আপনি পড়ছেন

সৌদি আরব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি সামরিক চুক্তিতে পৌঁছানোর ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এই চুক্তির ফলে ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিনিময়ে মধ্যপ্রাচ্যের সুন্নি সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দেশটিকে রক্ষা করতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে। এমনকি এই চুক্তির জন্য ফিলিস্তিনিদের স্বার্থ উপেক্ষা করতেও প্রস্তুত সৌদি কর্তৃপক্ষ। মার্কিন-সৌদি আলোচনা নিয়ে অবগত তিনটি আঞ্চলিক সূত্র এই তথ্য জানিয়েছে।

saudi crown prince mohammed bin salman and us.president joe bidenসৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান (ডানে) এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন

সূত্রগুলো জানিয়েছে, ইসরায়েল ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবি মেনে না নিলেও সৌদি আরব এই চুক্তি করতে বদ্ধপরিকর।

২০২২ সালের জুলাইয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সৌদি সফরে গিয়েছিলেন। সে সময় সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ন্যাটোর মতো একটি প্রতিরক্ষা চুক্তির গ্যারান্টি চেয়েছিলেন। সৌদি আরব অন্য দেশ দ্বারা আক্রান্ত হলে এই চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র যেন দেশটিকে রক্ষা করে।  

একটি মার্কিন সূত্র বলেছে, এটি বাহরাইনের সঙ্গে মার্কিন চুক্তির মতোও হতে পারে যেখানে মার্কিন নৌবাহিনীর পঞ্চম নৌবহর রয়েছে। এই ধরনের চুক্তির জন্য কংগ্রেসের সমর্থনের প্রয়োজন হবে না।

মার্কিন সূত্রটি জানিয়েছে, ওয়াশিংটন সৌদি আরবের সঙ্গে এমন একটি চুক্তি করতে পারে যেটি মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিকে প্রধান নন-ন্যাটো মিত্রের মর্যাদা দিতে পারে। ইসরায়েলকে ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র এই মর্যাদা দিয়েছে। নন-ন্যাটো মিত্র হিসেবে সৌদিকে প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা সংক্রান্ত সহায়তা এবং সরঞ্জামের ক্ষেত্রে বেশ কিছু সুবিধা ও ছাড় দিতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে।

এদিকে সূত্রগুলো জানিয়েছে, সৌদি আরব যে কোনো আক্রমণের মুখে বাধ্যতামূলক মার্কিন সুরক্ষার আশ্বাস চেয়েছে। ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর সৌদি তেলক্ষেত্রগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়। এর ফলে বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়ে গিয়েছিল। এ ধরনের আর কোনো হামলার মুখোমুখি হতে চায় না সৌদিরা। 

যুক্তরাষ্ট্র এবং সৌদি আরব এই হামলার জন্য আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানকে দায়ী করেছিল। অবশ্য ইরান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, একটি প্রতিরক্ষা চুক্তির শর্ত নিয়ে এখন আলোচনা চলছে। এই চুক্তিটি হবে ইসরায়েলের সঙ্গে মার্কিন সম্পর্কের মতো। প্রসঙ্গত, ইসরায়েল যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সবচেয়ে উন্নত অস্ত্র পায় এবং যৌথ বিমান বাহিনী ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা মহড়া চালায়, তেমনি সৌদিরাও এই সুবিধা পেতে চায়।

এদিকে একটি আঞ্চলিক সূত্র জানিয়েছে, রিয়াদ বেসামরিক পারমাণবিক প্রযুক্তির পরিকল্পনাসহ একটি চুক্তি সুরক্ষিত করতে কিছু ক্ষেত্রে আপস করছে। সূত্রটি বলেছে, সৌদি আরব মার্কিন পরমাণু শক্তি আইনের ১২৩ ধারায় স্বাক্ষর করতে প্রস্তুত, যা মার্কিন শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক সহযোগিতার জন্য একটি কাঠামো প্রতিষ্ঠা করে। এর আগে সৌদিরা এটি করতে অস্বীকার করেছিল।

ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিককরণের বিনিময়ে বিশ্বের বৃহত্তম তেল রপ্তানিকারক দেশটিকে মার্কিন সুরক্ষা প্রদানের চুক্তিগুলো ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে বাইডেনের জন্য একটি কূটনৈতিক বিজয় হবে।

এদিকে এই চুক্তির জন্য ফিলিস্তিনের স্বার্থ বিসর্জন দিতে প্রস্তুত আছেন মোহাম্মদ বিন সালমান। এক্ষেত্রে ফিলিস্তিনিদের জন্য কিছু ইসরায়েলি বিধিনিষেধ শিথিল হতে পারে। তবে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবি ইসরায়েল মেনে না নিলেও তাতে ছাড় দিতে রাজি আছেন তিনি। অথচ এর আগে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের বিনিময়ে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন তিনি।    

একটি সূত্র বলেছে, সৌদি আরব ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি শান্তি পরিকল্পনাকে সমর্থন করে, কিন্তু এবার সৌদিরা নিজেদের জন্যও কিছু চায়, শুধু ফিলিস্তিনিদের জন্য নয়।

সূত্র: রয়টার্স

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.