‘কিংমেকার’ হয়ে উঠতে পারেন ৫ শতাংশ ভোট পাওয়া ওগান

তুরস্কে সোমবার প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশটির নিয়ম অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী হতে হলে শতকরা ৫০ ভাগ ভোট পেতে হয়। কিন্তু প্রধান দুই প্রার্থীর কেউই সেই ভোট না পাওয়ায় দুই সপ্তাহ পরে আবারও প্রেসিডেন্ট পদের জন্য ভোট গ্রহণ করা হবে। নতুন এই পরিস্থিতিতে কিং মেকার হয়ে উঠতে পারেন মাত্র পাঁচ শতাংশ ভোট পাওয়া সিনান ওগান। খবর আল জাজিরা।

সিনান ওগান হয়ে উঠতে পারেন কিংমেকার

তুরস্কের সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের ৯৯ দশমিক ৮৭ ভাগ ভোট গণনা করা হয়েছে। এতে বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান পেয়েছেন ৪৯ দশমিক ৫০ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন কামাল কিলিকদারোগ্লু,, তার প্রাপ্ত ভোট ৪৪ দশমিক ৮৯ শতাংশ। তৃতীয় স্থানে রয়েছেন উগ্র জাতীয়তাবাদী হিসেবে পরিচিত সিনান ওগান, তিনি পেয়েছেন পাঁচ দশমিক ১৭ শতাংশ ভোট। নাম প্রত্যাহার করে নেওয়া মুহাররেম ইনসের নামের পাশে পড়েছে শূন্য দশমিক ৪৪ শতাংশ ভোট।

নিয়মের মারপ্যাচের কারণে অনেকখানি এগিয়ে থাকলেও মাত্র শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশের জন্য দ্বিতীয় রাউন্ডের ভোটে নামতে হচ্ছে এরদোয়ানকে। নির্ধারিত কোটা পূরণে দ্বিতীয় স্থানে থাকা কামালকেও লড়াই করতে হবে। কিন্তু মাত্র পাঁচ শতাংশ ভোট পাওয়া ওগানই রয়েছেন এখন সবার দৃষ্টিতে। কারণ তিনি নিজে সাফল্য না পেলেও এই মুহূর্তে অন্যকে সাফল্য এনে দেওয়ার মতো অবস্থায় রয়েছেন। তিনি যদি এরদোয়ানের সাথে হাত মেলান, তাহলে তো কথাই নেই। কামালের সঙ্গে হাত মেলালে সেক্ষেত্রেও সাফল্য ধরা দিতে পারে।

প্রেসিডেন্ট হতে পারেন এরদোয়ান বা কামাল

এটিএ অ্যালায়েন্স পার্টির নেতা ওগানের বিরুদ্ধে উগ্র জাতীয়তাবাদ এবং অতি-ডানপন্থী নীতি অবলম্বনের অভিযোগ রয়েছে। তবে তার সে অভিযোগ পেছনে ফেলে দুই পক্ষই তাকে কাছে টানতে চাইবে। বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারছেন ওগান নিজেও। তাই তিনি বলেছেন, এই মুহূর্তেই আমরা কোনো দলকে সমর্থন করছি না। যারা সন্ত্রাসবাদ থেকে নিজেদের দূরে রাখে না, তাদের অবশ্য আমাদের কাছেই আসা উচিত না। আমরা বিষয়টি নিয়ে জোটের নেতাদের সঙ্গে আলাপ করব, তারপর সিদ্ধান্ত জানাব।

ইস্তাম্বুলের সাবানসি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বার্ক এসেন বলেছেন, বিভিন্ন ইস্যুতে অনেকেই এরদোয়ান বা কামালকে ভোট দিতে চাননি। ওগান সেই ভোটগুলো পেয়েছেন। এছাড়া ভাসমান ভোটের বেশিরভাগ পেয়েছেন ওগান। ফলে তিনি কিংমেকার হয়ে উঠতে পারেন। আবার তাকে যারা ভোট দিয়েছে, তারাও যে তার কথায় নির্দ্বিধায় কোনো এক পক্ষ নেবে, তা না-ও হতে পারে। সেক্ষেত্রে ওগানকে তার ভোটারদের বুঝিয়ে পক্ষ নিতে হবে।

এদিকে আঙ্কারায় নিজের সমর্থকদের উদ্দেশ্যে এরদোয়ান বলেছেন, দ্বিতীয় দফা নির্বাচন হলে তার অংশ নিতে আপত্তি নেই। তবে তার বিশ্বাস, তিনিই বিজয়ী হবেন। অন্যদিকে দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে জয়ী হওয়ার শপথ নিয়ে কিলিকদারোগ্লু বলেছেন, তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মানুষের আস্থা ভোট অর্জনে ব্যর্থ হয়েছেন। ফলে চূড়ান্ত বিজয়ী হবেন তিনিই।