মে দিবসে ফ্রান্সজুড়ে বিক্ষোভ, আটক ২৯১

মে দিবসে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোনের পেনশন সংস্কারের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে লাখ লাখ মানুষ বিক্ষোভ করেছে। নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় ২৯১ জনকে আটক করা হয়েছে। আহত হয়েছেন ১০৮ পুলিশ সদস্য। এএফপি, টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

বিক্ষোভকারীদের দমনে পুলিশের অ্যাকশন

দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড দারমানিন সাংবাদিকদের বলেছেন, শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিলের সময় বেশ কয়েকটি শহরে সহিংসতার সূত্রপাত হয়।

খবরে বলা হচ্ছে, প্যারিসে কট্টরপন্থী বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ওপর হামলা করে এবং ব্যাংক ও এস্টেট এজেন্টদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর চালায়। নিরাপত্তা বাহিনী টিয়ার গ্যাস ও জলকামান দিয়ে প্রতিক্রিয়া জানায়। বার্তা সংস্থা এএফপি এসব তথ্য জানিয়েছে।

শ্রমিক ইউনিয়নগুলো মে দিবসের বিক্ষোভের জন্য ফ্রান্সজুড়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে। বিক্ষোভটি এমন সময় হলো যখন ম্যাক্রোন তার ম্যান্ডেট পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছেন। বিক্ষোভকারীরা ম্যাক্রোনের বিরুদ্ধে নানা ঘৃণামূলক স্লোগান দেয়।

পেনশন সংস্কার বিলের বিরুদ্ধে কয়েক মাস ধরে বিক্ষোভ সত্ত্বেও গত মাসে ম্যাক্রোন অবসরের বয়স ৬২ থেকে ৬৪তে উন্নীত করার জন্য একটি আইনে স্বাক্ষর করেছিলেন।

পুলিশ বিক্ষোভটি শেষ পর্যায়ে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করেছিল, তখন বিক্ষোভকারীরা ভবনে আগুন লাগিয়ে দেয় এবং তা শহরে ছড়িয়ে পড়ে। পরে ফায়ার সার্ভিস আগুন নেভাতে জোর তৎপরতা চালায় । এ সময় পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে।

প্যারিসের একটি আদালত অধিকার গোষ্ঠীগুলোর অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে পুলিশকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা হিসেবে ড্রোন ব্যবহারের অনুমতি দেয়। বিক্ষোভ চলাকালীন উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায় দক্ষিণ ফ্রান্সের টুলুসে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ছোড়ে। দক্ষিণ-পূর্ব শহর লিয়নে চারটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে।

এএফপি জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরাদের ছত্রভঙ্গ করতে পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর নান্তেসেও পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানিন টুইটারে বলেন, বেশিরভাগ বিক্ষোভকারী শান্তিপূর্ণ ছিল। বিশেষ করে প্যারিস, লিয়ন এবং নান্টেসে পুলিশ অত্যন্ত কঠোর হয়। কারণ বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে আক্রমণ চালিয়েছিল।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বিক্ষোভকারীরা দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর মার্সেইয়ের বিলাসবহুল ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল অল্প সময়ের জন্য দখল করে নেয়। এবারের মে দিবসে ফ্রান্সজুড়ে প্রায় ৭ লাখ ৮২ হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছে। তাদের মধ্যে প্যারিসেই ১ লাখ ১২ হাজার জন বিক্ষোভে নামে।