লো স্কোরিং ম্যাচে ভারতের ‘অবিশ্বাস্য’ হার

শেষ ৩০ বলে প্রয়োজন ৩৭ রান, হাতে ৫ উইকেট। এমন পরিস্থিতিতে ম্যাচের লাগাম ভারতের পক্ষে। কিন্তু দলীয় ১৬তম ওভারে বদলে যায় দৃশ্যপট। হোল্ডার-মায়ার্সের কারিশমায় ৪ রানের শ্বাসরুদ্ধকর জয় পায় উইন্ডিজ।

ম্যাচ শেষে দুই দল

ওয়ানডে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে হারের পর ঘরের মাঠে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভারতের বিপক্ষে বৃহস্পতিবার মাঠে নামে উইন্ডিজ। আগে ব্যাটিংয়ে নেমে সাবধানী শুরু করেন উইন্ডিজের দুই ওপেনার কাইল মায়ার্স ও ব্যান্ডন কিং। একপ্রান্তে কিং আগ্রাসী ব্যাটিং করলেও খোলাসা থেকে বের হতে পারছিলেন না মায়ার্স। অবশেষে দলীয় পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে ৭ বলে ১ রান করে বিদায় নেন মায়ার্স। মায়ার্সের বিদায়ের পর স্কোরবোর্ডে ১ রান যুক্ত হতেই ফিরে যান কিং। দলীয় ৩০ রানে ২ উইকেট হারায় ক্যারিবিয়ানরা।

শুরুতে চাপে পড়লেও চার নাম্বারে নেমে মাত্র ৬ বলে ২২ রান সংগ্রহ করে দলকে বড় সংগ্রহের আভাস দেন নিকোলাস পুরান। কিন্তু দলীয় ৫৮ রানে জনসন চালর্স বিদায় নিলে চাপে পড়ে উইন্ডিজ। কুলদীপ, চাহালদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের বিপক্ষে দেখেশুনে খেলতে থাকেন পুরান ও রোভম্যান পাওয়েল। দলীয় ৯৬ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৪১ রানে পুরান বিদায় নিলেও দলকে লড়াকু সংগ্রহ এনে দিতে লড়াই চালিয়ে যান পাওয়েল। শেষ পর্যন্ত পাওয়েলের ৪৮ ও পুরানের ৪১ রানে ভর করে ১৪৯ রান সংগ্রহ করে উইন্ডিজ।

উইন্ডিজের দেওয়া ১৫০ রানের লক্ষ্যে ভারতের হয়ে ওপেনিংয়ে আসেন ইশান কিষান ও শুভমান গিল। মাঝারি লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি ভারতের। দলীয় ৫ রানে বিদায় নেন গিল। এরপর সূর্যকুমারকে সাথে নিয়ে জুটি বাঁধেন কিষান। দ্বিতীয় উইকেট জুটিও বড় হয়নি ভারতের।দলীয় ২৮ রানের মাথায় বিদায় নেন কিষান।

শুরুতে দুই উইকেট হারালেও তৃতীয় উইকেট জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় ভারত। সূর্যকুমার যাদব ও তিলক ভর্মার ব্যাটে জয়ের পথে এগিয়ে যেতে থাকে ভারত। কিন্তু দলীয় ৬৭ রানে ব্যক্তিগত ২১ রানে সূর্যকুমার বিদায় নিলে দ্রুতই বিদায় নেন ভর্মা। সাজঘরে ফেরার আগে খেলেন ২২ বলে ৩৯ রানের দারুণ ইনিংস।

দলীয় ৭৭ রানে চার উইকেট হারালে স্যাঞ্জু স্যামসনকে নিয়ে জুটি বাঁধেন হার্দিক পান্ডিয়া। দুই অভিজ্ঞ ব্যাটারের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে সহজ জয়ের পথে যাচ্ছিল ভারত। দলীয় ১৫ ওভার শেষে ভারতের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ১১৩ রান। জয়ের জন্য শেষ ৩০ বলে ৩৭ রানের প্রয়োজন দাঁড়ায় ভারতের।

সেই সমীকরণে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় জেসন হোল্ডার। ইনিংসের ১৬তম ওভারের প্রথম বলে হার্দিককে ফিরিয়ে দিয়ে ম্যাচে ফেরান উইন্ডিজকে। এরপর স্কোর বোর্ডে কোনো রান যুক্ত না হতেই রান আউট হয়ে ফিরে যান স্যামসন। জোড়া ধাক্কা খেয়ে ম্যাচ থেকে অনেকটাই ছিটকে যা ভারত। সেখান থেকে শেষ দুই ওভারে ভারতের প্রয়োজন দাঁড়ায় ২১ রান।

হাতে চার উইকেট নিয়ে এই সমীকরণ মেলাতে ব্যর্থ হয় ভারত। ১৯তম ওভারের প্রথম বলে ফিরে যান অক্ষর প্যাটেল। এরপর আর্শদীপ সিং ম্যাচ জয়ের আশা দেখালেও রোমারিও শেফার্ডের অসাধারণ বোলিংয়ে ১৪৫ রানেই শেষ হয় ভারতের ইনিংস। সেই সাথে ৪ রানের জয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা। ভারতের ইনিংসে সর্বোচ্চ ৩৯ রান আসে ভর্মার ব্যাটে। উইন্ডিজের বোলারদের পক্ষে রোমারিও শেফার্ড, হোল্ডার ও ওবেড ম্যাকয় ২টি করে উইকেট শিকার করেন।