কথা দেন, কথা রাখেন সাকিব আল হাসান

সিরিজ শুরুর আগে ক'জনই ভেবেছিল ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতবে বাংলাদেশ! কেউ না ভাবলেও একজন ভেবেছিলেন, তিনি সাকিব আল হাসান। যেমন ভাবনা, তেমন কাজ – আফগানিস্তানকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়েই সিরিজ জয়ের উল্লাস করছে সাকিবের বাংলাদেশ।

সাকিব আল হাসান

একটু পেছনে ফিরে সিলেটের প্রথম ম্যাচের পূর্ববর্তী ঘটনায় ফিরলে ভেসে উঠবে দুইটি লাইন। যেখানে সাকিব বলেছিলেন – ‘যাকে ইচ্ছা ফেভারিট বলতে পারেন, তবে আমি সিরিজ জিততে চাই।’

ফেভারিট কে? উত্তরে আফগানিস্তানকে এগিয়ে রাখা মানুষের পাল্লাই ভারী হবে নিশ্চয়। পরিসংখ্যানও বলছিল, আফগানদের চেয়ে টি-টোয়েন্টিতে বেশ পিছিয়ে বাংলাদেশ। কিন্তু দলটা যখন সাকিবের তখন পরিসংখ্যান দাঁড়ায় ‘সান্ত্বনা’ স্বরূপ। প্রমাণ করেছেন সাকিব নিজেই। দলকে সিরিজ জিতিয়েছেন ২-০ ব্যবধানে, সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে হয়েছেন ম্যাচ সেরা, জিতেছেন টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার।

এমন জয়ে স্বস্তিতে না থাকার কারণ নেই। ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে সাকিবের কণ্ঠেও এলো আশানুরূপ উত্তর। চোখে মুখে তৃপ্তির ছাপ নিয়ে হাজির হওয়া সাকিব বললেন, ‘এই জয় স্বস্তির, অবশ্যই অনেক স্বস্তির। যে জিনিসগুলো করার চেষ্টা করেছি, ঐ জিনিসগুলো যদি কাজে লাগে কিংবা মাঠে পরিকল্পনাগুলো প্রতিফলন করা যায়, খেলোয়াড়েরা বাস্তবায়ন করে, ফলাফল যদি নিজেদের দিকে আসে তাহলে এর চেয়ে ভালো আর কি হতে পারে।’

পরিকল্পনায় সফল সাকিবরা, সফল বাংলাদেশ। অধিনায়ক সাকিবের কণ্ঠেও তাই স্বস্তির বাণী। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সাকিব বলেন, ‘আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জিতে ভালো লাগছে। ওদের সাথে টি-টোয়েন্টিতে এর আগে ভালো ফলাফল ছিলো না। ওদের সঙ্গে একটা সিরিজ জিততে পারলাম বিশেষ করে এই রকম কন্ডিশনে। এটি আমাদের অনেক আত্মবিশ্বাস জোগাবে।’

প্রথম ম্যাচের উইনিং শটটি শরিফুলের ব্যাটে আসলেও উইনিং কম্বিনেশন ভেঙে দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। ঠিক কেন এমন চেঞ্জ সেটির উত্তর মিলেছে সাকিবের কণ্ঠে। তার মতে ভালো ক্রিকেট খেললেও এখনো সেরা কম্বিনেশন খুঁজে পাননি তিনি, ‘সেরা কম্বিনেশন খুঁজে পাওয়ার এখনো অনেক কিছু বাকি রয়েছে। তবে আমরা যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছি তাতে আমরা একটি ভালো অবস্থানে রয়েছি। কন্ডিশন ভিন্ন হলে নতুন চ্যালেঞ্জ আসবে, সেগুলোর সঙ্গে মানিতে নিতে হবে আমাদের।’

এবারের সিরিজে আলাদা করে নজর কেড়েছেন যুব বিশ্বকাপ জয়ী দলের তিন তারকা ক্রিকেটার। তারুণ্যের হাত ধরে প্রথম ম্যাচে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। সাকিব মনে করেন এটি নিজেদের প্রক্রিয়ার একটি অংশ, ‘হৃদয় বা যারা রয়েছে তারা বিশ্বকাপের পর থেকেই দলে রয়েছে। এখানে যারা আছে বেশিরভাগই এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের দলে থাকবে। এরমাঝে দুই-চারজন যাচ্ছে আসছে, এটাই তো ধারাবাহিক প্রক্রিয়া।’

সাকিবের পরিকল্পনা কিংবা ক্রিকেটীয় ধারণা – যা-ই বলেন না কেন সেটি অন্যদের চেয়ে আলাদা। সাকিব একটা দলকে ঘিরে পরিকল্পনার করেন, সেই অনুযায়ী এগিয়ে যান। মাঠে কখনো বড় ভাই, কখনো অধিনায়ক আবার কখনো রাগান্বিত এক চাহনি। সবমিলিয়ে সাকিব শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার। সাকিব কথা দেন, কথা রাখেন।