লণ্ডভণ্ড সিকিম, নেপথ্যে নেপাল!

ভারতের সিকিম রাজ্যে স্মরণকালের ভয়াবহ দুর্যোগে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। হঠাৎ করে নেমে আসা হড়প্পা বানে পুরো রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ধ্বংস হয়ে গেছে পানি বিদ্যুৎ প্রকল্প, সেনাছাউনিসহ নানা স্থাপনা। এ পর্যন্ত ১৪ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নিখোঁজ রয়েছে ২২ সেনা সদস্যসহ আরও ১২০ জন।

লণ্ডভণ্ড সিকিম

সিকিমের স্থানীয় আবহাওয়াবিদরা বলছেন, যে হড়প্পা বানে সিকিম বিধ্বস্ত হয়েছে, তার নেপথ্যে ছিল মেঘভাঙা বৃষ্টি। তবে ভূতত্ত্ববিদ ও আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু মেঘভাঙা বৃষ্টির কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়নি। বরং এর পেছনে গত মঙ্গলবারে নেপালে আঘাত হানা ভূমিকম্পেরও অবদান থাকতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওই ভূমিকম্পের কারণে দক্ষিণ লোনাক হ্রদের পানি ফুলে ওঠে। আর এ কারণেই সম্পূর্ণ তিস্তা অববাহিকা বানে ভেসে যায়।

চুয়াঙথাম বাঁধ ভেঙে গেলে তিস্তা অববাহিকা বন্যার কবলে

পরিস্থিতি এতটাই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় যে, সিকিমের সবচেয়ে বড় পানিবিদ্যুৎ প্রকল্প চুয়াঙথাম বাঁধও ভেঙে গেছে। রাজ্য সরকারের এই প্রকল্প থেকে ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো। পানির ধাক্কায় এই বাঁধেরই একাংশ চোখের পলকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।

চুয়াঙথাম বাঁধের পুনর্নির্মাণে বিপুল পরিমাণ অর্থ ও সময়ের প্রয়োজন

উল্লেখ্য, ২০২২ সালে তিস্তা নদীর ওপর ১২০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎপ্রকল্প গড়ে তোলা হয়েছিল। ২৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলা এই প্রকল্পে সিকিম সরকারের ৬০.০৮ শতাংশ অংশীদারিত্ব রয়েছে। এটি পুনর্নির্মাণে যেমন বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ হবে, তেমনি বিষয়টি সময়সাপেক্ষও বটে। এর সঙ্গে পরিবেশগত বিশাল ক্ষতির বিষয়টিও রয়েছে।

সিকিমের পাশাপাশি হিমালয়ের অন্যান্য রাজ্যগুলোও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে

সিকিমের এই বিপর্যয়ে এখন পর্যন্ত ১৪ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। নিখোঁজ রয়েছে ২২ সেনা সদস্যসহ আরও ১২০ জন। ফলে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

হিমালয়ের পাশ্ববর্তী রাজ্যগুলো সাম্প্রতিক সময়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের শিকার হচ্ছে। গত দুই মাসে হিমালয়ের দুই রাজ্য উত্তরাখণ্ড ও হিমাচল প্রদেশে বড় দুর্যোগের ঘটনা ঘটেছে। সেই ঘটনার রেশ ফুরাতে না ফুরাতেই বড় বিপর্যয়ের বিপর্যস্ত হলো সিকিম।