হজের সময় শয়তানকে মারা এত পাথর যায় কোথায়, আসেই কোত্থেকে

হজ পালনের সময় শয়তানকে পাথর মারা ওয়াজিব। তবে অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে প্রতি বছর লাখ লাখ হাজি যেসব পাথর নিক্ষেপ করেন, সেগুলো কোথায় থেকে আসে, আবার কোথায় যায়? এ প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন এ কার্যক্রমের সাথে সংশ্লিষ্ট এক কর্মী। বলেছেন, এগুলোর জন্য একটি কর্তৃপক্ষ কাজ করে থাকে। তারাই এই নুড়ি পাথরের যোগান দেন এবং সরিয়ে নেন। খবর আরব নিউজ ও সৌদি গেজেট।

পাথর নিক্ষেপ করছেন হাজিরা

মহান রাব্বুল আলামিনের নির্দেশে হযরত ইব্রাহিম (আ.) যখন শিশুপুত্র ইসমাঈলকে (আ.) কোরবানি করতে নিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তাকে বাধাগ্রস্ত করতে শয়তান কুমন্ত্রণা দিচ্ছিল। তখন হযরত ইব্রাহিম (আ.) তিন স্থানে শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করে তাকে বিতাড়ন করেছিলেন। সেই ঘটনাকে চিরজাগ্রত রাখার জন্য কঙ্কর নিক্ষেপকে হজের বিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

হজযাত্রীদেরকে ৯ জিলহজ আরাফাতের ময়দানে সারাদিন অবস্থান করে মুজদালিফায় যেতে হয়। মুজদালিফার খোলা আকাশের নিচে ইবাদত ও জিকিরের মাধ্যমে রাত কাটিয়ে ফজরের পর মিনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হতে হয়। এর আগে অবশ্য শয়তানকে মারার জন্য প্রত্যেক হাজিকে ২১টি ছোট আকারের পাথর সংগ্রহ করতে হয়। মিনায় গিয়ে তিনটি স্থানে কঙ্কর নিক্ষেপ করতে হয়। এগুলো হলো- জামারাতুল আকাবা (শেষ জামারা), জামারাতুল উস্তা (মধ্যম জামারা) ও জামারাতুল উলা (প্রথম জামারা)। হাজিরা এই তিন জায়গায় সর্বমোট ২১টি কঙ্কর নিক্ষেপ করেন।

পাথর সংগ্রহ করছেন হাজিরা

সৌদি আরবের হজ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত কিদানা ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির একজন মুখপাত্র আহমেদ আল-সুবি জানান, প্রতি বছর হজের সমস্ত কার্যক্রম শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা পাথর সরিয়ে নিতে শুরু করেন।

তিনি বলেন, হাজিরা যখন জামারায় পথর নিক্ষেপ করে, তখন সেটি সেখানকার ১৫ মিটার গভীর বেজমেন্টে গিয়ে পড়ে। সেখান থেকে বেশকিছু কনভেয়ার বেল্টের মাধ্যমে পাথরগুলোকে সরিয়ে নেওয়া হয়। পরে সেগুলোতে পানি স্প্রে করে ময়লামুক্ত করা হয়। পরবর্তী সময়ে সেগুলো অন্যান্য গাড়ির মাধ্যমে সরিয়ে নিয়ে পরের হজ মৌসুমের জন্য সংরক্ষণ করা হয়। হজের সময় এলে পাথরগুলো মুজদালিফায় নিয়ে রাখা হয়। হাজিদের দেওয়া ছোট ব্যাগে করে তারা পাথর সংগ্রহ করে মিনায় গিয়ে জামারায় নিক্ষেপ করেন।

বিশেষজ্ঞরা জানান, প্রতি বছর লাখ লাখ হাজির জন্য শত শত টন নুড়ি পাথরের প্রয়োজন হয়। তবে হজ কর্তৃপক্ষের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার কারণে কখনো নুড়ি পাথরের সঙ্কট বা পাথরের কারণে হজ কার্যক্রম ব্যাহত হয়নি।