদিন ইফতার কিনেছি। ইফতারির মান খুব ভালো। এমন নয় যে, এক টাকায় দেওয়া হয় বলে মান খারাপ হবে। এছাড়া আইটেমগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নভাবে রাখা হয়। সবচেয়ে বড় কথা হলো সবাই যখন প্রতি আইটেম ৫ থেকে ১০ টাকা করে বিক্রি করে সেখানে ইকবাল হোসেন বিক্রি করেন মাত্র এক টাকায়। এতে নিম্ন আয়ের মানুষেরা সহজে ইফতার কিনতে পারছেন।

ফুড ব্লগিং পেজ ফুড স্টুডিও-এর গোপাল কর্মকার বলেন, তারা ৮ থেকে ৯ জন বন্ধু মিলে রমজানে এ আয়োজন করেন। তাদের এক বন্ধু আছেন যার নাম শিবু, তিনি এই সময় ট্রাক চালানো বন্ধ রাখেন, যাতে ইফতারি বিক্রিতে সাহায্য করতে পারেন। তাদের মূল উদ্দেশ্য হলো মানুষকে কম মূল্যে ইফতার করানো।