জাতিসংঘ দূতকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

সংঘাতকবলিত সুদানের সরকার জাতিসংঘের দূত ভলকার পার্থেসকে ‘পার্সোনা নন-গ্রাটা’ (অবাঞ্ছিত) ঘোষণা করেছে। বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সম্পর্কিত এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সেনাবাহিনীর প্রধান ফাত্তাহ আল-বুরহান আবদেল দেশটিতে সংঘাত উসকে দেওয়ার জন্য পার্থেসকে অভিযুক্ত করার কয়েক সপ্তাহ পর তাকে প্রত্যাহারের অনুরোধ জানানো হয়েছে। তবে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সুদান এটি করার ক্ষমতা রাখে না। খবর এএফপি।

ভলকার পার্থেস

জাতিসংঘ মিশনের টুইটার ফিড অনুসারে, পার্থেস বৃহস্পতিবার ইথিওপিয়ার আদ্দিস আবাবায় সুদানকেন্দ্রিক বেশ কিছু কূটনৈতিক আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন। এদিকে পার্থেসকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করলেও মিশন তার কাজ চালিয়ে যেতে পারবে বলে জানিয়েছে সুদানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

খবরে বলা হয়, গত মাসে জাতিসংঘের কাছে এক চিঠিতে সুদানের সেনাবাহিনীপ্রধান বুরহান সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে লড়াইয়ে ইন্ধন দেয়ার জন্য জাতিসংঘ দূতকে দায়ী করেন। একই সঙ্গে তাকে জাতীয় সার্বভৌমত্বকে সম্মান না করার জন্যও অভিযুক্ত করা হয়। পরে তাকে প্রতিস্থাপনের জন্য জাতিসংঘের কাছে দাবি জানান বুরহান।

সুদান জ্বলছে

তবে সুদানের পক্ষ থেকে অভিযোগ আসার পরও জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা পার্থেসের পাশে দাঁড়িয়েছেন। গুতেরেস বলেন, সুদানের সেনাপ্রধান পার্থেসকে দায়ী করে যে চিঠি দিয়েছিলেন, তাতে তিনি দুঃখ পেয়েছেন।

জাতিসংঘের মহাসচিবের বরাত দিয়ে সংস্থাটির মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক গতকাল শুক্রবার বলেছেন, অবাঞ্ছিত ঘোষণা বা পারসোনা নন গ্রাটার বিষয়টি জাতিসংঘের কর্মীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় এবং এভাবে জাতিসংঘের কর্মীদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা সদস্যদেশগুলোর নিয়মের পরিপন্থী।

গত সপ্তাহে নিরাপত্তা পরিষদ সুদানে ইউএন ইন্টিগ্রেটেড ট্রানজিশন অ্যাসিসট্যান্স মিশনের (ইউনিটামস) ম্যান্ডেট ছয় মাসের জন্য বাড়ানোর পক্ষে ভোট দেয়। ওমর আল-বশিরের পতনের পরে সুদানের গণতান্ত্রিক উত্তরণকে সমর্থন করার জন্য ২০২০ সালের জুনে ইউনিটামস গঠন করা হয়েছিল। পরে ইউনিটামস এক বছরের জন্য নবায়ন করা হয়।

রাষ্ট্রক্ষমতার একচেটিয়া দখলে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে সুদানের সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)। প্রথমে রাজধানী খার্তুম ও এর চারপাশের শহরগুলোতেই সংঘাত সীমাবদ্ধ ছিল। বর্তমানে তা পশ্চিমের দারফুর অঞ্চল পর্যন্ত ছড়িয়েছে।

প্রায় দুই মাসের রক্তক্ষয়ী এ সংঘাতে এখন পর্যন্ত প্রায় এক হাজার ৮০০ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। ঘরবাড়ি হারিয়েছে চার লক্ষাধিক মানুষ। সংঘাত কবলিত এলাকাগুলো থেকে ১২ লাখের বেশি মানুষ পালিয়ে গেছে।

সংঘাত শুরুর পর সৌদি আরবসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক সংস্থার উদ্যোগে বেশ কয়েকবার যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় উভয়পক্ষ। তবে কোনোবারই তা পুরোপুরি কার্যকর হয়নি। আজ শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ছয়টা থেকে আবারও সেখানে ২৪ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি চলছে।