অপেক্ষা ফুরাচ্ছে নাপোলির, না থেকেও আছেন ম্যারাডোনা

এখন আর নাপোলির হয়ে মাঠ মাতান না দিয়েগো ম্যারাডোনা। কিংবা কোচিং প্যানেলেও নেই এই কিংবদন্তি ফুটবলার। নেই ম্যানেজম্যান্টের দায়িত্বেও। কারণটাও যে খুবই স্বাভাবিক। সবাইকে কাঁদিয়ে ২০২০ সালের নভেম্বরে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন আর্জেন্টিনাকে ১৮৮৬ সালের সোনালী ট্রফি এনে দেওয়া এই ফুটবলার।

আর্জেন্টাইন কিংবদন্তিকে ঘিরে নেপলসে সাজ সাজ রব

এতোকিছুর পরও কেন নাপোলিকে ম্যারাডোনার ক্লাব বলা হচ্ছে! এই কারণটাও বোধহয় কারও অজানা নয়। প্রয়াত এই ফুটবলারের হাত ধরেই যে ১৯৮৭ সালে প্রথমবারের মতো ইতালিয়ান সিরিএ’র শিরোপা ঘরে তুলেছিল নাপোলি। নিজেদের ক্লাব ক্যারিয়ারে এরপর আর একবার মাত্র ইতালির শীর্ষ লিগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বাদ পেয়েছে নেপলসের প্রতিনিধিরা।

সেটা ১৯৯০ সালে। সেবারও নাপোলির শিরোপা জয়ের রূপকার ছিলেন ম্যারাডোনা। এরপর প্রায় ৩৩ বছর গত হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে একবারও সিরিএ’র শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পরা হয়নি নাপোলির। অবশেষে চলমান মৌসুমে দীর্ঘ অপেক্ষা শেষ হতে যাচ্ছে ম্যারাডোনার সাবেক ক্লাবের। নিজেদের ইতিহাসে তৃতীয়বারের মতো ইতালিয়ান সিরিএ’র শিরোপা জেতার খুব কাছে অবস্থান করছে নাপোলি।

ইতিহাসের সাক্ষী হওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করা যাবে না। তাই ম্যারাডোনার জার্সি পরে এসেছে এই খুদে ভক্ত

টেবিলের চূড়ায় থাকা নাপোলির সংগ্রহ ৭৮ পয়েন্ট। দুই নম্বরে অবস্থান করছে লাজিও। রোববার বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে মাঠে নামবে লাজিও। আসন্ন ম্যাচে সান সিরোর দলের সঙ্গে ড্র করলে লাজিও’র পয়েন্ট হবে ৬২। এরপর সন্ধ্যা ৭টায় নাপোলির প্রতিপক্ষ সালেরনিতানা। ম্যাচটি জিতলে দলটির সংগ্রহ বেড়ে বাড়াবে ৮১ পয়েন্ট।

বাকি ছয় ম্যাচের প্রতিটাইতেই জয় তুলে নিলেও ১৯ পয়েন্টের ব্যবধান ঘুচাতে পারবে না লাজিও। তাই সালেরনিতানার বিপক্ষে ম্যাচকে ঘিরেই উৎসবের আমেজ শুরু হয়েছে নেপলসে। শহরজুড়ে বয়ে যাচ্ছে খুশির জোয়ার। সে জোয়ারে সামিল হচ্ছেন সকল শ্রেণি পেশার মানুষ।

চলমান মৌসুমে প্রায়ই এমন মুহূর্ত এসেছে নাপোলি শিবিরে। এবার শিরোপা জয়ের পালা ভিক্টর ওশিমেনদের

দিয়েগো আরমান্দো ম্যারাডোনা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিতব্য নিজেদের ম্যাচকে সামনে রেখে বেড়ে গেছে নাপোলির জার্সি বিক্রি। প্রিয় দলের জার্সি কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন সমর্থকরা। ইতালির দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত শহরটির বেশিরভাগ বাড়িতে শোভা পাচ্ছে প্রিয় ক্লাবের পতাকা। নাপোলির সমর্থকদের এমন আনন্দঘন মুহূর্তে না থেকেও যেন সব জায়গায় আছেন ম্যারাডোনা।

আরও একটি শিরোপা জয়ের খুব কাছে এসে ফুটবল জাদুকরকে ভুলে যায়নি নেপলস বাসী। তার প্রমাণ দিনের আলোর মতোই স্পষ্ট। শহরের বিভিন্ন রাস্তা, মোড় ও দেয়ালে আবেগ নিয়ে আঁকা হয়েছে ম্যারাডোনার ছবি। শুধু তাই নয়, নাপোলির বর্তমান খেলোয়াড়দের সঙ্গেও ম্যারাডোনার প্রতিকৃতি বসানো হয়েছে। উদ্দেশ্য একটাই, স্মরণীয় মুহূর্তেও যেন পাশে রাখা যায় বিশ্বকাপ জয়ী ফুটবলারকে।