অগ্নিগর্ভ মণিপুরে ‘দেখামাত্র গুলি’র নির্দেশ

ভারতের মণিপুর রাজ্যে চলমান সহিংস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রয়োজনে ‘দেখামাত্র গুলি’র নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মণিপুরের রাজ্যপাল অনুসূয়া উইকে এ নির্দেশ জারি করেন। খবর দ্য হিন্দু ও হিন্দুস্তান টাইমস।

জ্বলছে মণিপুর

বিভিন্ন জেলার শাসক, মহকুমা শাসক এবং কার্যনির্বাহী শাসককে দেওয়া রাজ্যপালের নির্দেশে বলা হয়, বিক্ষোভকারীদের শান্ত করার চেষ্টা, সতর্কতা এবং পরিমিত শক্তি প্রয়োগের পরও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হলে ম্যাজিস্ট্রেটরা গুলির নির্দেশ দিতে পারবেন। সহিংসতাপ্রবণ এলাকাগুলোতে ইন্টারনেট, গণজমায়েত ও যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।

মণিপুরের সমতলের বাসিন্দা মেইতেই সম্প্রদায়ের সঙ্গে কুকি ও নাগা জনগোষ্ঠীর নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠীর বিরোধ চলছে দীর্ঘদিন ধরে। মেইতেই সম্প্রদায় অনেকদিন ধরে তফসিলি উপজাতিদের তালিকাভুক্ত হওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় তারা কিছুদিন আগে হাইকোর্টে তফসিলি উপজাতি হিসেবে স্বীকৃতি চেয়ে আবেদন জানায়। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গত ১৪ এপ্রিল রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। এরপর থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মণিপুরের পার্বত্য অঞ্চল।

সহিংস এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে লোকজনকে

মেইতেইদেরকে আদিবাসী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টার প্রতিবাদে গত বুধবার মণিপুরের অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়নের পক্ষ থেকে আদিবাসী ঐক্য মিছিলের ডাক দেওয়া হয়। হাজার হাজার মানুষ ওই কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিল। এর পরপরই নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মণিপুর।

এ অবস্থায় সেখানে সহিংসতা দমনে সেনাবাহিনী ও আসাম রাইফেলের সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে দাঙ্গা মোকাবেলার গড়ে তোলা বিশেষ বাহিনী, র‌্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স (আরএএফ) সদস্যদেরও মোতায়েন করা হয়েছে।

মণিপুরের রাজধানী ইমফলের কিছু অংশে গতকাল বৃহস্পতিবার ব্যাপক সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে। এসব এলাকায় অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের মতো ঘটনা ঘটছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এরইমধ্যে মেইতি-অধ্যুষিত ইম্ফল পশ্চিম, কাকচিং, থৌবাল, জিরিবাম এবং বিষ্ণুপুর জেলা এবং উপজাতি অধ্যুষিত চুরাচাঁদপুর, কাংপোকপি এবং টেংনোপাল জেলায় কারফিউ জারি করা হয়েছে। এসব এলাকার প্রায় ৯ হাজার মানুষকে উদ্ধার করা করে সেনা ক্যাম্প ও বিভিন্ন সরকারি অফিস চত্বরে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।