আলভীর পদত্যাগের গুজব, ইমরান বললেন শেষ বল পর্যন্ত আছি

পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভী পদত্যাগ করতে পারেন। তার স্থলে দেশটির সিনেটের সভাপতি সাদিক সানজারানি অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিতে পারেন। গতকাল বিকেল থেকে পিটিআইর শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন নেতার দলত্যাগের ঘোষণার পর আরিফ আলভীর পদত্যাগের সম্ভাবনার কথা ছড়িয়ে পড়েছে।

ইমরান খানের সঙ্গে পিটিআই নেতা ও পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভী

পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট কার্যালয় অথবা অন্য কোনো পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা আসেনি। তবে আরিফ আলভী প্রেসিডেন্ট পদ ও দল ছাড়ার ঘোষণা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে দাবি করা হচ্ছে।

এর আগে রাত ৯টার দিকে পিটিআই মহাসচিব ও সাবেক অর্থমন্ত্রী আসাদ উমর দলীয় পদ ছাড়ার ঘোষণা দেন। সন্ধ্যায় কারাগার থেকে ছাড়া পাওয়ার পর সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ ঘোষণা দেন। দলীয় পদ ছাড়লেও ইমরান খানের সঙ্গে থাকবেন জানিয়ে আসাদ উমর বলেছেন, আমার ওপর কোনো পক্ষ থেকে কোনো চাপ নেই।

আসাদ উমরের কয়েক ঘণ্টা আগে দল ছাড়ার ঘোষণা দেন পিটিআইর ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী। দুই সপ্তাহে কমপক্ষে তিনবার গ্রেপ্তার হওয়ার পর পিটিআই ছাড়ার ঘোষণা দিলেন তিনি।

আসাদ উমর ও ফাওয়াদ চৌধুরীর প্রস্থানকে ইমরান খানের জন্য বড় আঘাত বলে মন্তব্য করেছে পাকিস্তানের প্রচারমাধ্যম। প্রায় সিকি শতাব্দী আগে পিটিআইর পথচলা শুরুর পর থেকে দলটির সঙ্গে ছিলেন ব্যাংকার, অর্থনীতিবিদ আসাদ উমর ও ব্যারিস্টার ফাওয়াদ চৌধুরী।

এ দুজনের পর পিটিআইর সাবেক এমপি মুরাদ সাঈদ, সাবেক এমপি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশী ও প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভীর পদত্যাগের সম্ভাবনার কথা চাউর হয়ে পড়েছে। এদের মধ্যে শাহ মাহমুদ কোরেশী মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক দফা কারাগার থেকে বেরিয়ে জেল গেটেই পুলিশের হাতে নতুন করে গ্রেপ্তার হয়েছেন। পুলিশের গাড়িতে উঠিয়ে নেওয়ার মুহূর্তে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, আমি দল ছাড়ব না, কোনো কাগজে লেখা বিবৃতি পড়ব না।

এদিকে ইমরান খান আজ সন্ধ্যায় এক ভাষণে বিচার বিভাগের প্রতি পাকিস্তানকে রক্ষার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, এ দেশকে বাঁচানোর উপায় কেবল আপনাদের হাতেই আছে। আপনাদের ঐক্য ও সাহসের ওপর নির্ভর করবে এ জাতির আশা-ভরসা।

তিনি বলেন, যারাই সরকারে থাকুক, তাদের উদ্দেশে বলছি, আমি আলোচনার জন্য প্রস্তুত আছি। আমি কালকে একটি কমিটি ঘোষণা করব। কমিটি আপনাদের সঙ্গে বৈঠক করুক। আপনারা তাদের জানান কেন আমার সরে যাওয়া দরকার। যদি এটা স্পষ্ট হয় যে আমি সরে গেলে দেশের কল্যাণ হবে, তাহলে আমি দেশের জন্য তা করতে রাজি আছি।

কঠোর নির্যাতন ও জবরদস্তির মাধ্যমে পিটিআই নেতাদের দল ও রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দিতে বাধ্য কা হচ্ছে অভিযোগ করে ইমরান খান বলেন, এতে পিটিআই নয়, পাকিস্তানের ক্ষতি হচ্ছে। যে লোকগুলোকে রাজনীতি ছাড়তে বাধ্য করা হচ্ছে, তারা সবাই মেধাবী, দেশপ্রেমিক। তাদের বিদায়ে জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, পিটিআইর ক্ষতি বড় কোনো বিষয় নয়।

পাকিস্তানের জনগণকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আমার বাসায় ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যে কোনো মুহূর্তে তারা আসলে আমি যেতে প্রস্তুত আছি। তবে আমি আমার প্রিয় পাকিস্তানিদের এ মর্মে আশ্বস্ত করছি যে আপনাদের ক্যাপ্টেন শেষ বল পর্যন্ত মাঠে থাকবে, শেষ রক্তবিন্দু দিয়েও দেশের জন্য লড়বে।