উত্তর কোরিয়ার নতুন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র, উদ্বিগ্ন জাপান

উত্তর কোরিয়া বৃহস্পতিবার সকালে ‘নতুন ধরনের’ একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছে। কোরীয় উপদ্বীপ এবং জাপানের মধ্যবর্তী অঞ্চলে এটি আছড়ে পড়ে। উত্তর কোরিয়ার এমন পদক্ষেপের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে জাপান। খবর আল জাজিরা।

উত্তর কোরিয়ার মিসাইল ছোড়ার নিউজ দেখছে দক্ষিণ কোরিয়ার লোকজন

দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ (জেসিএস) জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ২৩ মিনিটে রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ের কাছে থেকে উত্তর কোরিয়া ক্ষেপণাস্ত্রটি উৎক্ষেপণ করে। ক্ষেপণাস্ত্রটি মধ্যবর্তী পাল্লা বা তার বেশি হতে পারে বলে ধারণা করছে জেসিএস। দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের বিষয়টির তদন্ত করছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার একজন সামরিক বলেছেন, সম্প্রতি সামরিক কুচকাওয়াজে একটি নতুন ধরনের অস্ত্র প্রদর্শন করেছে উত্তর কোরিয়া। এতে কঠিন-জ্বালানি ব্যবহার করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। সলিড ফুয়েল প্রযুক্তি রকেটকে তরল-জ্বালানিযুক্ত রকেটের চেয়ে সহজে পরিবহন এবং দ্রুত উৎক্ষেপণ যোগ্য করে তোলে। জেসিএস মনে করছে, পিয়ংইয়ং এই ক্ষেপণাস্ত্রেরই পরীক্ষা চালিয়েছে।

এই ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে

বৃহস্পতিবারের এই ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের পর সিউলের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ একটি জরুরি বৈঠকে বসে। এতে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার নিন্দা করা হয়।

জাপান বলছে, সাগরে আছড়ে পড়ার আগে ক্ষেপণাস্ত্রটি কোরিয়ান উপদ্বীপ এবং জাপানের মধ্যবর্তী অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রায় এক হাজার কি.মি (৬২১ মাইল) উড়ে যায়। তবে তাৎক্ষণিকভাবে এর সুনির্দিষ্ট অবতরণের অবস্থান সম্পর্কে জানা যায়নি।

জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, পিয়ংইয়ংয়ের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ‘কড়া প্রতিবাদ’ জানিয়েছে টোকিও।

গত এক সপ্তাহ ধরে হটলাইনে দক্ষিণ কোরিয়ার কোনো ধরনের কলে সাড়া দিচ্ছে না উত্তর কোরিয়া। এ বিষয়ে সিউলের ইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লেইফ-এরিক ইজলি মন্তব্য করেন, উপদ্বীপের পরিস্থিতি ক্রমশ অনিশ্চিত হয়ে উঠছে। উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে ফোনের উত্তর না দেওয়ার অর্থ হচ্ছে হটলাইন সংযোগ এবং কূটনীতির ঝুঁকি বেড়েছে।

২০২২ সালে রেকর্ড সংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। এ বছরও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। এ ধারা অব্যাহত রেখেছে পিয়ংইয়ং। উত্তর কোরিয়াকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন সময় দেশটির আশপাশে নানা ধরনের যৌথ মহড়া চালিয়েছে। তবে এতে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণে কোনো ব্যাঘাত ঘটেনি। বরং তা আগের তুলনায় বেড়েছে।

২০১৯ সাল থেকে কিম এবং তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে দ্বিতীয় হাই-প্রোফাইল শীর্ষ বৈঠক নস্যাৎ হয়ে যাওয়ার পর থেকে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ আলোচনা স্থবির হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি হোয়াইট হাউস উত্তর কোরিয়াকে আলোচনার টেবিলে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, কূটনীতির দরজা বন্ধ হয়নি, তবে এ জন্য পিয়ংইয়ংকে অবিলম্বে তার অস্থিতিশীল কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে হবে।