তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: গড়াচ্ছে দ্বিতীয় রাউন্ডে, তবে এগিয়ে এরদোয়ানই

পুরো বিশ্বের চোখ এখন তুরস্কের নির্বাচনের দিকে। কে হতে যাচ্ছেন দেশটির আগামীর কর্ণধার, রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান না কামাল কিলিকদারোগলু। প্রথম রাউন্ডেই এটি শেষ হবে, না দ্বিতীয় রাউন্ডের জন্য অপেক্ষা করতে হবে? এসব প্রশ্নের জবাবে তুরস্কের গণমাধ্যমগুলো তাদের নির্বাচন কমিশনের অনানুষ্ঠানিক ফলের বরাতে জানাচ্ছে, দ্বিতীয় রাউন্ডের দিকেই গড়াচ্ছে পরিস্থিতি। তবে কামালের তুলনায় অনেকখানি এগিয়ে রয়েছেন এরদোয়ান।

কামাল ও এরদোয়ান

দেশটির অন্যতম প্রধান গণমাধ্যম ডেইলি সাবাহতে প্রকাশিত নির্বাচনের ফলে দেখা যাচ্ছে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এ পর্যন্ত ৯৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ ব্যালট গণনা করা হয়েছে। এরমধ্যে এরদোয়ান পেয়েছেন ৪৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ বা দুই কোটি ৬৩ লাখ ৯৮ হাজার ৯৯৯ ভোট, প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কামাল কিলিকদারোগলু পেয়েছেন ৪৪ দশমিক ৯৮ শতাংশ বা দুই কোটি ৪০ লাখ ৬২ হাজার ৩৩৮ ভোট। তৃতীয় স্থানে রয়েছেন অন্য প্রার্থী সিনান ওগান। তার পক্ষে ভোট পড়েছে পাঁচ দশমিক ২৫ শতাংশ বা ২৮ লাখ পাঁচ হাজার ২৬০ ভোট। এছাড়া নাম প্রত্যাহার করে নেওয়া মুহাররেম ইনসের নামের পাশে টিক দিয়েছেন শূন্য দশমিক ৪৩ শতাংশ বা দুই লাখ ৩১ হাজার ২৩৭ জন ভোটার।

এদিকে পার্লামেন্ট নির্বাচনে এ পর্যন্ত ৯৭ দশমিক ২১ শতাংশ ভোট গণনা হয়েছে। এতে এরদোয়ানের জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (একে পার্টি) পেয়েছে ৩৫ দশমিক ৪১ শতাংশ ভোট, জিতেছে ২৬৬ টি আসনে। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) পেয়েছে ২৫ দশমিক ২০ শতাংশ ভোট, তারা জয় পেয়ছে ১৬৮টি আসনে।

ভোট গণনা চলছে

এছাড়া জোট হিসেবে এগিয়ে আছে এরদোয়ানের পিপলস অ্যালায়েন্স। জোটটি ৪৯ দশমিক ৫০ শতাংশ ভোট পেয়ে জিতেছে ৩২৩টি আসনে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স ৩৫ দশমিক ১০ শতাংশ ভোট পেয়েছে, জিতেছে ২১১টি আসনে।

গতকাল ১৪ মে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনে ভোট গ্রহণ করা হয়। সকাল আটটা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট দেন ভোটাররা। দেশটিতে মোট ভোটার ছয় কোটি ৪১ লাখ ৯০ হাজার ৬৫১ জন। এরমধ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট পড়েছে মোট ভোটারের ৮৮ দশমিক ০৭ শতাংশ। অন্যদিকে পার্লামেন্ট নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৮৮ দশমিক ১১ শতাংশ।

উল্লেখ্য, অনানুষ্ঠানিক ভোটের ফল ঘোষণার শুরুতে ৫২ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে এগিয়ে ছিলেন এরদোয়ান। সে সময় কামালের প্রাপ্ত ভোট ছিল ৪২ শতাংশ। তবে সময় পেরুতে দুইজনের ব্যবধান কমে আসতে থাকে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এরদোয়ান নেমে গেছেন ৫০ শতাংশের নিচে। অন্যদিকে কামালের ভোট বেড়েছে প্রায় তিন শতাংশ।

ফলে অনেকখানি এগিয়ে থাকলেও প্রেসিডেন্ট ভোট দ্বিতীয় রাউন্ডের দিকেই গড়াচ্ছে। কারণ দেশটির নিয়ম অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী হতে হলে প্রার্থীকে মোট প্রদত্ত ভোটের ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেতে হয়। কেউ যদি এই পরিমাণ ভোট না পান, তাহলে সর্বোচ্চ ভোট প্রাপ্ত দুই প্রার্থীকে দ্বিতীয় রাউন্ডের ভোটে নামতে হয়। সেটি অনুষ্ঠিত হয় দুই সপ্তাহ পরে।

বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত ৯৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ ভোটের মধ্যে এরদোয়ান ৪৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। বাকি আড়াই শতাংশ ভোটের মাধ্যমে ওই ঘাটতি পূরণ করা আপাতত অসম্ভব বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।