ইউক্রেনকে এখনই ন্যাটো সদস্য নয়, ব্যাখ্যায় যা বলছে যুক্তরাষ্ট্র

লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলিনাসে ন্যাটোর সদস্যপদ পাওয়া নিয়ে একটি সুনির্দিষ্ট রূপরেখা পাওয়ার আশায় ছিলেন ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। কিন্তু তার সে আশা পূরণ না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে বলছে, এই মুহূর্তে ইউক্রেনকে সদস্য বানিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে চায় না ন্যাটো। খবর ডেইলি মেইল।

ভিলিনাসে ন্যাটো সম্মেলন

যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সামরিক জোট নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশনের (ন্যাটো) সম্মেলন শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান। এ সময় সাংবাদিকদের এ বিষয়ক এক প্রশ্নের উত্তরে সুলিভান বলেন, আপাতত ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্যপদ দেওয়া হয়নি। কারণ এখন যদি তাদেরকে সেই সদস্যপদ দেওয়া হয়, তাহলে চলমান যুদ্ধ রাশিয়া-ইউক্রেনের জায়গায় রাশিয়া-ন্যাটো যুদ্ধে রূপ নেবে। এতে ধ্বংসের ব্যপ্তি বেড়ে যাবে বহুগুণ। আর এ মুহূর্তে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে জড়ানোর কোনো পরিকল্পনা ন্যাটোর নেই।

সুলিভান বলেন, এখন আমরা কেবল এতটুকুই বলতে পারি, অবস্থার পরিবর্তন ঘটলে একদিন অবশ্যই ন্যাটোর সদস্যপদ পাবে ইউক্রেন। কিন্তু ঠিক কবে নাগাদ তা হবে, সে সম্পর্কে কোনো সময়সীমা আমরা দিতে পারছি না।

জ্যাক সুলিভান

পৃথক সংবাদ সম্মেলনে ন্যাটোর মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ জানান, ইউক্রেন কীভাবে জোটের সদস্যপদ পেতে পারে- সে সম্পর্কিত কোনো রোডম্যাপ সংস্থাটি এই মুহূর্তে কিয়েভকে দিতে প্রস্তুত নয়।

২০১৪ সালে রাশিয়া ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া দখল করে নেওয়ার পর থেকেই ন্যাটোতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কিয়েভ। শেষ পর্যন্ত এই ইস্যুতেই রাশিয়া হামলা করে বসে ইউক্রেনে। যুদ্ধের ৫০০ দিন পার হওয়ার পর কিয়েভের প্রত্যাশা ছিল, ভিলিনাসে সম্মেলনেই তাদেরকে জোটের পূর্ণসদস্যপদ দেওয়া হবে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর ইউরোপীয় প্রভাবশালী সদস্যদের অনাগ্রহে সদস্যপদ তো দূরের কথা, নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমাও দিতে রাজি হয়নি সামরিক জোটটি।

সম্মেলনে উপস্থিত জেলেনস্কি মন্তব্য করেন, তার দেশকে সদস্যপদ না দেওয়ার এই সিদ্ধান্ত ‘অযৌক্তিক’ এবং এটি ন্যাটোর ‘দুর্বলতার’ প্রমাণ বহন করছে। তার এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করে জোটের এক প্রভাবশালী সদস্যরাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকোকে বলেন, জেলেনস্কি অতিরিক্ত কথা বলেন। ভিলিনাসে তিনি যা বলেছেন, তা বিবেচনাপূর্ণ ও সংযত ছিল বলে আমি মনে করি না। জেলেনস্কি অবশ্য পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে লেখা এক পোস্টে জানিয়েছেন, তিনি ন্যাটোর সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন।