জাতিসংঘে ইরান: বিশ্বকে আমেরিকানাইজ করার প্রকল্প ব্যর্থ হয়েছে

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রাইসি বলেছেন, বিশ্বব্যাপী আমেরিকানাইজ করার যে প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল, তা ব্যর্থ হয়েছে। বক্তব্যে তিনি বিশ্বজুড়ে ইসলামফোবিয়া এবং যুদ্ধের সমালোচনা করেন। খবর আনাদোলু।

জাতিসংঘে রাইসি

নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে গত মঙ্গলবার দেওয়া ভাষণে রাইসি বলেন, বিশ্বে পশ্চিমা আধিপত্যের সমীকরণ এখন আর আগের মতো কাজ করে না। সাম্রাজ্যবাদী ও অতৃপ্ত পুঁজিবাদীদের স্বার্থে তাদের যে নীতি কাজ করত, তা ক্রমেই ভেঙে পড়ছে। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যে সাম্রাজ্যবাদীদের মুখোশ খুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে ইরানের ইসলামিক বিপ্লব বড় ভূমিকা রেখেছে বলে দাবি করেন তিনি।

বক্তব্যে রাইসি বলেন, প্রতিবেশীদের সঙ্গে পারস্পরিক উপকারী সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে ইরান। নিজ দেশের প্রতিবেশী নীতিকে আঞ্চলিকভাবে একটি কল্যাণকর নীতি দাবি করে তিনি মন্তব্য করেন, আমাদের দিকে প্রসারিত বন্ধুত্বের যে কোনো হাতকে আমরা দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরি। ইরান ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে পুরো বিশ্বের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করতে আগ্রহী।

ইসলামফোবিয়ার বিরুদ্ধেও কথা বলেন রাইসি

সুইডেন ও ডেনমার্কে অব্যাহতভাবে পবিত্র কোরআন অবমাননার নিন্দা জানিয়ে রাইসি বলেন, ইসলামফোবিয়া যে কোনোভাবেই হোক না কেন, তা পবিত্র কোরআন পোড়ানোর মাধ্যমে হোক হোক বা স্কুলে ইসলামিক ড্রেস কোড নিষিদ্ধের মাধ্যমে হোক, সমানভাবে ঘৃণা ছড়ায়। তিনি দাবি করেন, ইসলামের প্রতি বিদ্বেষমূলক এসব আচরণের পেছনে বড় একটি নীল নকশা রয়েছে। এসব কার্যক্রমকে কেবল বাকস্বাধীনতার দোহাই দিয়ে অনুমোদন দেয়া বিভ্রান্তিকর।

চলমান বিশ্বের যুদ্ধ পরিস্থিতির নিয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা দেখছি, কিছু শক্তি বিভিন্ন অঞ্চলে সংঘাতের আগুন জ্বালানোর চেষ্টা করছে। এই পদক্ষেপ বিশ্বের নিরাপত্তা ও কল্যাণের জন্য ক্ষতিকর।

রাইসি দাবি করেন, গত বছর ইরান ইতিহাসের সবচেয়ে বড় মিডিয়া হামলা ও মনস্তা্ত্ত্বিক যুদ্ধ কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছিল। একটি ট্রাজেডির অপব্যবহার করে দেশজুড়ে বিশৃঙ্খলার বীজ বপনের চেষ্টা করেছিল কিছু পশ্চিমা দেশ ও তাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। কিন্তু তারা ইরানি জাতির শক্তিকে অবমূল্যায়ন করে হিসেবে ভুল করেছে।

বক্তব্যের পরিশেষে তিনি বলেন, সংঘাতের অবসান ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার সূচনার লক্ষ্যে যে কোনো উদ্যোগকে ইরান স্বাগত জানায় এবং শত্রুতা বন্ধে গঠনমূলক ভূমিকা পালনে ইরান সবসময় প্রস্তুত।