রাশিয়া: শস্য চুক্তি অব্যাহত রাখার কোনো কারণ নেই

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত কৃষ্ণসাগরীয় শস্য চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর কোনো কারণ দেখছে না মস্কো। গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিটির মেয়াদ আগামী ১৭ জুলাই শেষ হতে যাচ্ছে। রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ চলমান থাকাবস্থায় সই হওয়া এ চুক্তির ফলে বিশ্ব বড় ধরনের খাদ্য সংকট থেকে রেহাই পেয়েছিল। এ চুক্তি নবায়ন না হলে আগামীতে আবারও এ সংকটের মুখে পড়তে পারে বিশ্বের অনেক দেশ। খবর সিএনএন ও আনাদোলু।

শস্য নিয়ে যাচ্ছে একটি জাহাজ

মঙ্গলবার (৪ জুলাই) এক বিবৃতিতে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, আফ্রিকা, এশিয়া ও লাতিন আমেরিকার দরিদ্র দেশগুলোর খাদ্য সংকট মোকাবেলা ছিল শস্য চুক্তিটির উদ্দেশ্য। কিন্তু এখন পুরো কার্যক্রমটি ইউক্রেনের বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডে পরিণত হয়েছে। ফলে চুক্তিটি অব্যাহত রাখার কোনো ভিত্তি দেখছে না মস্কো।

রাশিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে না নেওয়ায় পশ্চিমা দেশগুলোর সমালোচনা করে ওই বিবৃতিতে বলা হয়, চুক্তিতে রাশিয়ার অংশে কোনো অগ্রগতি হয়নি। বরং রাশিয়ান সারের রপ্তানি বহনের জন্য নির্মিত টগলিয়াত্তি-ওডেসা পাইপলাইনটি বিস্ফোরণের মাধ্যমে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।

কৃষ্ণসাগরীয় শস্য চুক্তিতে কোনও লাভ খুঁজে পায়নি রাশিয়া

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে তারা চেষ্টা চালাচ্ছে, যাতে এতে অংশগ্রহণকারী সমস্ত জাহাজ সফলভাবে তাদের মিশন শেষ করতে পারে এবং কৃষ্ণসাগর ছেড়ে যেতে পারে। এর আগে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভও বলেছিলেন, মেয়াদপূর্তির পর চুক্তিটি নবায়নের খুব বেশি আশা নেই।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা চালাতে শুরু করে রাশিয়া। এতে বিশ্বজুড়ে ইউক্রেনের শস্য রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বিপাকে পড়ে এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার বেশকিছু দেশ। এ পরিস্থিতির উন্নয়নে গত বছরের জুলাইয়ে জাতিসংঘের মধ্যস্থতা এবং তুরস্কের উদ্যোগে কৃষ্ণ সাগর দিয়ে ইউক্রেনীয় খাদ্যশস্য রফতানির চুক্তি করে রাশিয়া ও ইউক্রেন।

এ চুক্তির আওতায় ইউক্রেন থেকে এক কোটির টনের বেশি খাদ্য শস্য বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়েছে। প্রথমে এ চুক্তির মেয়াদ ধরা হয় ১২০ দিন। পরে জাতিসংঘ ও তুরস্কের আহ্বানে বেশ কয়েক দফা এ শস্য চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়।