থাইল্যান্ডে জাতীয় নির্বাচন: অপ্রতিরোধ্য থাকসিনকন্যা পেতংতার্ন

থাইল্যান্ডে আগামী রোববার (১৪ মে) জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। শেষ মুহূর্তের প্রচারে সরগরম দেশটির আনাচ-কানাচ। সমানতালে প্রচার চালাচ্ছে দেশটির অন্যতম রাজনৈতিক দল ফিউ থাই পার্টি। আসন্ন নির্বাচনে সবার থেকে অগ্রগামী দলটির নেতৃত্বে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার ছোটকন্যা পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা, যাকে মনে করা হচ্ছে অপ্রতিরোধ্য। সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সেনাবাহিনীর হাতে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে নির্বাসনে রয়েছেন।

থাকসিন সিনাওয়াত্রার রাজনীতির হাল ধরেছেন ছোটকন্যা পেতংতার্ন

এক দশকের বেশি সময় ধরে সেনাশাসনে চলছে থাইল্যান্ড। রাজনীতিতে থাবা বসিয়ে সেনাবাহিনী দেশটির সংবিধানকে বদলে দিয়েছে, সেনা সরকারবিরোধী আন্দোলন কঠোরহাতে দমন করেছে। বারবার নির্বাচনে জয়ী রাজনৈতিক সরকারকে উৎখাত করে নির্বাসনে যেতে বাধ্য করেছে দলের নেতাদের।

রাজনৈতিক এমন পরিস্থিতির মধ্যেই রোববারের জাতীয় নির্বাচনে ফিউ থাই পার্টির নেতৃত্ব কাধে নিয়ে ছুটছেন থাকসিন সিনাওয়াত্রার মেয়ে পেতংতার্ন।

থাইল্যান্ডের জাতীয় নির্বাচনে থাকসিনকন্যা পেতংতার্নের জয়-জয়কার শোনা যাচ্ছে

১৯৮৮ সালে প্রথম ‘থাই রাক থাই’ নামে রাজনৈতিক দলের যাত্রা শুরু হয় দেশটির টেলিকম টাইকুন থাকসিন সিনাওয়াত্রার হাত ধরে। ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসেন সিনাওয়াত্রা।

তবে ২০০৬ সালেই সেনাবাহিনীর হাতে ক্ষমতাচ্যুত হন থাকসিন। তার দল থাই রাক থাইকেও বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় কারাবন্দি এড়াতে র্নিবাসনে থাকেন থাকসিন।

এরপর ২০০৮ সালে থাকসিন-সমর্থিতরা একটি উত্তরাধিকারী দল হিসেবে পিপলস পাওয়ার পার্টি চালু করলে এই দলটিকেও বিলুপ্ত ঘোষণা করে সেনা আদালত। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠিত হয় ফিউ থাই পার্টি।

২০১১ সালের জাতীয় নির্বাচনে ফিউ থাই পার্টি বিপুল ভোটে বিজয়ী হলে প্রধানমন্ত্রী হন থাকসিনের বোন ইংলাক সিনাওয়াত্রা। একপর্যায়ে তাকেও অভ্যূত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করে সেনাবাহিনী। নির্বাসনে যেতে হয় ইংলাককেও।

সর্বশেষ ২০১৯ সালের নির্বাচনে ফিউ থাই পার্টি ভোটে বিজয়ী হলেও দলটিকে সরকার গঠন কেরতে দেওয়া হয়নি।

থাকসিনের পার্টি বা তার দলকে এভাবে গত ১৭ বছর ধরে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও সেটি পারেনি সেনাবাহিনী।

তুমুল জনপ্রিয়তা নিয়ে এবার মাঠে রয়েছেন থাকসিনের কন্যা পেতংতার্ন।

৩৬ বছরের এই নারী গত সপ্তাহে মা হয়েছেন। এ জন্য প্রচারে কিছুটা বিরতি নিলেও সমান সহানুভূতি নিয়ে ফিরে এসেছেন নির্বাচনী প্রচারে।

পেতংতার্ন বলেন, আমি মনে করি দেশের মানুষ কল্যাণের রাজনীতি চায়, দেশের জন্য অভ্যুত্থান নয়, ভালো সমাধান চায়। জনগণ এমন নীতি খুঁজছে যা তাদের জীবনকে সাহায্য করবে।

বিবিসি অবলম্বনে।