চিকিৎসকদের গণ দেশত্যাগে উদ্বিগ্ন ইসরায়েলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়

বিতর্কিত বিচার বিভাগ সংস্কার আইন পাস হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দেশত্যাগ এবং বিদেশে কাজ করার পরিকল্পনা করছেন অনেক ইসরায়েলি চিকিৎসক। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইসরায়েলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। খবর মিডলইস্ট মনিটর।

ইসরায়েলি চিকিৎসক

গত সপ্তাহে চিকিৎসকদের সঙ্গে এক জরুরি বৈঠক করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মোশে বার সিমান-টভ তাদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। বলেন, তাদের এমন পদক্ষেপে ইসরায়েলের স্বাস্থ্যখাত ঝুঁকির মুখে পড়ে যাবে। দেশটির স্বাস্থ্যখাতকে এভাবে বিপদের মুখে ফেলে যাওয়াটা তাদের জন্য ঠিক হবে না।

তিনি বলেন, আমি জানি, আমাদের অনেকেই আজ খুব কঠিন কিছু অনুভূতি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এর কারণটিই আমাদের বোধগম্য। আর এর প্রতিক্রিয়াগুলোও বোধগম্য। তারপরও এটা সবারই জানা যে, আমাদের অন্য কোনো উপায় নেই। বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই আমাদের চিকিৎসাব্যবস্থাকে এভাবে ফেলে রাখা উচিত হবে না। বরং সামাজিক সংহতির ভিত্তিতে আমাদের সবাইকে একসঙ্গে বসবাস করতে হবে, চিকিৎসা ব্যবস্থা অব্যাহত রাখতে হবে।

মোশে বার সিমান-টভ

সম্প্রতি ইসরায়েলে বিতর্কিত বিচার বিভাগ সংস্কার আইন পাস হয়। এ আইনের মাধ্যমে মূলত সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস করে সরকার। ফলে এখন থেকে আর সরকারের কোনো সিদ্ধান্তে বাধা দিতে পারবে না সুপ্রিম কোর্ট, কোনো পরিবর্তনও করতে পারবে না। এছাড়া আদালতের বিচারক নিয়োগেও সরকারের ভূমিকা রাখার সুযোগ রাখা হয়েছে। সবমিলিয়ে সর্বোচ্চ আদালতকে এখন সরকারের আজ্ঞাবহ হয়েই থাকতে হবে।

আইনটি পাস হওয়ার পর দেশটিতে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই দেশ ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। এমন পরিস্থিতিতে হোয়াটস্যাপের একটি গ্রুপে বিদেশে চলে যেতে ইচ্ছুক চিকিৎসকদের কথা জানতে চাওয়া হয়। সেখানে অন্তত তিন হাজার চিকিৎসক দেশ ছেড়ে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছেন।

ইসরাইলি অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিক হেলথের চেয়ারম্যান হাগাই লেভিন আগেই বলেছিলেন, অধিকাংশ চিকিৎসক মনে করেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে তারা রোগীদের কাছে করা শপথ পূরণ করতে পারবেন না। তাদের মানবাধিকার রক্ষা করতে পারবেন না। ফলে তারা বিদেশে চলে যাওয়ার আবেদন করছেন। গণহারে এই দেশত্যাগের কারণে ইসরায়েলের জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যসেবাখাত বড় ধরনের সংকটের মুখে পড়তে পারে বলে তারা আগেই সতর্ক করছিলেন।