রাশিয়া: ক্রিমিয়ার সেই সেতুতে হামলায় যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যও জড়িত

মস্কো অধিকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্তকারী কার্চ সেতুতে চালানো সন্ত্রাসী হামলায় ইউক্রেনের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সম্পৃক্ততা রয়েছে দাবি করেছে রাশিয়া। এ হামলার উপযুক্ত পাল্টা জবাব দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। খবর আনাদোলু।

কের্চ সেতুতে হামলা

সোমবার (১৭ জুলাই) টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে পুতিন বলেন, কের্চ সেতুতে আবারও সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। রাশিয়ার পক্ষ থেকে অবশ্যই এর যথোপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে পরিকল্পনা প্রস্তুত করছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

রুশ প্রেসিডেন্ট এই হামলাকে নির্বোধদের দ্বারা সংগঠিত অপরাধ উল্লেখ করে বলেন, সেতুটি দিয়ে অনেক দিন ধরে কোনো সামরিক সরঞ্জাম পরিবহন করা হয় না। এটি কেবল বেসামরিক প্রয়োজনেই কাজে লাগানো হয়। নাশকতা ঠেকাতে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এ অবকাঠামো আরও সুরক্ষিত করার পরিকল্পনা চলছে।

রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন

রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, ক্রিমিয়ার সেতুতে সোমবারের হামলা কিয়েভ সরকার দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল। মার্কিন ও ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এবং রাজনীতিবিদদের সরাসরি অংশগ্রহণে ইউক্রেনের কর্মকর্তারা ও সামরিক বাহিনী হামলার এ সিদ্ধান্ত নেয়। তবে এ দাবির পক্ষে তিনি কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেননি।

রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আরও বলেন, সেতুর ক্ষতিগ্রস্ত অংশ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মেরামত করা হবে। এ ধরনের হামলার মাধ্যমে উপদ্বীপের সঙ্গে পরিবহন সংযোগ বিঘ্নিত করা এবং রাশিয়ার বাকি অংশ থেকে ক্রিমিয়াকে বিচ্ছিন্ন করার যে সব অপচেষ্টা চলছে, তা পুরোপুরিই ব্যর্থ হবে।

পৃথক এক বিবৃতিতে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, কার্চ ব্রিজ সন্ত্রাসী হামলার জবাবে রাশিয়া বিশেষ সামরিক অভিযান চালাবে। তবে তিনি এই হামলার জেরে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা নাকচ করে দিয়ে বলেন, এই জটিল মুহূর্তে সংলাপের চ্যানেলগুলো সচল রাখার প্রয়োজন রয়েছে।

সোমবার ভোরে কার্চ সেতুতে এক বিস্ফোরণে এক দম্পতি নিহত এবং তাদের এক মেয়ে আহত হয়েছেন। চালকবিহীন বিস্ফোরক ভর্তি নৌযান ব্যবহার করে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে স্বীকার করেছে কিয়েভ।

এর আগে গত বছরের ৮ অক্টোবর কের্চ সেতুতে প্রথম হামলা হয়। এতে সেতুটির একাংশ ধসে পড়েছিল। কিয়েভ সেই হামলার দায় স্বীকার না করলেও রাশিয়া এর জেরে ইউক্রেনের হামলা জোরদার করেছিল।

২০১৪ সালে রাশিয়া ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া দখল করে নেয়। পরে সেতু নির্মাণ করে সেটিকে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করে। ইউক্রেন বরাবরই বলে আসছে, ক্রিমিয়া তাদের দেশের অংশ। এক সময় তারা ক্রিমিয়াকে মুক্ত করবেই।