সংঘাতের মধ্যেই সুদানের পুলিশপ্রধান বরখাস্ত

সুদানে চলমান সংঘাতের মধ্যে দেশটির পুলিশপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আনান হামেদ মোহাম্মদ ওমরকে অপসারণ করেছেন সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান। খবর আনাদোলু।

সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান

সামরিক এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সোমবার লেফটেন্যান্ট জেনারেল আনান হামেদ মোহাম্মদ ওমরকে সরিয়ে পুলিশপ্রধান হিসেবে লেফটেন্যান্ট জেনারেল খালেদ হাসান মহিউদ্দিনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক গোষ্ঠী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে ক্রমাগত সংঘর্ষের মধ্যে এই পদক্ষেপ এসেছে। সুদানের বেসামরিক নাগরিকরা চলমান এ সংঘাত থামাতে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে লুটপাটের অভিযোগ এনেছে।

এক মাসের বেশি সময় ধরে চলছে সংঘাত

সুদানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এক মাসের বেশি সময় ধরে চলা এ সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ছয় শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে হাজার হাজার মানুষ। এছাড়া লাখ লাখ মানুষ বাড়ি ঘর ছেড়ে পালাচ্ছে।

জানা গেছে, গত ৩০ এপ্রিল আধা সামরিক বাহিনী আরএসএফ দেশটির পুলিশকে সতর্ক করে দিয়ে সেনাবাহিনীর সাথে তাদের এ লড়াইয়ে যুক্ত হতে নিষেধ করে।

সুদানের সামরিক বাহিনীর ঘোষিত পদক্ষেপের মধ্যে অন্যতম ছিল আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফকে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করা হবে। সে লক্ষ্যে তারা কাজ করার ঘোষণা দেয়। কিন্তু আরএসএফ বিষয়টি মানতে রাজি নয়। এমনকি মানলেও তা আরো কয়েক বছর পরে বাস্তবায়নের দাবি জানায়। মূলত এ বিষয়টি নিয়েই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে।

২০১৯ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরকে ক্ষমতাচ্যুত করার মধ্য দিয়ে দেশটিতে সমস্যার সূত্রপাত হয়। দিন দিন তা বাড়তে থাকে। কথা ছিল ২০২৪ সালের প্রথম দিকে নির্বাচনের মাধ্যমে সে সমস্যার সমাধান হবে। সুদান তখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দিয়ে পরিচালিত হচ্ছিল।

২০২১ সালের অক্টোবরে সামরিক বাহিনী অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী আবদুল্লাহ হামদোককে বরখাস্ত করে ক্ষমতা দখল করে। তখন সেনাবাহিনী ও আধা সামরিক বাহিনী মিলে সরকার পরিচালনা করছিল। কিন্তু আধা-সামরিক বাহিনীকে সেনাবাহিনীর মধ্যে আত্মীকরণের ঘোষণা ফলেই শুরু হয় জটিলতা। এর মধ্যে বিবদমান পক্ষগুলো বিদেশি সমর্থন পাওয়ায় সংঘাত আরও গভীর হচ্ছে।