বিশ্বকে যে বার্তা দিলেন এরদোয়ান

তুরস্কের নির্বাচনে বিজয়লাভের মাধ্যমে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান নতুন একটি প্রভাব তৈরি করেছেন। তিনি বিশ্বনেতাদের প্রতি নতুন বার্তা দিয়েছেন। কী সেই বার্তা তা এক নিবন্ধে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন কূটনীতি বিশেষজ্ঞ ইহসান আকতাস। ডেইলি সাবাহ।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান

নিবন্ধে বলা হয়, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর যখন বৃটিশ ও ফরাসিরা পৃথিবীর সব ভূখণ্ড দখল করে নেয়, তখন সর্বত্র ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় এবং জনগণের মাঝে অসহায়ত্ব ফুটে ওঠে। তারা চীন থেকে আফ্রিকা পর্যন্ত এলাকা দখল করেছিল এবং সব মুসলমানকে বন্দিদশায় পিষ্ট করেছিল।

রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান যখন ক্ষমতা গ্রহণ করেন, যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্স আজও সেটিকে ভালোভাবে নেয়নি। এরদোয়ান তুরস্কে গণতন্ত্রের উন্নতি ঘটিয়েছেন। টেকসই সমসাময়িক অবকাঠামো প্রতিষ্ঠা করেছেন। তার শাসনামলে তুরস্ক শক্তিশালী প্রতিরক্ষা শিল্প অবকাঠামো প্রতিষ্ঠা ও নৌবাহিনী শক্তিশালী হয়েছে। ভূমধ্যসাগরে নৌবহর চালু হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান সফলভাবে সব পাল্টা-সংগ্রামের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। সাম্প্রতিক নির্বাচনে এরদোয়ানকে দমন করার জন্য ভেতরে-বাইরে ব্যাপক চাপ ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এরদোয়ান আবার তার বিরোধীদের পরাজিত করে বিশ্বের কাছে একটি বার্তা দিয়েছেন।

এরদোয়ানের ভাষ্য, যে ব্যক্তি নিজস্ব সংস্কৃতি, বিশ্বাস ও ইতিহাসকে সমর্থন করে, নিজ জাতিকে ভালবাসে এবং তার জনগণের সমর্থন পেয়ে ক্ষমতায় আরোহণ করে, সে উন্নতি ও অগ্রগতির ক্ষেত্রে সফল হবে। উন্নয়নের জন্য পশ্চিমাদের সমর্থনের প্রয়োজন নেই।

বিশ্লেষণে বলা হচ্ছে, এরদোয়ান বিশ্বব্যাপী তৃতীয় বিশ্বের উপেক্ষিত এবং নির্যাতিতদের কাছে তুরস্ককে একটি মডেল হিসেবে উপস্থাপন করেছিলেন। তুর্কি প্রেসিডেন্ট তার মুসলিম পরিচয় নিয়ে জনগণের সামনে দাঁড়িয়েছেন, তিনি তার ইতিহাসকে সম্মান করেন। তিনি জনগণকে বিশ্বাস ও সম্পদের ওপর নির্ভর করেন। পৃথিবীর সব দেশ এবং নেতাদের এই মডেল বাস্তবায়ন করা উচিত।

এসব করতে গিয়ে তিনি পশ্চিমাদের প্রতি আগ্রাসী মনোভাব পোষণ করেননি। তবে তিনি পশ্চিমের সঙ্গে কাজ করেছেন, কূটনীতি প্রয়োগ করেছেন এবং কখনও কখনও বিরোধিতা করেছেন। তিনি একটি ভারসাম্যপূর্ণ নীতি বজায় রেখেছেন। যেকোনো হুমকিতে তিনি স্থান ছেড়ে দেন না, বরং হুমকিদাতাকে বলেন ‘সামনে এসে কথা বলুন।’